Homeএখন খবররাহু মুক্তির পথে খড়গপুর, করোনা জয় করে ফিরলেন ৬ আরপিএফ জওয়ান

রাহু মুক্তির পথে খড়গপুর, করোনা জয় করে ফিরলেন ৬ আরপিএফ জওয়ান

নিজস্ব সংবাদদাতা: ২৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দিনটা অমাবস্যা ছিল আর সেই অমাবস্যায় যেন রাহু গ্রাস করেছিল খড়গপুর শহরকে, বজ্রাহতের মতই স্তম্ভিত খড়গপুর শুনেছিল একসাথে ৮ রেলরক্ষী বাহিনী তথা আরপিএফ জওয়ানের করোনা আক্রান্ত হওয়ার কথা আর তারমধ্যে ৬ জনই খড়গপুর ব্যারাকের। ১৪ তারিখ দিল্লি আর রাজস্থান থেকে নিজেদের বাহিনীর জন্য অস্ত্র আনার পাশাপাশি করোনা নিয়েও এসেছিলেন তাঁরা এটা বুঝতে বুঝতেই অভাবিত এই ঘটনা ঘটে যায়। তারপর থেকেই খড়গপুর জুড়ে একটা চাপা আতঙ্ক কাজ করে আসছিল, যে আতঙ্কের মুক্তি ঘটল ১১ দিনের মাথায় রবিবার। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা মূখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশ চন্দ্র বেরা জানিয়েছেন, পূর্ব মেদিনীপুর মেচোগ্রামের কোভিড হাসপাতালে থাকা ওই ৬ জন জওয়ানই করোনা মুক্ত হয়ে হাসপাতাল থেকে মুক্তি পেয়েছেন রবিবার।
স্বাস্থ্য দপ্তরই জানিয়েছে আরপিএফের স্পেশাল ফোর্সের ওই জওয়ান রা হলেন জয় প্রসাদ, রাম মিলন যাদব, গোপাল যাদব, জলেশ্বর কুমার দুবে, মতরু যাদব এবং সোম কুমার তাঁতি। দক্ষিণপূর্ব রেলের খড়গপুর ডিভিশনের সিনিয়র কমার্শিয়াল ম্যানেজার আদিত্য চৌধুরী জানিয়েছেন, “করোনা সংক্রান্ত প্রটোকল মেনেই ওই ছয় জওয়ান আপাতত কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন।” এর আগেই এক জওয়ান পজিটিভ হয়েছিলেন বর্তমানে তিনিও কোয়ারেন্টাইনেই আছেন। সব মিলিয়ে রেলের আর চার জওয়ান রাজ্য ও রাজ্যের বাইরে চিকিৎসাধীন এবং তাঁরাও আরোগ্যের পথে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে পশ্চিম মেদিনীপুরের হিসাব ধরলে শুক্রবার পজিটিভ ধরা পড়া এক আরপিএফ জওয়ান, ঘাটালের এক আ্যম্বুলেন্স চালক মোট দুজন চিকিৎসাধীন। অবশ্য শনিবার হাওড়ার বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খড়গপুর গ্রামীনের গৃহবধূকে ধরলে সংখ্যাটা তিনে দাঁড়ায়। সব মিলিয়ে জেলা এবং খড়গপুর রাহু মুক্তির পথেই।
তবে এরই মধ্যে একটি আলাদা গল্প রয়েছে সদ্য করোনা মুক্ত হওয়া জয় প্রসাদকে কেন্দ্র করে। যে দলটি দিল্লি ও রাজস্থানে নিজেদের বাহিনীর জন্য অস্ত্র গিয়েছিল সেই মুল দলে ছিলেননা জয় প্রসাদ। জয় নিজের সেই সময় ছুটি কাটাতে নিজের বাড়ি উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদে ছিলেন। ২৭ জনের মুল দলটি অস্ত্র আনতে গিয়ে লক ডাউনে দিল্লিতে আটকে যায়। এরপর রেল পণ্য পরিষেবা শুরু করলে একটি স্পেশাল পার্সেল ভ্যানে ওই ২৭ জন অস্ত্র নিয়ে খড়গপুর আসার অনুমতি পান। ওদিকে জয় ছুটি শেষ করে লকডাউনে আটকে যায়। দিল্লি থেকে তারই সতীর্থরা খড়গপুর ফেরার অনুমতি পেয়েছে শুনেই সে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তাঁদের ফেরার পথে এলাহাবাদ স্টেশনে উঠে পড়েন। ডিউটি রক্ষার তাগিদেই জয় আক্রান্ত হলেন নাকি জয়ের কাছ থেকেই বাকিরা আক্রান্ত হলেন সে প্রশ্ন থেকেই গেল। আপাতত স্বস্তি রেলে আর স্বস্তি খড়গপুরে।

RELATED ARTICLES

Most Popular