Homeএখন খবরখড়গপুরে নিজামউদ্দিনের তাবলিগি থেকে ৭ ইন্দোনেশীয় সমেত ৯ মৌলবী !...

খড়গপুরে নিজামউদ্দিনের তাবলিগি থেকে ৭ ইন্দোনেশীয় সমেত ৯ মৌলবী ! কোয়ারেন্টাইনে নিল স্বাস্থ্য দপ্তর, তৎপর পুলিশ

নিজস্ব সংবাদদাতা: আরও সতর্ক হওয়ার সময় এসে গেল খড়গপুরের। বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার আরও দায় চলে এল খড়গপুরবাসীর কাছে কারন বুধবার অনেকটাই উদ্বেগের খবর এসেছে যে দিল্লির নিজামউদ্দিন এলাকায় জামাত তাবলিগের ধর্মীয় সম্মেলনে উপস্থিত ৭ ইন্দোনেশীয় ও ২ ভারতীয় মৌলবী কে খড়গপুর লোকাল থানা এলাকায় চিহ্নিত করার পর তাঁদের কোয়ারেন্টাইনে রেখেছে পুলিশ। গত বেশ কয়েকদিন ধরেই খড়গপুর এলাকার কয়েকটি মসজিদে তাঁরা ধর্ম প্রচার করেছেন এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ।

গত ৪৮ঘন্টা আগেই সারা দেশে এই খবর ছড়িয়ে পড়ে দিল্লির নিজামউদ্দিন এলাকার ওই মসজিদে তাবলিগি জামাত ইজতেমা ধর্ম সম্মেলনে হাজির হয়েছিলেন ৭ টি দেশ ও ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের ধর্মগুরু ও ভক্তরা। প্রায় ২হাজার মানুষ অংশ নেয়। তিনদিন ব্যাপী ওই ধর্ম সম্মেলন লকডাউনের আগে শেষ হয়ে গেলেও বেশকিছু মানুষ ওখানে থেকে যান লকডাউনের পরেও। এরপরই হঠাৎই খবর আসে যে অন্ধ্রপ্রদেশের বেশ কিছু মানুষ ওখানে গেছিলেন তাঁরা করোনায় আক্রান্ত। ইতিমধ্যেই এঁদের মধ্যে ৮ জনের মৃত্যু ও ২৪ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। জানা গেছে প্রায় ৮০০ জন ইন্দোনেশীয় মৌলবী  এরপর অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, বিহার, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশে ছড়িয়ে পড়েছেন।

এমন কি পশ্চিমবাংলাতেও প্রায়  ৭৭ জন রয়েছেন এমন খবর পাওয়া যায়। খবর পাওয়া তৎপর হয়ে ওঠে বাংলা পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশ মঙ্গলবার দিনভর বিভিন্ন সুত্রে খবর নেওয়ার চেষ্টা করে এই জেলায় তেমন কেউ আছে কিনা। এরপরই খোঁজ মেলে ৭জন ইন্দোনেশীয় ও তাঁদের বক্তব্য অনুবাদ করার জন্য ২ জন ভারতীয় মৌলবী  খড়গপুর এলাকার মসজিদ গুলিতে ধর্ম প্রচার করে বেড়াচ্ছেন। এদিন রাতেই পুলিশ চিহ্নিত করে এঁদের অবস্থান। খড়গপুর ও মেদিনীপুরের মাঝামাঝি ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের সতকুইয়ের একটি মসজিদে পাওয়া যায় তাঁদের। বুধবার সকালেই ওই ৯ জনকে খড়গপুর গ্রামীণ থানার সতকুইতেই একটি অস্থায়ী বানানো কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে নিয়ে গিয়ে রাখা হয়েছে।

পুলিশের তরফে আশ্বস্ত করে বলা হয়েছে এখনো তাদের করোনা কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি । কিন্তু তাদের শরীরে করোনা ভাইরাস থাকতে পারে আশঙ্কা করে তাদের উপরে কড়া নজরদারি রাখা হচ্ছে। এদিকে কোন কোন এলাকার কোন কোন মসজিদে এরা প্রচারে গেছিলেন, কারা কারা এঁদের স্পর্শে এসেছিলেন তা চিহ্নিত করার কাজও শুরু করে দিয়েছে পুলিশ। গঠন করা হয়েছে একটি স্ক্রিনিং কমিটি। যদি ওই ৯ জনের কারও দেহে ভবিষ্যতে করানোর অস্তিত্ব মেলে তবে কয়েক’শ মানুষকেও কোয়ারেন্টাইনে নিয়ে আসতে হতে পারে এমনটাই মনে করছেন স্বাস্থ্য কর্তারা।

অন্যদিকে শুধুই কি এই ধর্মগুরুরা নাকি আরও কোনও কোনও মৌলবী  অন্য আরও জায়গায় প্রচার করেছেন তারও খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ। এদিকে আরও একটি বিষয় রীতিমত প্রশ্ন তুলে দিয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের ভূমিকা নিয়ে। লকআউট চলাকালীন ওই ৯জন কি করে খড়গপুর শহর ও সংলগ্ন এলাকায় ধর্ম প্রচার চালিয়ে গেল? বিশেষ করে গোটা শহর জুড়েই যখন শাসকদলের নেতাদের দাপট। করোনা নিয়ে কত সচেতন তাঁরা? উঠছে এই প্রশ্ন।

ইতিমধ্যেই লকডাউন এবং করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে জারি হওয়া নির্দেশিকা অমান্য করে নিজামউদ্দিন মসজিদে জমায়েত করায় ওই জামাতের উদ্যোক্তা এবং মসজিদের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবারই মূল অভিযুক্ত মওলানা সাদ-সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মহামারি আইনে মামলা রুজু হয়েছে বলে জানিয়েছেন দিল্লির পুলিশ কমিশনার এসএন শ্রীবাস্তব। কিন্তু তার পর থেকে আর তাঁদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে ট্যুরিষ্ট ভিসা নিয়ে ধর্ম প্রচার করার অপরাধে প্রায় ৫০০ জনকে কালো তালিকা ভুক্ত করতে চলেছে ভারত সরকার।                      ছবি: দিল্লির নিজামউদ্দিন থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কয়েকজনকে

RELATED ARTICLES

Most Popular