Homeরাজ্যউত্তরবঙ্গবিয়ের ভোজ খেয়ে ফেরার পথে দুর্ঘটনা- বাস উল্টে নিহত চালক সহ ৩,...

বিয়ের ভোজ খেয়ে ফেরার পথে দুর্ঘটনা- বাস উল্টে নিহত চালক সহ ৩, আহত ৪৬

অশ্লেষা চৌধুরী: মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়িতে। উস্কে দিল ফের ১৯ শে জানুয়ারির ধূপগুড়িতে ঘটে যাওয়া সেই ভয়ানক দুর্ঘটনার স্মৃতি। বউভাত ফেরত কনে যাত্রীদের বাসের সাথে আলু বোঝাই ট্রাকটরের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় মৃত্যু হল ৩ জনের। গুরুতর জখম আরও ৪৬ জন। বৃহস্পতিবার রাত ১০ টা নাগাদ ময়নাগুড়ি থেকে মালবাজার গামী ৩১ নাম্বার জাতীয় সড়কে সিঙ্গীমারি কালির থান এলাকায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।

বাড়ির মেয়ের বউ ভাত বলে কথা। সেখানে চুটিয়ে আনন্দ করে খাওয়াদাওয়া সেরে বেজায় আনন্দ করে বাড়ি ফিরছিলেন সকলে। কিন্তু সেই আনন্দই যে কয়েক মুহুর্তে এভাবে ম্লান হয়ে যাবে, তা ভাবতে পারেনি কেউই। রাতে ঘড়ির কাঁটা তখন প্রায় ১০ টা ছোঁয় ছোঁয়। ৩১ নং জাতীয় সড়কে ধরে বাড়ি ফিরছিলেন তারা। সিঙ্গীমারি কালির থান এলাকায় আসতেই ঘটল সেই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা। আলু বোঝাই ট্রাকটরের সঙ্গে সজোরে ধাক্কা লাগে। দুই গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষের প্রচন্ড অভিঘাতে কনের বাড়ির যাত্রী বোঝাই বাসটি রাস্তার পাশে উলটে যায়৷ ঘটনাস্থলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ৩ জন। মৃতদের নাম আবু তালেব, সাবিনা খাতুন এবং বাসের চালক মহন্মদ নজরুল। মৃত আবু তালেবের বাড়ি ক্রান্তি এলাকায়। বাকি মৃত ২ জনের বাড়ি ময়নাগুড়িতে। গুরুতর জখম হল ৪৬ জন বাস যাত্রী। আহতদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু এবং মহিলা রয়েছেন।

দুর্ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথম উদ্ধার কাজে হাত লাগায়। পরে ময়নাগুড়ির দমকল ও পুলিশ উদ্ধার কাজে হাত লাগায়৷ আহতদের উদ্ধার করে ময়নাগুড়ি গ্রামীন হাসপাতাল, জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এবং উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন ময়নাগুড়ি বিধানসভার তৃণমুল প্রার্থী মনোজ রায়। আহতদের চিকিৎসা ব্যবস্থা করেন তিনি। পরে হাসপাতালে আসেন ময়নাগুড়ির বিডিও শুভ্র নন্দি, ময়নাগুড়ি থানার আইসি ভুষন ছেত্রী সহ অন্যান্যরা। জলপাইগুড়ি তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা যুব সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি তৃণমূল কংগ্রেস নেতা দুলাল দেবনাথও জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান। তারা জানান, অনেকের অবস্থাই আশঙ্কা জনক। দুর্ঘটনার কারন ক্ষতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে ময়নাগুড়ি থানার তরফ থেকে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িতে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। জলঢাকা ব্রিজের কাছে পাথর বোঝাই ডাম্পারে চাপা পড়ে ৩ শিশু-সহ মৃত্যু হয় ১৪ জনের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরও ৯ জন জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে অবস্থা খারাপ হওয়ায় কয়েকজনকে ভর্তি করা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিকেলে। সেদিনও ৩টি গাড়িতে করে সকলে ধূপগুড়িতে বিয়েবাড়ীতে যাচ্ছিলেন। বৌভাতের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন তারা। উল্টোদিকের লেন ধরে যাচ্ছিল ৩টি গাড়ি। সঠিক লেন ধরে আসা ডাম্পারের সঙ্গে সংঘর্ষ হওয়ায়, সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ২টি গাড়ির উপর উল্টে পড়ে। চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় কয়েকজনের। টানা দুঘন্টা তারা সেভাবেই পড়েছিল। ঘণ্টাদুয়েক পাথরের স্তূপে চাপা পড়ে থাকার, পর জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় একটি গাড়ির চালককে। পরে পুলিশ ও দমকল এসে বাকিদের উদ্ধার করে।

RELATED ARTICLES

Most Popular