Homeএখন খবরদিল্লি গেলেন না আলাপন; বদলির নির্দেশ প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর

দিল্লি গেলেন না আলাপন; বদলির নির্দেশ প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর

নিউজ ডেস্ক: ‘২৮ তারিখ কেন্দ্রের দেওয়া এই নির্দেশ প্রত্যাহার করা হোক। নির্দেশ জারির আগে রাজ্যের সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হয়নি। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো আঘাতপ্রাপ্ত হবে। এই একতরফা নির্দেশ আইনসিদ্ধ নয়, একইসঙ্গে তা অসাংবিধানিক।‘ মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলি সংক্রান্ত নির্দেশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আবেদন ও ক্ষোভ মিশ্রিত চিঠি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

এই বিষয়ে পাঁচ পাতার চিঠিতে তিনি বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করেছেন। মমতা লিখেছেন, রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মুখ্যসচিবকে এক্সটেনশন দেওয়া হয়েছিল। কোভিডের পর হয়েছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। এই মুহূর্তে মুখ্যসচিবকে দিল্লি ডাকলে জনসেবার কাজে ক্ষতি হবে।’

পাশাপাশি চিঠিতে তিনি প্রশ্ন করেছেন, রাজ্যের প্রস্তাবে সাড়া দিয়েও মুখ্যসচিবকে বদলি, ২৮ মে, কলাইকুণ্ডার বৈঠকের সঙ্গে কী এর কোনও যোগ রয়েছে। চিঠিতে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘আমি নিয়মমাফিক প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে একান্ত বৈঠক চেয়েছিলাম। বৈঠকের কাঠামো বদলে আপনার দলের স্থানীয় বিধায়ককে ডাকলেন। আমার মনে হয়, প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে তাঁর থাকার এক্তিয়ার নেই। মাননীয় রাজ্যপাল ও কয়েকজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে আপনি ডেকেছিলেন। আপনিও জানেন, মাননীয় রাজ্যপালের ঐ বৈঠকে কোনও ভূমিকা নেই।’

সেইসঙ্গেই তিনি লিখেছেন, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলি সংক্রান্ত নির্দেশ জারির আগে রাজ্যের সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হয়নি। এই একতরফা নির্দেশ আইনসিদ্ধ নয়, একইসঙ্গে তা অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিকও বটে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মুখ্যসচিব হিসেবে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রয়োজন। তাই তাঁকে আরও ৩ মাস মুখ্যসচিব হিসেবে পেতে চায় রাজ্য। তাই জনস্বার্থে এই নির্দেশ প্রত্যাহার করা হোক।‘- চিঠিতে আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুরের কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক সারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য়ের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে মোদীর সঙ্গে বৈঠকে গিয়েছিলেন মমতা। ইয়াসের কারণে হওয়া ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বিস্তারিত রিপোর্টও দেন তিনি। এরপর রাতেই রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে বদলির নির্দেশ পাঠানো হয় কেন্দ্রের পক্ষ থেকে। আইএএস অফিসার আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্যের কাজে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নর্থ ব্লকের কর্মিবর্গ মন্ত্রকে রিপোর্টিং করতে বলা হয় ৩১ মে সকাল ১০টায়।

উল্লেখ্য, রাজ্যের মুখ্যসচিব পদে ৩১ মে-ই আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মজীবনের শেষ দিন ছিল। মে মাসে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৬০ বছর বয়স হয়েছে। কিন্তু নবান্ন সূত্রে খবর, তার আগেই কেন্দ্রের কাছে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের তিন মাসের এক্সটেনশন চেয়ে চিঠি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। কারণ রাজ্যের করোনা মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন মুখ্যসচিব। এমনকি দিল্লির অ্যাপয়েনমেন্ট কমিটি অফ ক্যাবিনেট সেটার অনুমোদনও দিয়েছিল। তারপর শুক্রবারেই চিঠি দিয়ে আলাপনকে কেন্দ্রে তলব করে রাজ্য, এরপর থেকেই শুরু হয় তরজা।

এই বিষয়ে শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনেও এক রাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মমতা। তিনি বলেছিলেন, “আপনি প্রধানমন্ত্রী, আপনার দুটো পায়ে ধরলে যদি খুশি হন, আমি তাও করতে পারি। কিন্তু, দয়া করে এই নোংরা খেলা খেলবেন না। মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বন্ধ করুন। দয়া করে এই চিঠি ফিরিয়ে নিন।“

তবে কেন্দ্রের নির্দেশে সোমবার দিল্লি যাননি আলাপন। তিনি বেলা ১১টার কিছু আগে নবান্নে উপস্থিত হন।

RELATED ARTICLES

Most Popular