Homeআন্তর্জাতিকফের আন্তর্জাতিক সম্মানে সম্মানিত বাঙালির গর্ব অমর্ত্য সেন ! ভারতের জন্য আরও...

ফের আন্তর্জাতিক সম্মানে সম্মানিত বাঙালির গর্ব অমর্ত্য সেন ! ভারতের জন্য আরও একটি গৌরব মুহুর্ত আনলেন নোবেল জয়ী অর্থনীতি বিদ

নিজস্ব সংবাদদাতা: ‘গণদারিদ্র্যের অন্তর্নিহিত কার্যকারণ এবং জনকল্যাণ অর্থনীতিতে সেই দারিদ্র্য মোচনের উপায়’ এই বিষয়ক গবেষনা তাঁকে নোবেল এনে দিয়েছিল। শুধু ভারতই নয় তৃতীয় বিশ্বজুড়ে মানুষের দারিদ্র্য মুক্তিতে কল্যাণকর অর্থনীতি কি ভূমিকা নিতে পারে তাঁর উপায় দেখিয়েছেন তিনি। গণদারিদ্র্য কী ভাবে সৃষ্ট হয়, তার উৎস এবং ধারাবাহিকতা এবং তার থেকে উত্তরনের উপায় নয়া দিশা দেখিয়েছে তৃতীয় বিশ্বকে আর সেকারনেই ১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছিলেন তিনি। এবার অনেকটাই সেই তত্ত্বের হাত ধরেই এল আরও একটি গর্বের পুরস্কার। এবার সমাজবিজ্ঞানে স্পেনের সর্বোচ্চ সম্মান পেলেন অমর্ত্য সেন।

বুধবার প্রিন্সেস অফ অস্টুরিয়াস সম্মান দেওয়া হল এই নোবেলজয়ীকে। স্পেনের স্প্যানিশ প্রাইজ ফাউন্ডেশন এই বিশ্ব খ্যাত এই সম্মান প্রদান করেছে। পুরস্কার হিসেবে তাঁকে কে দেওয়া হয়েছে ৫০ হাজার ইউরো যা ভারতীয় মুদ্রায় বর্তমানে প্রায় ৪৫লক্ষ টাকা এবং জোয়ান মিরোর একটি মূর্তি, একটি শংসাপত্র ও বিশ্বের মোট ২০ টি দেশের ৪১ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির মধ্য থেকে অর্থনীতিবি সমাজবিজ্ঞানের এই সম্মান দেওয়ার জন্য। বার্সেলোনায় কাসা এশিয়ার ডিরেক্টর জেনারেল জেভিয়ার প্যারানডো তাঁর তরফে এই নোবেল বিজয়ীর জন্য মনোনয়ন পাঠিয়েছিলেন।

বিশ্ব জুড়ে কোভিড ১৯ য়ের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মাথায় রেখে একটি ভার্চুয়াল সেশনে জুরিরা ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বিজয়ী হিসাবে অমর্ত্য সেনের নাম ঘোষণা করেছেন। স্পেনের প্রিন্সেস অফ অস্টুরিয়াস ফাউন্ডেশনের তরফ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয় যে, দুর্ভিক্ষের উপর অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের গবেষণা এবং তাঁর থিওরি অফ হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট জনহিতকর। গত কয়েক দশক ধরে বিশ্বে ন্যায়বিচারের প্রশ্ন তুলে তিনি সকলের পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করে চলেছেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে ধারবাহিকভাবে লড়ে চলেছেন এই অর্থনীতিবিদ। তাঁর কাজ কখনও প্রাসঙ্গিকতা হারাতে পারে না। অমর্ত্য সেনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যুক্তি হল সামাজিক সমৃদ্ধি কেবল অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রেই নয়, উন্নয়নের সুযোগের ক্ষেত্রে বিশেষত দুর্বলদের ক্ষেত্রেও পরিমাপ করা উচিত।

উল্লেখ্য এই অতিমারিকে সামনে রেখে দেশব্যাপী লকডাউন, গরিব মানুষের কর্মহীনতা, গড় জাতীয় আয়ের ব্যাপক ধসের মুখে দাঁড়িয়ে ভারতীয় বাজারকে চাঙ্গা করার জন্য গরিব মানুষের হাতে কিছু পরিমান টাকা তুলে দেওয়া দরকার রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এমনটাই বলেছিলেন শ্রী সেন। ভারতের শাসককুল অবশ্য সে নীতি গ্রহণ করেনি পাল্টা গৈরিক শিবিরের কুৎসিত আক্রমনের শিকার হন সেন। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বহু দেশ সেই নীতি গ্রহণ করেছিল।

অমর্ত্য সেন পরিস্কার ভাবেই বলেছেন জনকল্যাণ অর্থনীতিতে একদিকে রয়েছে অর্থনৈতিক অসমতা ও দারিদ্রের বিষয়, আর অন্যদিকে রয়েছে যুক্তিসঙ্গত, সহনীয় ও গণতান্ত্রিক সামাজিক সিদ্ধান্তের সুযোগ ও সম্ভাবনার দিক। সেই সুযোগ ও সম্ভাবনাকে ব্যবহার করে গণদারিদ্র্য থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব এবং একটি অংশকে দারিদ্র্যসীমার ওপরে আনা যায়। বাংলায় ১৯৪৩-এর মন্বন্তর প্রত্যক্ষ করেছিলেন অমর্ত্য সেন। ওই দুর্ভিক্ষের অভিজ্ঞতা লব্ধ গবেষণা থেকেই এই সূত্রে পৌঁছে ছিলেন তিনি। উদারনৈতিক রাজনীতিতে এই অবদান তাঁকে নোবেল এনে দিয়েছিল

শুধু তাই নয়, অমর্ত্য সেনই রাষ্ট্রপুঞ্জের বিভিন্ন দেশের শিক্ষা এবং মানব সম্পদ উন্নয়ন সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার জন্য মানব উন্নয়ন সূচক আবিষ্কার করেন। তিনিই প্রথম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক না হয়েও ন্যাশনাল হিউম্যানিটিস মেডেলে ভূষিত হন। গতবছর জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলার ঐতিহ্যবাহী শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন এই বাঙালি অর্থনীতিবিদ।

RELATED ARTICLES

Most Popular