Homeএখন খবরতৃনমূল ছেড়েই দিলেন বিধায়ক ! দলের সমস্ত পদ ত্যাগ করে বলেনন, এই...

তৃনমূল ছেড়েই দিলেন বিধায়ক ! দলের সমস্ত পদ ত্যাগ করে বলেনন, এই দলে ভাল মানুষদের জায়গা নেই

অশ্লেষা চৌধুরী: কোর কমিটির সদস্যপদ এবং জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বেসুরো উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। তবে এখনই দল ত্যাগ বা পদ্ম শিবিরে যোগদান নয় বলেও সাফ জানালেন তৃণমূল বিধায়ক। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সভায় না যাওয়ার কারণ জানাবেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি। আর এদিন সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে হুগলি জেলা তৃণমূলের যে দুটি পদে তিনি ছিলেন তা থেকে ইস্তফার কথা ঘোষণা করলেন প্রবীর ঘোষাল।

তবে কেন এই দুই পদ থেকে ইস্তফা! প্রবীর বাবু বলেন, ‘যেহেতু দলের মধ্যে আমি ব্রাত্য তাই দলের কাজে নিজেকে যুক্ত রাখা যুক্তিযুক্ত হবে বলে মনে করছি না। তাই হুগলি জেলায় আমার দুটি পদ থেকেই আমি ইস্তফা দিলাম।’ সেইসাথেই জানান, ‘দল ছাড়ার কথা ভাবিনি। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ১৯৮২ সাল থেকে রয়েছি। বিজেপিতে যাওয়ার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নিইনি।’ সাথে তিনি দাবী করেন, মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে উত্তরপাড়া ছাড়া অন্য কোনও বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

প্রবীর ঘোষাল এদিন বলেন, ‘লক্ষ্মীরতন শুক্লা যেদিন মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করলেন সেদিন মুখ্যমন্ত্রী আমায় ফোন করেছিলেন। তাঁকে উত্তরপাড়ায় দলের মধ্যে যে সমস্যা হচ্ছে সেই কথা জানাই। তিনি আমাকে অন্য কেন্দ্র থেকে লড়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু আমি পরিষ্কার জানিয়েছি যে আমি এখানকার ভূমিপুত্র, ভোটে দাঁড়ালে এই কেন্দ্র থেকেই দাঁড়াব।’ সেইসাথে‌ তিনি বলেন, ‘আমি বিধায়ক পদ ছেড়ে দেব ভেবেছিলাম। কিন্তু আধার কার্ড, স্কলারশিপ–সহ বিভিন্ন কাজে বিধায়কের সই প্রয়োজন পড়ে সাধারণ মানুষের। তাই মানুষের কথা ভেবেই আমি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেইনি।’

এখানেই থেমে না থেকে দলের বিরুদ্ধে রাশভারী গলায় অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আমি নবগ্রাম হীরালাল পাল কলেজের ছাত্র ছিলাম। আমার সুপারিশেই এই কলেজে গভর্নিং বডি তৈরি হয়। এবারও হয়েছে। কলেজে একটি নতুন প্রশাসনিক ভবন তৈরি হয়েছে, যার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছিল আজ, ২৬ জানুয়ারি। কলেজ কর্তৃপক্ষকে বলা হয়, এই অনুষ্ঠানে শুধু সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত থাকবেন। অর্থাৎ প্রবীর ঘোষালকে ডাকা যাবে না। আমন্ত্রণপত্রেও আমার নাম নেই।’ এই ব্যাপারে অবশ্য কল্যাণ বাবু বলেন, ‘কলেজ কাকে ডাকবে আর কাকে ডাকবে না সেটা তো আমি সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। এই সব অভিযোগের ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই।’

দলের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ করে বিধায়ক জানান, ‘একটা গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার কাজও ফেলে রাখা হয়েছে। একটা চক্র কাজ করছে যাতে তৃণমূলের ভাল লোক কাজ করতে না পারে। এখানে নির্বাচনে দাঁড় করিয়ে যাতে আমাকে হারিয়ে দেওয়া যায় সেরকম একটা চক্র কাজ করছে।’ ‘লোকসভা ভোটে আমরা হুগলি আসনে হেরেছি তার কারণ হল আমাদের অন্তর্কলহ। সেই সমস্যা এখনও মেটেনি। ঝগড়া কমেনি, ঝগড়া বেড়েছে। পিকে–র কাজকর্মে হুগলিতে দলে কোনও উন্নতি হচ্ছে বলে আমার মনে হয় না। বরং ঝগড়াঝাটি বেড়েছে। ভাল লোকজন এই দলে থাকতে পারবে না,’ বলেও বোমা ফাটান এদিন প্রবীর ঘোষাল।

প্রসঙ্গত, সোমবার পুরশুড়ায় মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভায় অনুপস্থিত ছিলেন বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলেই জানান বিধায়ক এবং আজ মঙ্গলবার যা বলার বলবেন বলেও জানিয়েছিলেন। সেই মোতাবেক আজ নিজে জেলার দুই পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। তবে শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, সাংবাদিক বৈঠক করে ক্ষোভ উগরে দেওয়ার পরই দল বিরোধী কাজের অভিযোগে প্রবীর ঘোষালকে শো কজ করেছে দল ।

RELATED ARTICLES

Most Popular