Homeমহানগরআসানসোলথানায় মেয়ের লাশের সামনে বসেই আইসক্রিম খাচ্ছিল জামাই আর তার মা...

থানায় মেয়ের লাশের সামনে বসেই আইসক্রিম খাচ্ছিল জামাই আর তার মা ,অভিযোগ মৃতার বাবার

নিজস্ব সংবাদদাতা: ২৪ বছরের এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর থানায় স্ত্রীর লাশের সামনেই কী করে স্বামী আইসক্রিম খেতে পারে সেই প্রশ্ন তুললেন মৃতার বাবা। মৃতার বাবার অভিযোগ, “বুধবার রাতে আমাকে থানা থেকে ফোন করে জানানো হয় যে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে ছুটে গিয়ে দেখি পুলিশ আইসক্রিম খাওয়াচ্ছে আমার জামাই আর তার মাকে, ওদিকে পড়ে আছে আমার মেয়ের লাশ। আমি হতবাক হয়ে যাই। আর ময়নাতদন্ত ছাড়াই কী করে পুলিশ বলে দেয় যে আমার মেয়ে আত্মহত্যাই করেছে? পুলিশ কী ডাক্তার?” বুধবার রাতে আসানসোলের সালানপুর ব্লকের আছড়া গ্রাম পঞ্চায়েত অন্তর্গত শ্রী কৃষ্ণপল্লীতে এক তরুনীর অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কে ঘিরে উঠে এসেছে নানান প্রশ্ন।

মৃত তরুনীর নাম শম্পা ঘটক(২৪) তিন বছর আগে ১৭ই জানুয়ারি ২০১৭সালে আছড়া গ্রাম পঞ্চায়েত অন্তর্গত শ্রী কৃষ্ণপল্লীতে সৌমেন ঘটকের সাথে বিয়ে হয়েছিল।তাদের এক দেড় বছরের সন্তান ও রয়েছে। বুধবার রাতে আছড়া গ্রাম পঞ্চায়েত অন্তর্গত শ্রী কৃষ্ণপল্লীতে নিজের বাড়িতে গলায় দড়ি অবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধার করে রূপনারায়ানপুর ফাঁড়ির পুলিশ, খবর দেওয়া হয় মৃত মহিলার বাবাকে খবর দেওয়া হয়,খবর পেয়ে ছুটে আসেন তার বাবা বিশ্বনাথ চক্রবর্তী। বিশ্বনাথ বাবুর অভিযোগ তার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।
বিশ্বনাথ বাবুর অভিযোগ, ” বিয়ের ৬মাস পরে থেকে আমার মেয়ের উপর অত্যাচার করতো তার স্বামী এবং তার মা এবং কাকিমা শ্বাশুড়ি। কখনও আমার কাছে ২লাখ টাকা, কখনও আবার ৫ লাখ টাকা চেয়ে পাঠিয়েছে। তিন মেয়ের বিয়ে দিতেই আমার সমস্ত সঞ্চয় শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকি জীবন আমাদের চলবে কী করে? তাই টাকা দিতে পারেনি। আর তাতেই চলত বিরাম হীন অত্যাচার।
পনের জন্য আমার মেয়েকে তারা মেরে ফেলেছে।”

বিশ্বনাথবাবু অভিযোগ করেন ঘটনার খবর পেয়ে কাল রাতে রূপনারায়ানপুর ফাঁড়িতে
আমি ছুটে আসি রূপনারায়ানপুর ফাঁড়িতে আমার মেয়ের স্বামী ও তার মাকে আইসক্রিম খেতে দেখি তখন আমি পুলিশকে জানাই আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না, ওকে এরা খুন করেছে পুলিশ আমার কথা শুনতে চাইনি, আমাকে এবং আমার পরিবারের সদস্যদের ফাঁড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে বার করে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকালে সালানপুর থানায় অভিযোগ করতে এলে পুলিশ আমাদের বলে অভিযোগ করে কি লাভ, আমার মনে হয় পুলিশও বিক্রি হয়ে গেছে।অবশেষ অনেক অনুরোধ করা পর আমাদের লিখিত অভিযোগ নেওয়া হয়েছে।
আমি আমার মেয়ের স্বামী সৌমেন ঘটক, মেয়ের শাশুড়ি প্রণতি ঘটক,মেয়ের কাকী শাশুড়ি বন্দনা ঘটকের নামে লিখিত অভিযোগ করেছি।এরাই পনের জন্য আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছে।”
বিশ্বনাথ বাবু তার অভিযোগ পত্রে লিখেছেন, নাতির অন্নপ্রাশনে গিয়েছিলাম সেখানে ঘর ভর্তি মানুষের সামনেই আমাদের অপমান করা হয় আমরা তেমন কিছু দিতে পারিনি বলে। এসব সহ্য করেও আমার মেয়ে টিকে ছিল কিন্তু ওরা আমার মেয়েকে বাঁচতে দিলনা।

জানা গেছে গতকালই বিকালে শম্পা বিশ্বনাথবাবুকে ফোন করে বলেছিল, মাকে নিয়ে ভাল থেকো, তার দুই দিদিকে হোয়াটস্যাপে কিছু স্ট্যাটাস দিয়েছিল। হয়ত ইঙ্গিতটা বুঝতে পারেননি বিশ্বনাথ বাবু। হয়ত সত্যিই শম্পা সত্যি সুইসাইড করেছে কিন্তু সেই ঘটনায় কতটা আনন্দ পেলে স্ত্রী কিংবা পুত্রবধূর লাশের সামনে বসে খুশি মনে কেউ আইসক্রিম খেতে পারে?
মৃতদেহটি আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।এই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মেয়ের শাশুড়ি প্রণতি ঘটকে গ্রেপ্তার করে,স্বামী সৌমেন ঘটক ও কাকী শাশুড়ি বন্দনা ঘটক পলাতক। সালানপুর থানার এই ঘটনার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular