Homeএখন খবর১০ বছর খেয়ে মধু, তোলাবাজ এখন সাজছে সাধু; দলত্যাগী শুভেন্দুকে নিশানা অভিষেকের

১০ বছর খেয়ে মধু, তোলাবাজ এখন সাজছে সাধু; দলত্যাগী শুভেন্দুকে নিশানা অভিষেকের

অশ্লেষা চৌধুরী: ২০২১য়ের বিধানসভা যেন তৃনমূল আর বিজেপির পরিবর্তে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যেই আসল লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে বঙ্গের মঞ্চে এখন দুই কবিয়াল একে অপরের বিরুদ্ধে বলে যাচ্ছেন। যা বলছেন তাঁর সিংহভাগই দুজনের পারস্পরিক লড়াই আর দুই দলের বাকি নেতৃত্ব নিজ নিজ কবিয়ালের পক্ষে ধুয়ো তুলে যাচ্ছেন। বহুদিন বাদে কিংবা সম্ভবতঃ এই প্রথম বঙ্গ রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছে এই নতুন উপাদান। রবিবার কুলতলিতেও অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে সেই শুভেন্দু জুজুই তাড়া করে বেরুলো যেন। এতদিন শুভেন্দু তাঁকে ‘তোলাবাজ ভাইপো’ বলে এসেছেন। অভিষেক তারই প্রত্যুত্তরেই যেন বললেন, ‘১০বছর খেয়ে মধু, তোলাবাজ এখন সাজছে সাধু।’ কুলতলির সভা থেকে শুভেন্দুকে তোপ অভিষেকের। তাঁর দাবী, ‘যতই নাড়ো কলকাঠি, নবান্নে ফের হাওয়াই চটি।

রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে জনসভা করেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের সভায় দলত্যাগী শুভেন্দু সহ বিজেপিকে তুলোধনা করেন অভিষেক। সরাসরি শুভেন্দুকে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘তোমাকে টিভিতে টাকা নিতে দেখা গেছে। আর তুমি আমাকে তোলাবাজ বলছ? সুদীপ্ত সেন বলেছিলেন যে, তিনি শুভেন্দুকে টাকা দিয়েছেন। শুভেন্দু অধিকারীকে ৬ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। ১০ বছর খেয়ে মধু, তোলাবাজ এখন সাজছে সাধু। সুদীপ্ত সেন আদালতকে চিঠিতে লিখেছিলেন। এমন প্রমাণ আমার বিরুদ্ধে নেই। সুদীপ্ত সেনকে ব্ল্যাকমেল করতেন শুভেন্দু অধিকারী। আমি প্রমাণ দিয়েছি, আমার বিরুদ্ধে প্রমাণ দিতে পারবে? প্রমাণ দিতে পারলে ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুবরণ করব। টিভির পর্দায় টাকা নিয়েছ, আর ভাইপো তোলাবাজ?’

সেইসাথেই শনিবার ভিক্টোরিয়ায় ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি ওঠা প্রসঙ্গেও সরব হন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বক্তব্য রাখতে বাধা দেওয়া হয়। ভিক্টোরিয়ায় তেমনই পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল। বক্তৃতা না দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করা হয়েছে। বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার পর জবাব পেয়েছিলেন। তাতেও তাদের শিক্ষা হয়নি। নেতাজিকে যারা অপমান করল, তাদের শিক্ষা দেবেন। যেন কোথাও মাথা তুলে না দাঁড়াতে পারে। ধর্মকে নিয়ে এসে বাংলাকে কলুষিত করার চেষ্টা হচ্ছে। বাংলার মানুষই তাদের জবাব দেবেন।’

তার নিশানা থেকে এদিন বাদ যাননি বঙ্গ বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষও। অভিষেক এদিন কটাক্ষ করে বলেন, দিলীপ ঘোষরা বলছেন স্বাস্থ্যসাথী আসলে ভাঁওতা। আবার ওনার পরিবারের লোকেই গিয়ে কার্ড নিচ্ছে। এরপরেই তার হুঁশিয়ারি, ‘উন্নয়ন ও পরিসংখ্যানের নিরিখে লড়াই হোক। ১০-০ গোলে হারাতে না পারলে রাজনীতিতে পা রাখব না। এরা উন্নয়ন নিয়ে কথা বলতে পারে না। যত আক্রমণ করা হচ্ছে আমাকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগে আমার সঙ্গে লড়ুন। ভাইপো না বলে আমার নাম উচ্চারণ করে দেখান। কড়ায় গণ্ডায় সব বুঝিয়ে দেব।’ পাশাপাশি বিজেপি নেতাদের উদ্দেশ্য বলেন, এক পরিবারের পাঁচজন রাজনীতি করে। এরা আবার পরিবারতন্ত্রের কথা বলে। আমার পরিবারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া কেউ রাজনীতি করবেন না। করলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। যারা বলছে, তারা এই গ্যারান্টি দিতে পারবে?’

সেইসাথেই এদিন তিনি দাবী করেন, ‘যতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আছেন, বাংলাকে কেউ ভাতে মারত পারবে না।’ তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালেই এই জেলা বাংলায় পরিবর্তন স্বাদ দিয়েছিল। এই জেলায় পরিবর্তনের প্রথম চাকা ঘুরেছিল। কুলতলিতে তৃণমূল প্রার্থীই জিতবেন। পঞ্চাশ হাজারের বেশি ভোটে তারা জিতবেন বলেই দাবী করেন অভিষেক। এদিন অভিষেক উত্তেজিত হয়ে শালীনতা ছাড়িয়ে তুই তোকারিও করেছেন শুভেন্দুকে।  বলেছেন, ‘ঘুষখোর অধিকারী, তোর ক্ষমতা থাকলে তুই মামলা করবি আমার বিরুদ্ধে।’

RELATED ARTICLES

Most Popular