Homeএখন খবরহাতের মুঠোয় আয়ুর্বেদ: সৈন্ধব লবণ।। ডাঃ প্রজ্ঞা রায়

হাতের মুঠোয় আয়ুর্বেদ: সৈন্ধব লবণ।। ডাঃ প্রজ্ঞা রায়

শরীরের সুস্থ্যতায় সৈন্ধব লবনডাঃ প্রজ্ঞা রায়
(সিনিয়ার রিসার্চ ফেলো , কেন্দ্রীয় ঔষধি বিকাশ অনুসন্ধান সংস্থান, কলকাতা ।CCRAS , আয়ুষ মন্ত্রালয়,ভারত সরকার)

কথায় বলে ”ভেতো বাঙালি’ আর ভাতের সাথে লবন থাকবেনা এটা আবার হয় নাকি ! প্রতিদিনই আমরা যে খাবার খাই তার মধ্যে লবণের পরিমাণ অনেকাংশে জুড়েই থাকে তা সে মুড়ি ,ভাত , তরকারির মধ্যে তো থাকেই , কাঁচা সবজির ক্ষেত্রেও আমলকি , শসা খান তাতেও চলে না আবার সুরা প্রেমীদের বাদাম লবণ ছাড়া ঠিক চলে না. ধনী বা গরিব বা মধ্যবিত্ত যেই হন না কেন লবন এর ব্যবহার বাড়িতে নেই এটা বলতেই পারেন না , কিন্তু আপনি জানেন কি যে লবন আমরা খেয়ে থাকি তার থেকেও উৎকৃষ্ট অন্য্ একটি লবন , যা আমাদের শরীরে অমৃত সমান তাই আজকে যেটার অবতরণ আমরা করব যা হাতের কাছে অতি সহজলভ্য তার পুষ্টিগুণ অনেক বেশি হ্যাঁ আমি সৈন্ধব লবণের কথা বলছি , সৈন্ধব লবণ হাজার বছর থেকে থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত সমান শ্রেষ্ঠ লবন।

শাস্ত্র ও ইতিহাসের পাতায় : আমরা যদি একটু তথ্য উল্টে দেখি তাহলে পাই যে সৈন্ধব লবণ শাস্ত্রোক্ত অর্থাৎ আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে ১৯ টি শাস্ত্র বা সংহিতায় ৫৩৩ টি জায়গায় চিকিৎসা ও রোগ মুক্তির প্রয়োজনে উল্লেখ আছে, এখন প্রত্যেকের মনেই প্রশ্ন আসছে যে কোন শাস্ত্র? তাই সব শাস্ত্রের নামই উল্লেখ করলাম -১. চরক সংহিতা ২. অষ্টাঙ্গ হৃদয় ৩.অষ্টাঙ্গ সংগ্রহ ৪.সুশ্রুত সংহিতা ৫.রসপ্রকাশ সুধাকর ,৬.অষ্টাঙ্গ নিঘন্টু ৭.ধন্বন্তরি নিঘন্টু ৮.রসরত্ন সমুচ্যায় ৯.রসরত্নাকর ১০. রসেন্দ্র চূড়ামণি ১১. মদন পাল নিঘন্টু ১২.রাসাধ্যায় টিকা , ১৩.রাজনিঘন্টু ১৪. রসমঞ্জুরি ১৫.আনন্দ কন্দ, ১৭.রসারর্ণব ১৮.রশেন্দ্রসারসংগ্রাহ ১৯.রসেন্দ্র চিন্তামণি ইত্যাদি গ্রন্থে বিভিন্নভাবে , বিভিন্ন পর্যায়ে রোগের বর্ণনা রোগের চিকিৎসায় সৈন্ধব লবণ সুন্দরভাবে বর্ণনা করা হয়েছে আজ স্বল্প পরিসরে কয়েকটি রোগের কোথায় ব্যবহার করা হয় সেটা উল্লেখ করা হলো।

১. কাশির চিকিৎসা – সৈন্ধব লবণ, বিডঙ্গ, শুকনো আদা , পিপুল একসাথে মধুর সাথে কাশির চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।                                        ২. হিক্কা -শ্বাস রোগে – এই রোগের চিকিৎসায় একসাথে সৈন্ধবলবন, বিজরা লেবু , তেউরি চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।                                  ৩. অর্শ চিকিৎসায়– সৈন্ধব লবণ, আকন্দ পাতা এবং ত্রিফলা অর্থাৎ আমলকি, হরিতকি এবং বহেরা একসাথে অর্শের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়.
অতিসার অর্থাৎ যার ক্ষেত্রে বারবার পায়খানার সমস্যা হয় সে ক্ষেত্রে- পলাশ বীজ , জিরা , জোয়ান এবং সৈন্ধব লবণ অতিসার রোগে ব্যবহার করা হয়।
বৃদ্ধি অর্থাৎ টিউমার– সৈন্ধব লবন এবং কাশিশ ব্যবহার করা হয়।

৬. অগ্নিদীপন – অগ্নিদীপন এর ক্ষেত্রে সৈন্ধব লবণ ব্যবহার করা হয় অগ্নি অর্থাৎ আমাদের শরীরের হজমের সমস্যা হওয়ার ক্ষেত্রে সৈন্ধব লবণ, হরিতকী, ব্যবহার করা হয়.
৭. প্রমেহ অর্থাৎ ডায়াবেটিসে- মধু এবং সৈন্ধব লবণ, শুকনো আদা , নাগরমোথা , ব্যবহার করা হয়. আজকের এই স্বল্প পরিসরে এটুকুই এছাড়াও বহুবিধ রোগ , আয়ুর্বেদ এ পাঞ্চকর্ম চিকিৎসায় এই লবনের ব্যবহার আছে , যেকোনো রজার চিকিৎসায় অবশ্যই নিকটবর্তী চিকিৎসক এর পরামর্শ গ্রহণ করুন

RELATED ARTICLES

Most Popular