Homeরাজ্যউত্তরবঙ্গস্থলবন্দরে ভাঙচুরে অভিযুক্ত তৃনমূল কংগ্রেস শ্রমিক নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে কর্মবিরতি পালন এনজেপিতে,...

স্থলবন্দরে ভাঙচুরে অভিযুক্ত তৃনমূল কংগ্রেস শ্রমিক নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে কর্মবিরতি পালন এনজেপিতে, জোর জবরদস্তির অভিযোগ, দুর্ভোগে যাত্রীরা

নিউজ ডেস্ক: বৃহস্পতিবার স্থানীয় শ্রমিকদের নিয়োগের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছিল নিউ জলপাইগুড়ি সংলগ্ন স্থলবন্দর চত্ত্বর। চলেছিল ব্যাপক ভাঙচুর ও মারধর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে স্থলবন্দরের নিরাপত্তা রক্ষীরা কয়েক রাউন্ড গুলি চালাতে বাধ্য হয়ে বলে অভিযোগও উঠেছিল। আর তৃনমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে সেই হিংসাশ্রয়ী মূখ্যমন্ত্রী তখনও শিলিগুড়িতে উপস্থিত। সেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে ৬জন তৃনমূল নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শুক্রবার সেই গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে তৃনমূল কংগ্রেসেরই শ্রমিক সংগঠনের একটি গোষ্ঠীর মদতে অঘোষিত বন্ধের চেহারা নিয়েছে নিউ জলপাইগুড়ি এলাকায় আর সেই কারণে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষ থেকে যাত্রীদের।

জানা গেছে শুক্রবার আইএনটিটিইউসি-র তরফে এনজেপি এলাকায় কর্মবিরতি পালিত হয়। অভিযোগ, বলপূর্বক সমস্ত দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়। চলতে দেওয়া হয়নি কোনও গাড়ি। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। খবর পেয়ে এনজেপি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলেও সাধারণ মানুষকে ব্যাপক দুর্ভোগের মধ্যেই পড়তে হয়েছে। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন গন্তব্যের জন্য ট্রেনে কিংবা বাসে আসা যাত্রীরা পরবর্তী জায়গায় যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত ট্যাক্সি ইত্যাদি না পাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

বিরোধের কেন্দ্রে ছিল স্থানীয় শ্রমিকদের স্থল বন্দরের ভেতরে কাজের সুবিধা দেওয়ার দাবি। দীর্ঘদিন ধরেই শিলিগুড়ির টি পার্কের ভেতরে থাকা কন্টেনার ডিপোতে শ্রমিক নিয়োগে স্থানীয়দের প্রাধান্য দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন আইএনটিটিইউসি নেতা প্রসেনজিৎ রায় ও তাঁর অনুগামীরা। অন্যদিকে টি পার্কের ব্যবসায়ীদের যুক্তি, অত্যাধুনিক পরিকাঠামো নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে স্থানীয় অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগের সুযোগ কম। অভিযোগ, এই নিয়ে টানাপোড়েনের মাঝেই গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শহরে থাকাকালীন প্রসেনজিৎ রায়ের অনুগামীরা ট্রাকে করে লোকজন নিয়ে এসে কার্যত তাণ্ডব চালায় টি পার্কের ভেতরে থাকা কন্টেনার ডিপোতে এমনই অভিযোগ।

রোষের মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের শুল্ক দপ্তরের ডেপুটি কমিশনারের অফিস। সংগঠনের পতাকা নিয়ে ঢুকে অফিসটি কার্যত গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। দপ্তরে ঢুকে তছনছ করা হয় নথিপত্র। ল্যাপটপ-কম্পিউটার ভেঙে ফেলা হয়। গোটা এলাকা কার্যত ‘দুষ্কৃতী’ দখলে চলে যায়। প্রাণ বাঁচাতে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন টি পার্কের কর্মীরা। দুপক্ষেরই অভিযোগ তাদের দিকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে। বেশ কিছুক্ষণ তাণ্ডব চলার পর নিউ জলপাইগুড়ি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে নিউ জলপাইগুড়ি সংলগ্ন এলাকার সাধারণ মানুষ ও বাসিন্দাদের দাবি শুক্রবার সকাল থেকেই এলাকার দোকানপাট বন্ধ রাখার জন্য চাপ তৈরি করা হয় স্থল বন্দর কাণ্ডে অভিযুক্ত নেতা ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধেই। গাড়িও চলতে দেননি তাঁরা। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, লকডাউন পিরিয়ডের ব্যাপক লোকসান সহ্য করার পর তাঁরা যখন ধিরে ধিরে নতুন উদ্যমে ব্যবসা করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তখন এই জোরজবরদস্তি ব্যবসা বনধ তাঁদের ফের সমস্যার মুখে ঠেলে দিচ্ছে। শুধু তাই নয় শুক্রবার, ভরা কাজের দিনে যে সমস্ত মানুষকে এই শহর থেকে অন্যত্র যেতে হয় জীবিকার জন্য গাড়ির অভাবে তাঁরা যেমন সমস্যায় পড়েছেন তেমনই বিভিন্ন জায়গা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে ট্যাক্সি পেতে হিমশিম খেতে হয়েছে যাত্রীদের।

RELATED ARTICLES

Most Popular