Homeএখন খবরমাথায় হাতুড়ির আঘাতে বেলদায় মৃত্যু বাবার! খুন নাকি দুর্ঘটনা? ছেলেকে আটক করে...

মাথায় হাতুড়ির আঘাতে বেলদায় মৃত্যু বাবার! খুন নাকি দুর্ঘটনা? ছেলেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ পুলিশের

নিজস্ব সংবাদদাতা: মাথায় হাতুড়ির আঘাত নিয়ে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। আর সেই ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেলদা থানার অন্তর্গত জোড়াগেড়িয়া ফাঁড়ির জামাডাঙ্গার গ্রামে। গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি ছেলেই হাতুড়ি দিয়ে মারার ফলে মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির যদিও পরিবারের পক্ষ থেকে অবশ্য কোনোও অভিযোগ করা হয়নি। যদিও অস্বাভাবিক মৃত্যুর একটি মামলা রুজু করেছে পুলিশ এবং ঘটনার তদন্তের স্বার্থে বছর কুড়ির ওই ছেলেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে জামাডাঙ্গর এই বিতর্কিত ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার। ওই দিন দুপুরে ৪০ বছর বয়সী নারায়ণ সাঁতরাকে মাথায় আঘাত নিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে বেলদা গ্রামীণ হাসপাতালে আনা হয়। কিন্তু স‍ংজ্ঞা ওই ব্যক্তির অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে পড়ছিল যে চিকিৎসকরা কোনও ঝুঁকি না নিয়ে তাঁকে মেদিনীপুর মেডিকেল স্থানান্তরিত করে যদিও ঝুঁকি নেননি সেখানকার চিকিৎসকরাও। অবস্থার দ্রুত অবনতি হওয়ার কারনে ফের কলকাতা স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দেন তাঁরা। পরিবারের লোকেরা তাঁকে নিয়ে কলকাতার পথে রওনা দেন কিন্তু যাওয়ার পথে ডেবরার টোলপ্লাজার কাছে মৃত্যু হয় নারায়ণ সাঁতরার।

পরিবারের লোকেদের দাবি, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় একটি পাকা বাড়ি নির্মাণ হচ্ছিল নারায়ন সাঁতরার। বুধবার তিনি সেই বাড়ির নিচে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ওপরে কর্মরত শ্রমিকদের হাত থেকে হাতুড়ি ফসকে গিয়ে সরাসরি তাঁর মাথায় পড়ে। এরফলে মাথার খুলি ফেটে যায় তাঁর। এমনটাই দাবি করেছেন নিহত নারায়নের মা উর্মিলা সাঁতরা বলেছেন, ‘ঘটনার সময় আমি আত্মীয় বাড়িতে ছিলাম। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই এসেছি। পরিবারের লোকেরা আমায় জানিয়েছে যে আমার ছেলের মাথায় হাতুড়ি পড়ে যাওয়ার জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে।’ তিনি আরও দাবি করেছেন তাঁর ছেলে খুবই অসুস্থ ছিল ফলে এই ধকল নিতে পারেনি।

যদিও প্রতিবেশীদের একাংশের দাবি, নারায়নের ছেলের সঙ্গে তাঁর বচসা হয় আর তখনই ছেলে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে বাবাকে। ওই সূত্রের দাবি নারায়নের ছেলে সুধাংশু ওরফে বাপি বরাবরই মোবাইল ফোনে আসক্ত। ঘটনার সময় ওই বিষয় নিয়েই তর্কবিতর্ক হয় ছেলে ও বাবার। বাবা ছেলেকে বলে, ‘তুই কি কাজকর্ম ছেড়ে সারাদিন এই মোবাইল নিয়েই পড়ে থাকবি?’ এই কথা বলেই ছেলের হাত থেকে মোবাইল ফোনটি ছড়িয়ে নেন আর তখনই রাগের মাথায় হাতের সামনে পড়ে থাকা হাতুড়ি বাবার মাথায় বসিয়ে দেয় ছেলে।

পুলিশ অবশ্য বিষয়টি নিয়ে এখুনি কিছু বলতে রাজি নয়। মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। আপাততঃ বাপিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশের দাবি ময়নাতদন্ত পরিষ্কার হয়ে যাবে ঘটনাটি খুন নাকি দুর্ঘটনা। “ওপর থেকে মাথায় হাতুড়ি পড়ে যাওয়া আর কাউকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা দুটি ঘটনার প্রতিফলন ধরা পড়বে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কারন এতে ক্ষতের যথেষ্ট তারতম্য হয়। আমরা রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি আর যখন একটা অভিযোগ উঠে আসছে তখন সেটা কতটা যুক্তিযুক্ত তা তদন্তের জন্য আপাতত ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।” জানালেন বেলদা পুলিশের এক আধিকারিক।

RELATED ARTICLES

Most Popular