Homeএখন খবর১৩ বছর পর ফের 'ন্যায়বিচার'য়ের কথা শুনল জনতা! ভারতীর মধ্যেই কী হারিয়ে...

১৩ বছর পর ফের ‘ন্যায়বিচার’য়ের কথা শুনল জনতা! ভারতীর মধ্যেই কী হারিয়ে যাওয়া ‘মমতা’ দেখল নন্দীগ্রাম

 

প্রিয় নেত্রীকে মোবাইল বন্দী করছেন এক সমর্থক                  

নিজস্ব সংবাদদাতা: ১৩ বছর পর ফের নন্দীগ্রামের মাটিতে উঠে আসল ন্যায় বিচারের কথা যা কিনা ২০০৭ থেকে ২০১১অবধি হামেশাই উঠে আসত তৃনমূলের কথায়। আর ২০১১ তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর ১৪ই মার্চের স্মৃতি বলতে একটি সুদৃশ্য শহিদ মিনার। শুক্রবার নন্দীগ্রামের মাটিতে পা রেখেই সেই শহিদ মিনারকেই যেন স্বাক্ষী মানলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি ভারতী ঘোষ। প্রশ্ন তুললেন ক্ষমতায় এসে মমতার সরকার ১৩০ফুট উঁচু এই শহিদ মিনার বানিয়েছিল ২কোটি ২৫লক্ষ টাকার বিনিময়ে কিন্তু সেই ন্যায় বিচারের কি হল যা নন্দীগ্রামের মানুষ চেয়েছিলেন?

তিনি প্রশ্ন তোলেন, সেদিনের সেই পুলিশ আধিকারিক সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, যার নেতৃত্বে সেদিন গুলি চলেছিল তাঁর শাস্তি হওয়া তো দুরের কথা তিনি এখন প্রমোশন নিয়ে তৃনমূলে যোগ দিয়েছেন। এরপরই কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘আজকে নন্দীগ্রামের মাথায় কিংবা হাঁড়িতে চাল নেই তো কী হয়েছে? আপনাদের স্বচ্ছ জল নেই, বার্ধক্য ভাতা নেই তো কী হয়েছে? ছত্রধর মাহাতরা তো খেতে পাচ্ছে, পুলিশের পাহারায় জঙ্গলমহলে ঘুরে বেড়াতে পাচ্ছে, বিমল গুরুংরা তো শিলিগুড়িতে মিটিং করার সুবিধা পাচ্ছে। পুলিশের ছেলে মেয়েরা যাদের গুলিতে মারা গেলে সেই হত্যাকারীকেই খাইয়ে দাইয়ে পুষ্ট করে তাকে দিয়েই মিটিং করে। বা! মমতা, বা! ” প্রাক্তন আইপিএস অফিসারের এই বক্তব্যের পরই করতালিতে ফেটে পড়ল নন্দীগ্রাম, ঠিক যেমনটা ২০০৭ য়ে মমতা ব্যানার্জীর বক্তব্য শোনার পর ফেটে পড়ত নন্দীগ্রাম।

শুক্রবার সকাল থেকেই সাজো সাজো রব নন্দীগ্রামে। ভারতী ঘোষ আসবেন সভা করতে। সরকার বিরোধী কোনও রাজনৈতিক নেতা নেত্রীকে নন্দীগ্রামের এই উৎসাহ ১৩বছর আগে দেখেছে নন্দীগ্রাম। নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়ায় ভারতী ঘোষকে স্বাগত জানাতে হাজির ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মী সমর্থকদের কয়েক’শ বাইক। টেঙুয়া বাসন্তী মন্দির পর্যন্ত বিজেপির বাইক মিছিলের মাঝে হুড খোলা জিপে বিজেপি নেত্রী। রাস্তার দুপাশে উপচে পড়া জনতা। মিছিল শেষে পথ সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপি নেত্রী বলেন জমি আন্দোলনের সামনে থেকে নন্দীগ্রামের মানুষ শহীদ হয়েছিলেন । তৎকালীন বিরোধী নেত্রী বলেছিলেন আমরা এসে নন্দীগ্রামের মানুষকে ন্যায় বিচার দেব কিন্তু নন্দীগ্রামের মানুষ ন্যায় বিচার পায়নি । নন্দীগ্রামের চারিদিকে শুধু নেই আর নেই । এখানে শিল্প আসেনি । কর্মসংস্থান হয়নি এলাকার মানুষের । তাই নন্দীগ্রামের মানুষ ডাক ডাক দিয়েছে আর নেই দরকার তৃণমূল সরকার ।

বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমেছে, ডিসেম্বরের শীত নেমেছে জাঁকিয়ে কিন্তু জনতার নড়ার নাম নেই। যে নন্দীগ্রাম ২০০৭ য়ে বাংলার অগ্নিকন্যা বলে সেদিন মমতা ব্যানার্জীকে স্বাগত জানিয়েছিলেন সেই নন্দীগ্রাম শুক্রবার ‘বাংলার অগ্নিকন্যা’ শিরোপা দিল ভারতী ঘোষকে। মুহুর্মুহু সেই শ্লোগানে ফেটে পড়ল মঞ্চ। সেই মঞ্চে দাঁড়িয়েই ফের আরও একবার ‘ন্যায়বিচার’য়ের কথা শুনল নন্দীগ্রাম।

জমি দেয়নি নন্দীগ্রাম ! প্রাণ দিয়েছে কিন্তু জমি রেখে কী পেয়েছে তার হিসাব মেলাতে গিয়ে বড় মুশকিল হয়ে যায়। কয়েক মাস আগে আমফানের দগদগে স্মৃতি তার থেকে আরও দগদগে আমফানের ক্ষতিপূরণের স্মৃতি। অনেক নেতা নেত্রী, প্রধান, প্রধানের আত্মীয়দের পকেটে ঢুকেছে ক্ষতিপূরনের টাকা। চোখের সামনে হাভাতে নেতার প্রসাদপোম বাড়ি, জমি আন্দোলনের নেতার বদলে যাওয়া রূপ কষ্ট দেয় নন্দীগ্রামকে। তার মধ্যেও নন্দীগ্রাম ‘মমতা’খোঁজে, সেই মমতা যা তাঁদের ক্ষতের প্রলেপ হয়ে দাঁড়াবে। শুক্রবার ভারতী ঘোষের মধ্যেই কী সেই ‘মমতা’কে পেল নন্দীগ্রাম! উত্তর মিলবে ২০২১ য়েই।

RELATED ARTICLES

Most Popular