Homeএখন খবরভাঙনের সানাই শুনল চণ্ডীপুর! ভারতী বললেন ভেঙে ভেঙে তাস পড়ে যাচ্ছে

ভাঙনের সানাই শুনল চণ্ডীপুর! ভারতী বললেন ভেঙে ভেঙে তাস পড়ে যাচ্ছে

নিজস্ব সংবাদদাতা: ফুলে ঢেকে যাচ্ছিল উইন্ড স্ক্রিন, চালক বললেন, ম্যাডাম আর গাড়ি যাবেনা। আমি কিছু দেখতে পাচ্ছিনা। ভারতী ঘোষ নামলেন। পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে বৃহস্পতিবার, সন্ধ্যা তখন গাঢ় হয়ে এসেছে। চণ্ডীপুরের বরোজ এলাকার জগদ্ধাত্রী পুজো ও মেলার উদ্যোক্তারা চেয়েছিলেন গাড়িটা আরও একটু ভেতর অবধি নিয়ে যেতে কিন্তু গাড়িটা ততটা যেতে পারলনা। ফুলের গুঁড়োয় সামনের কাঁচ পুরোপুরি ঢেকে গিয়েছে যেন হলদে রঙের তুষার পাত!

সন্ধ্যা প্রায় সাড়ে ৬টা, বিজেপির রাজ্য সহ সভাপতি যখন মেটাল ব্লু ইনোভা থেকে মাটিতে পা রাখলেন তখন হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন সমবেত নারী পুরুষ। ফুলে ফুলে ছয়লাপ করে স্বাগত জানানো হচ্ছে বরোজ জগদ্ধাত্রী পুজো ও মেলার উদ্বোধক তথা প্রধান অতিথিকে। মাইকে তখন বিসমিল্লা খাঁয়ের সানাই আছড়ে পড়েছে আকাশে বাতাসে, সে সানাইয়ে যেন ভাঙনের বিষন্ন সুর। কিন্তু সানাইয়ে আবার বিষণ্নতার সুর কেন?

উত্তরটা দিলেন উদ্যোক্তাদেরই একজন। বললেন, “যেমন কনের বাড়ির সানাইয়ের আনন্দের মধ্যে বিষাদের সুর বাজে। যে বিষাদ শুনতে পান কনের মা, বাবা। বুঝতে পারেন মেয়ের বিদায়ের সময় হয়ে এল। ঠিক তেমনই চণ্ডীপুর শুনতে পাচ্ছে আসন্ন বিদায়ের, ভাঙনের কথা। চণ্ডীপুর থেকে নন্দীগ্রাম মাত্র ১৫কিলোমিটার! চণ্ডীপুর শাসকের দুর্গ! সেই চণ্ডীপুরের বুকে দাঁড়িয়ে যখন আমরা ভারতী ঘোষকে দিয়ে উদ্বোধন করাতে পারি তখন বুঝতে কী কষ্ট হয় যে তৃণমূলের ভাঙন শুরু হয়ে গেছে?”

জগদ্ধাত্রীর কাছে কী চাইবেন? প্রশ্নের উত্তরে আজ ভারতী ঘোষের জবাব, ” সন্ত্রাসে, অত্যাচারে বাংলার মানুষ জর্জরিত। শ্রেণীগত ভাবে চিকিৎসক, উকিল, শিক্ষক থেকে কৃষক শ্রমিক সবাই আজ অত্যাচারিত। এর থেকে বাংলাকে মুক্তি দিতে মা তুমি শক্তি রূপেনু হয়ে এসো। আর আপনারা সেই ধর্মযুদ্ধের একেক জন সৈনিক হয়ে দাঁড়ান।” পুজোর উদ্বোধনী বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ভিখারি অপবাদ ঘুচুক। কেউ বলবে ২ টাকা কিলো চাল দিচ্ছি, কেউ বলবে কন্যাশ্রী দিচ্ছি, আবার কেউ বলবে অমুক ভাতা, তমুক ভাতা দিচ্ছি। এই ভাবে আমাদের প্রতি মুহূর্তে বোঝানো হচ্ছে আমরা ভিখারি। এদিকে বাংলার যুবকের কাজ নেই, কৃষকের ফসলের ন্যায্য মূল্য নেই, এসএসসি নেই। পরিবর্তনের এই নেই রাজ্যের এবার পরিবর্তন চাই। সত্যিকারের সোনার বাংলা চাই।”

পুজোর উদ্বোধন কিন্ত রাজনীতি পিছু ছাড়লনা প্রাক্তন আইপিএস আধিকারিকের। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলেন, শুভেন্দু অধিকারীর বর্তমান ভূমিকা নিয়ে কিছু বলুন, তিনি কী বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন? ভারতী উত্তর দিলেন, “শুধু শুভেন্দুর একার কথা বলছেন কেন? কোচবিহারে মিহির গোস্বামী, মালদার কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী, সিঙ্গুরের রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। একটার পর একটা তাস খসে পড়ছে। এরপর দেখবেন আর একটাও তাস নেই। ভাঙনের শুরু হয়ে গেছে। এরপর আর তৃণমূলকে দূরবীন দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবেনা।”

RELATED ARTICLES

Most Popular