Homeএখন খবরHilsa-Bhetki:দিঘার পথ হারিয়েছে ইলিশ ! রুপালি শস্যের আকাল মিটিয়ে ৩৪টি ভেটকি বিক্রি...

Hilsa-Bhetki:দিঘার পথ হারিয়েছে ইলিশ ! রুপালি শস্যের আকাল মিটিয়ে ৩৪টি ভেটকি বিক্রি হল ৫০লক্ষ টাকায়

নিজস্ব সংবাদদাতা: ভেটকি মাছের কেজি নাকি ২৮ হাজার টাকা! না, শুনে কেউ ফুৎকারে উড়িয়ে দেবেন না। গত মরশুমে ওই দামেই নিলামে উঠেছিল ভেটকি। অবশ্য ওই ভেটকি মাছটিকে পুরুষ হতে হবে আর নারী প্রজাতি হলে দাম কেজি প্রতি সাড়ে চার থেকে ৫হাজার টাকা। সম মাছের সম দাম নীতি এখানে কেন কার্যকরী হবেনা সেই নিয়ে আন্দোলন করে লাভ নেই বরং শুনে নেওয়া যাক দিঘার ভেটকি বৃত্তান্ত।

এই মরশুমে এখনও অবধি দিঘা জুড়ে ইলিশের হাহাকার। পথ হারিয়ে সেই ইলিশ মায়ানমার বা বাংলাদেশের দিকে ছুটছে বোধহয়। ঝিরঝিরে বৃষ্টি আর পূবালি হওয়া ছাড়া সে ইলিশের দল মুখ ফিরিয়ে দিঘা মুখো হবে আপাততঃ এমনটা বলা যাচ্ছেনা। কাঁথির মৎসদপ্তরে বসে থাকা মৎস বিজ্ঞানীরা এখুনি তেমনটা আশা দেখছেন না। ইলিশের এই মহাসঙ্কটে মৎসজীবীদের আশার আলো এখন ভেটকি। না, যে সে ভেটকি নয়। তেলিয়া ভেটকি। যাকে কেউ কেউ আবার কই ভোল ভেটকি বলে থাকেন। অর্থাৎ কই মাছের মত মাথা ওয়ালা ভোলা মাছের গড়ন যুক্ত ভেটকি প্রজাতির মাছ।শনিবার এমনই প্রজাতির ৩৪টি মাছ দিঘা মোহনার মৎস নিলাম কেন্দ্রে বিক্রি হয়ে গেল প্রায় ৫০লক্ষ টাকায়। জানা গেছে স্থানীয় একটি মাছ ধরার ট্রলার ‘মা বাসন্তী” যার মালিক চঞ্চল প্রধান, সেই ট্রলারেই উঠে এসেছে এই মহার্ঘ্য ৩৪টি মাছ। দিঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের ডিরেক্টার নবকুমার পয়ড়্যা। ৬ টি মাছের ওজন হয় ১৩৮ কেজি, ২০ টির ২২৮ কেজি আর বাকি ৮ টি-র ওজন হয় ১৯০ কেজি। ওজন অনুপাতেই দাম ওঠে মাছগুলোর। সব মিলিয়ে ৫৫৬ কেজি তেলিয়া ভোলার দাম ওঠে ৪৫ লক্ষ ৪১ হাজার ৬০০ টাকা। অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাসের আড়তে সেগুলোর নিলাম হয়।

নব কুমার পয়ড়্যা জানিয়েছেন, ” এই ৩৪টি মাছের মধ্যে ৭টি পুরুষ প্রজাতির মাছ ছিল যেগুলি এদিন নিলামে উঠেছিল ১৩হাজার টাকা প্রতি কেজি। আর নারী প্রজাতির মাছ গুলি নিলাম হয়েছে ৪,৫০০টাকা প্রতি কেজি।” তিনি বলেন, ‘ মাছের ওজন অনুসারে দামের তারতম্য হয় । যেমন গত মরশুমে এই পুরুষ ভেটকি বিক্রি হয়েছে ২৮হাজার টাকা প্রতি কেজি।’

কিন্তু এত দাম কেন? বিজ্ঞানীরা বলেন, ‘ তেলিয়া ভোলার দাম আসলে তার মাংসে নয়, দাম তার পেটের ভেতর থাকা অন্ত্রে যাকে সোজা বাংলায় মাছের পটকা বলা হয়ে থাকে। বিদেশে, বিশেষ করে জাপানে এই পটকার প্রচুর চাহিদা। জীবনদায়ী বিভিন্ন ওষুধের ক্যাপসুলের খোল তৈরি হয় এই পটকা থেকে। সেই ক্যাপসুল খাওয়ার পর তা সহজেই মিলিয়ে যায় আমাদের পেটের ভেতরে গিয়ে।

পুরুষ ভেটকির ওই পটকা নারী ভেটকির চাইতে অনেকটাই লম্বা আর বড়। তাই দামও বেশি।” এই মাছ ধরতে পেরে তাই চওড়া হাসি সুনির্মল বরের। ওহ! সুনির্মলের কথা বলাই হয়নি, সুনির্মলই সেই ট্রলারের চালক যে কিনা এই মাছ ধরেছে। গতবছরও সুনির্মলই মাঝ সমুদ্র থেকে ডাঙায় তুলেছিল ভেটকিকে!

তবে ভেটকির সেরা রেকর্ড রয়ে গেছে ২০১৭ সালেই। দিঘার এই নিলাম কেন্দ্রেই। সেবার মাছটি উঠেছিল এই নব বাবুর আড়তেই। মন্দারমনি কালিন্দী এলাকার মৎসজীবী সেক জাকির পাঁচ ফুট লম্বা ৩৭কেজির কই ভোলা ভেটকি বা তেলিয়া ভেটকি এনেছিলেন নিজের ভুটভুটি করে। ১৯হাজার টাকা প্রতি কেজি সেই একটি মাছ বিক্রি হয়েছিল ৭লাখ টাকায়! এবার ভাবুন শনিবারের ধরা পড়া মাছ গুলি যদি ওরকম ওজনের হত! এদিন তেলিয়া ভোলা ছাড়াও চঞ্চল মাইতির আড়তে ওঠে ১২৭ টি নেড়া ভোলা। যার একেকটির ওজন ১০ কেজি-রও বেশি। কেজি প্রতি যার দাম ছিল ৬২০ টাকা। ওডিশার একটি ট্রলারে উঠেছিল সেই মাছ। তাই বলা যে, নাই বা এল ইলিশ, এমন ভেটকি আসতে থাকলে কপাল খুলে যাবে মৎসজীবীদের।

RELATED ARTICLES

Most Popular