Homeএখন খবরশুভ জন্মদিন খড়গপুর টাউন থানার নতুন ভবনের, নস্টালজিয়ার ব্রিটিশ কলোনি

শুভ জন্মদিন খড়গপুর টাউন থানার নতুন ভবনের, নস্টালজিয়ার ব্রিটিশ কলোনি

নিজস্ব সংবাদদাতা: “একটা শহরের জন্যই একটা আলাদা থানা! না, আপনি কোথাও পাবেন না।” গলায় জোর রেখে বলেছিলেন তৎকালীন খড়গপুরের এস.ডি.পি.ও সুখেন্দু হীরা। সে অনেক কাল আগের কথা, এসডিপিও সাহেব তখন সন্ধ্যা নামার পর রেল কলোনি ঘুরে বেড়াতেন রেসিং সাইকেলে। তখন পুরী গেটের ফ্লাই ওভার তখন হয়নি। সাইকেল গড়িয়েই চলে আসতেন আইআইটি ক্যাম্পাস অবধি। বই পড়ার পাশাপাশি অতীত খোঁড়ার শখ।

প্রথম থানা ভবন

বর্তমানে কলকাতা রিজার্ভ ফোর্সের ডেপুটি কমিশনার সুখেন্দু হীরাই খুঁজে বের করেছিলেন খড়গপুর টাউন থানা কম্পাউন্ডের ভেতর থেকেই ব্রিটিশ আমলের লাইব্রেরি। সেই লাইব্রেরিতে রাখা থাকত দাগি অপরাধীদের অপরাধের কাহিনী। তো সেই ব্রিটিশ আমলেই তৈরি হল খড়গপুর টাউন থানা। ১৯০০সাল নাগাদ খড়গপুরে রেল কারখানার পত্তন, সাহেব সুবাদের বাংলো তৈরি হচ্ছে। তখন সিএমই বা চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারই সর্বে সর্বা, ডিআরএম বলে কিছু নেই। রেল কারখানার মূল গেট যার থেকেই কিনা নাম হল গেট বাজারের। তার সামনেই পত্তনি দেওয়া হল দুটি ভবনের। একনম্বর থানা আর দুনম্বর পোস্ট অফিস। ১৯০৪ সাল। খড়গপুর টাউন থানায় ঢুকলেই ডান দিকে মূল ভবন আর উল্টো দিকেই অর্থাৎ বাঁ দিকে যে দোচালা ছোট ঘর , এখন যেখানে ট্রাফিক ওসি বসেন সেটাই হল পুরানো ভবন, বড় দারোগা ওখানেই বসতেন। ব্রিটিশদের কল্যানে খড়গপুর একটা আস্ত থানা পেল বটে কিন্তু সে থানা তখন শুধু শহর খড়গপুর সামাল দেয়। কিন্তু কালক্রমে থানার পরিসর বাড়তে বাড়তে গ্রাম অবধি ছড়াতে শুরু করল। স্বাধীনতার চার বছর পর অবধি শহর আর গ্রাম নিয়ে নাকানি চোবানি খাচ্ছিল খড়গপুর থানা। ১৯৫০ সালে আলাদা করে দেওয়া হল গ্রামীন থানা। শুধু শহর নিয়ে তৈরি হল খড়গপুর টাউন থানা যার আওতায় এল পৌরসভার ৩২.৫৩ বর্গ কিলোমিটার আর রেলের ৪০বর্গ কিলোমিটার জায়গা।

যদিও আশ্চর্য এই যে পরের দিকে পৌরসভার আওতায় নতুন নতুন ওয়ার্ড এলেও সেগুলো খড়গপুর টাউন থানার আওতায় আসেনি। মালঞ্চ, নিমপুরা, তালবাগিচা ইত্যাদি বহু পৌর এলাকা এবং খড়গপুর শহর বিধান সভার এলাকা খড়গপুর শহর থানার পরিবর্তে গ্রামীন থানার অধীন। এই ৭২.৫৩ বর্গ কিলোমিটার জায়গার আইন শৃংখলা রক্ষার জন্য খড়গপুর টাউন থানা ছাড়াও শহরের ভেতরে ৫টি ফাঁড়ি রয়েছে।

বিশ শতকের গোড়ায় খড়গপুর রেল কারখানার হাত ধরেই জনস্রোত আছড়ে পড়ছে শহরে। আশেপাশের গ্রাম যেমন উঠে এসেছে তেমনি অন্ধ্র আর ওড়িশা থেকে বিপুল শ্রমিক, শ্রমিক এসেছে মহারাষ্ট্র থেকেও। শহরে জনবসতির ঘনত্ব বেড়েছে কিন্তু থানা ভবনের পরিসর বাড়েনি। স্বাধীনতার পর দম ফেলার সময় হচ্ছিল না কাজের চাপে। তারপরই আলাদা হল থানা। এরপরও ৪৪ বছর ওই রেলের দেওয়া এক চিলতে বাড়িতেই চলেছে থানার কাজ। অবশেষে ১৯৯৪ সালে নতুন ভবন পেল খড়গপুর টাউন থানা। ১০ই আগস্ট সেই নতুন ভবনের ২৫ বছর পূর্তিতে মেতে উঠলেন টাউন থানার আধিকারিক আর কর্মীরা। এদিন সকালে নিমপুরা কুষ্ঠ কলোনি তে গিয়ে দুস্থ মানুষদের সাথে কেক কাটা হয়েছে পুলিশের তরফে। কৌশল্যার যৌন কর্মীদের উপহার দেওয়া হয়েছে শাড়ি। সব মিলিয়ে অন্য রকম মেজাজে কাটালো আজ খড়গপুর টাউন থানা।

RELATED ARTICLES

Most Popular