Homeএখন খবরছেলে কে খুন করেছে বৌমাই, মায়ের অভিযোগে আদালতের নির্দেশে ভিত্তিতে আড়াই...

ছেলে কে খুন করেছে বৌমাই, মায়ের অভিযোগে আদালতের নির্দেশে ভিত্তিতে আড়াই বছর পরে কবর খুঁড়ে কেশপুরে তোলা হল কঙ্কাল

বস্তাবন্দি করা হচ্ছে লোকমানের কঙ্কাল 

নিজস্ব সংবাদদাতা: অবৈধ সম্পর্কের জেরে পরিকল্পনা মাফিক ছেলে খুন করেছেন বৌমা সহ কয়েকজন। আর সেই খুনের ঘটনা চাপা দিতে কার্যত বাড়ি ছাড়া করা হয়েছিল মা ও বাবাকে। আদালতে এই অভিযোগ করার পরই আদালতের নির্দেশে আড়াই বছর কবর থেকে তোলা হল ছেলের কঙ্কাল। মঙ্গলবার এই বিরল ঘটনা দেখার জন্য ঢল নামল পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর থানার মাজুরিয়া গ্রামে।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
মাজুরিয়া গ্রামের সেই  মা’য়ের অভিযোগ, ‘বউমার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক ছিল মামাতো দেওরের। বৌমা, দেওর আর কয়েকজন পরিকল্পনা করে ছেলেকে খুন করে তাঁর মুখে বিষ ঢেলে দিয়েছিল’। যদিও স্ত্রীর দাবী, ‘তার স্বামী বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছিল। আমার শাশুড়ি মিথ্যে অভিযোগ করেছে’। খুন! না আত্মহত্যা? রহস্য উন্মোচনের জন্য আদালতের নির্দেশে আড়াই বছর পর কবর থেকে মৃতের কঙ্কাল তোলা হল ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য।
এদিন কড়া পুলিশি নিরাপত্তায়  মাজুরিয়া গ্রামের গোরস্থানের কবর থেকে শেখ লোকমান আলির কঙ্কাল তোলা হয়। মঙ্গলবার ভোর থেকেই গোটা এলাকা ঘিরে ফেলা হয় কড়া পুলিশি নিরাপত্তায়। ম্যাজিস্ট্রেট এবং মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের বিশেষজ্ঞদের উপস্থিত ছিলেন।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ঘটনার বিবরন দিতে গিয়ে এক ব্যক্তি জানান  , ২০১৭ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় কেশপুরের মাজুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা শেখ লোকমান আলির। মৃতের স্ত্রী ও গ্রামবাসীদের দাবী, ‘বাবা-মায়ের সম্পত্তি তার নামে লিখে না দেওয়ায় বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছিল লোকমান’। মৃত্যুর পর ময়নাতদন্ত না করেই গ্রামের গোরস্থানে (কবরস্থান) কবর দিয়ে দেওয়া হয় গ্রামবাসীদের উপস্থিতিতে। ঘটনার এক-দেড় বছর পর গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে যায় মৃত লোকমানের মা সেরজুনা খাতুন বিবি ও বাবা শেখ আসরাফ আলি। মাস কয়েক আগে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন মৃতের মা সেরজুনা খাতুন বিবি। অভিযোগ, ‘তার ছেলে লোকমানকে খুন করে মুখে বিষ ঢেলে দেওয়া হয়েছে। সেরজুনা এবং তাঁর স্বামী আসরাফকে গাছে বেঁধে রেখে সম্পত্তি লিখে দিতে বাধ্য করেছে। ঘটনার তদন্ত চেয়ে আদালয়ের দারস্থ হন মৃতের মা। আদালত ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন। 

মাটি খুঁড়ে তোলা হচ্ছে কঙ্কাল 

আদালতের নির্দেশ পেয়েই  মাস খানেক আগে  লোকমানের কবর হলুদ ফিতে দিয়ে ঘিরে ফেলেছিল  পুলিশ। মঙ্গলবার ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর থেকে কঙ্কাল তোলা হয়। ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেশপুরের বিডিও দীপক ঘোষ। বিডিও দীপক ঘোষ বলেন, ‘আমার উপস্থিতিতে কবর থেকে কঙ্কাল তোলা হয়েছে। ঘোটা প্রক্রিয়াটিতে আমি উপস্থিত ছিলাম। এটাই ছিল আমার কাজ। মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও উপস্থিত ছিলেন। এরপর যা করার ওনারা করবেন’।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের একাধিক আধিকারিক। গোটা ঘটনার ভিডিও রেকোর্ডিং করা হয় তদন্তের স্বার্থে। জানা গিয়েছে, কবর থেকে কঙ্কালটি তোলার পর মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য। ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘কেশপুরের মাজুরিয়া গ্রামে করব থেকে তদন্তের জন্য একটি কঙ্কাল  তোলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে এখনই এর বেশি কিছু বলা যাবেনা’।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
যদিও আড়াই বছর পর কবর থেকে কঙ্কাল তোলার ঘটনায় অভিযোগকারীর বিরুদ্ধেই গ্রামের অধিকাংশ মানুষ। মৃত সেখ লোকমানের স্ত্রী পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা। মৃত লোকমানের স্ত্রী সখিসোনা বিবি বলেন, ‘আমার শাশুড়ি মিথ্যে অভিযোগ করেছে। তিনি বলেন, আমার স্বামী ছিলেন দিন মজুর। আমাদের চার মেয়ে এক ছেলে। খুব কষ্টে সংসার চলত। শ্বশুর-শাশুড়ির বিঘা বারো জমি ছিল। ছেলে কিছু জমি চেয়ে ছিল। তা না দেওয়ায় বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। তারপর শ্বশুর-শাশুড়ি নিজেদের ইচ্ছাতে আমার ছেলে মেয়েদের নামে কিছু জমি লিখে দিয়েছিল। এখন শাশুড়ি মেয়ে জামাইদের কথায় কোর্টে অভিযোগ করেছে ঐ জমি ফেরানোর জন্য।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
গ্রাম কমিটির সভাপতি সেখ সাজাহান আলি বলেন, গোটা গ্রাম জানে লোকমান বিষ খেয়েই আত্মহত্যা করেছিল জমি জায়গা নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে। তখন ওরা ময়না তদন্ত করাতে চায়নি। এখন গ্রাম থেকে পালিয়ে মিথ্যে অভিযোগ করেছে।” কিন্তু ঘটনার জট একটা জায়গাতেই যে যদি আত্মহত্যাই করে থাকে লোকমান তাহলে কেন পুলিশকে না জানিয়েই , ময়নাতদন্ত ছাড়াই কবর দেওয়া হল? কিছু কি সত্যি লুকাতে চাওয়া হয়েছিল ? ফরেনসিক পরীক্ষাতেই উঠে আসতে পারে সেই সত্য। 

RELATED ARTICLES

Most Popular