Homeএখন খবরসবংয়ের রাস্তায় তাজা বোমা উদ্ধার করল পুলিশ! সামনেই বিধানসভা নির্বাচন, আতঙ্কে গ্রামবাসীরা

সবংয়ের রাস্তায় তাজা বোমা উদ্ধার করল পুলিশ! সামনেই বিধানসভা নির্বাচন, আতঙ্কে গ্রামবাসীরা

নিজস্ব সংবাদদাতা: গ্রামের রাস্তায় তাজা বোমা পড়ে থাকতে দেখে আতঙ্ক ছড়িয়েছে গ্রামবাসীদের মধ্যে। যদিও পুলিশ সেই বোমা উদ্ধার করে নিয়ে গেছে তবুও আতঙ্ক কাটছে না স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদের মতে বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এই বোমা বুঝিয়ে দিচ্ছে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হচ্ছে সবংকে কেন্দ্র করে। বাসিন্দাদের অভিযোগ কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্ত বোমা বাজি চলছে রাতে অথবা ভোর বেলায়। সেরকমই এই বোমাটি রাতের অন্ধকারে ছোঁড়া হয়েছিল যা না ফেটে রয়ে গেছে।

জানা গেছে বেশ বড় সাইজের বোমাটি উদ্ধার হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং থানার ৬নম্বর চাউলকুড়ি গ্রামপঞ্চয়েতের চাউলখোলা গ্রামের রাস্তায়। রাস্তার অদূরেই পিন্টু সিং নামে এক গৃহস্থের বাড়ি। সেই বাড়ির কিছুটা দুরে বোমাটি পড়ে থাকতে দেখা যায় রাস্তার পাশে ঘাসের মধ্যে। পথচারীরা বোমাটি দেখতে পেয়েই খবর দেয় গ্রামবাসীদের। গ্রামবাসীরা তৎক্ষণাৎ খবর দেয় স্থানীয় সিভিক ভলেনিটিয়ারকে। সিভিকরা এসে রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়। পথচারীদের অন্য রাস্তায় যাতায়ত করতে বলা হয়। দুপুরের কিছু পরে সবং থানার পুলিশ আধিকারিক ও কর্মীরা এসে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার সাথে বোমাটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত শনিবার তারিখ ভোর রাতে আশাপুরা তৃণমূল পার্টি অফিসে দরজায় বোমা মারা হয়েছিল যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় পার্টি অফিসটির কিছু অংশ। যদিও এই পার্টি অফিসটিতে কারা বোমা মেরেছিল তা নিয়ে সবং তৃণমূলের পক্ষ থেকে কোনও দাবি করা হয়নি। তবে গ্রামবাসীদের দাবি সবংয়ে তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে প্রবল দ্বন্দ্ব রয়েছে সেই কারনেও এই বোমাবাজির ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আশাপুরা ৯৯ নম্বর বুথ এবং সোমবার উদ্ধার হওয়া বোমাটি পাওয়া গেছে ১০০নম্বর বুথ এলাকায়। ফলে এটা স্পষ্ট যে বর্তমানে এই এলাকায় সক্রিয় হয়েছে দুষ্কতিরা। তাঁদের আরও বক্তব্য এক সপ্তাহ আগেই বোমাবাজি হয়েছে আন্দুলিয়া এলাকায়। এই এলাকারই বোমাবাজির শীর্ষস্থানে রয়েছে ১০২ নম্বর বুথের নেধুয়া গ্রামটি। যেখান থেকে আগে পুলিশ বোমা উদ্ধার করেছে একাধিকবার।

চাউলকুড়ি এলাকার বিজেপি শক্তি কেন্দ্র প্রমুখ কিঙ্কর হাজরা বলেছেন, ‘নির্বাচন আসার সঙ্গে সঙ্গে এই বোমা বাজির ঘটনা বেড়েই চলে কারন এর পেছনে রয়েছে মানুষকে বিশেষ করে বিরোধীদের ভীত সন্ত্রস্ত করে তোলা। শুধু তাই নয় শাসকদলের কোন গোষ্ঠীর দখলে থাকবে এলাকা তাই নিয়েও চলছে বোমাবাজি। ইতিমধ্যে চমক ধমকও শুরু হয়ে গেছে বিরোধীদের উদ্দেশ্যে। বলা হচ্ছে, নির্বাচন পেরুলেই দেখে নেওয়া হবে। এই অবস্থা চলতে থাকলে সুষ্ঠ ও অবাধ নির্বাচন সম্ভব হবে কী হবে?”

সবংয়ের তৃণমূল নেতা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি বলেন, “আশাপুরায় আমাদের পার্টি অফিসে যারা বোমা মেরেছিল বলে আমরা সন্দেহ করছি তারা আমাদেরই দলের একটি অংশের মদতপুষ্ট। পুলিশ তদন্ত করে দেখলেই সবটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। এটা ঘটনা যে ওই এলাকায় আমরা পুরানো পার্টির কর্মীরা যাতে কাজ না করতে পারি, আমাদের তৎপরতা যাতে বন্ধ হয়ে যায় তাই করতে উঠে পড়ে লেগেছে নব্য তৃনমূলের কিছু দুষ্কৃতি। পরিণামে যেটা হচ্ছে তা’হল পার্টিটার প্রভাব নষ্ট হচ্ছে।”

যদিও ওই এলাকার তৃনমূল নেতা তথা অঞ্চলের সভাপতি শ্যামাপদ কুইলা দাবি করেছেন, ‘এই এলাকা বরাবরই উত্তপ্ত করে রাখত আগের তৃনমূল নেতারা। তখন আমরা কংগ্রেস করতাম। আমরা দলের দায়িত্বে আসার পরই এলাকা ক্রমশ শান্ত করেছি। আমরাই এই বোমার কথা প্রথম পুলিশকে জানিয়েছি। যাঁরা আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপতে চাইছেন তাঁরাই এই ঘটনা ঘটাচ্ছেন কীনা সন্দেহ।”

RELATED ARTICLES

Most Popular