Homeএখন খবরহলদিয়া আসার পথে পর্তুগাল জাহাজের তেল ট্যাঙ্কে ফুটো! সতর্ক করা হল উপকূল...

হলদিয়া আসার পথে পর্তুগাল জাহাজের তেল ট্যাঙ্কে ফুটো! সতর্ক করা হল উপকূল রক্ষী বাহিনীকে, উদ্বিগ্ন পরিবেশবিদরা

সমুদ্রে তেল ছড়ালে যেমনটা হয়

নিজস্ব সংবাদদাতা: শ্রীলঙ্কার কলম্বো থেকে হলদিয়া বন্দরের দিকে রওনা দেওয়া একটি পণ্যবাহী(কন্টেনার) জাহাজের জ্বালানি ট্যাঙ্কে ফুটো হয়ে যাওয়ায় তেল ছড়িয়ে পড়ছে সমুদ্রের জলস্তরে যা থেকে মাছ সহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে বলে মনে করা হচ্ছে। গোটা ঘটনার দিকে নজর রাখছে ভারতীয় উপকূল রক্ষা বাহিনীর চেন্নাই সদরদপ্তর। একটি ডরনিয়ার এয়ারক্র্যাফট প্রতিনিয়ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে চলেছে। এখনও পর্যন্ত জানা গেছে সমুদ্রের প্রায় ১০কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়িয়েছে জাহাজের জ্বালানি তেল। জাহাজের ক্রু সদস্যরা চেষ্টা করছেন অন্য একটি ট্যাঙ্কে তেল সরিয়ে নেওয়ার জন্য।

জাহাজের যেখানে ফুটো হয়েছে

হলদিয়া বন্দর সূত্রে জানা গেছে জাহাজটি শনিবার অর্থাৎ ১৯শে জুন রাতে হলদিয়া থেকে ১২০ কিলোমিটার সমুদ্র গভীরতায় স্যান্ডহেডে পৌঁছাবে। হলদিয়া বন্দরের নাব্যতা আশানুরূপ না হওয়ায় সাধারণ ভাবে বড় জাহাজগুলি এখানেই শেষ অবধি নোঙর করে থাকে। তারপর অপেক্ষাকৃত ছোট জাহাজ বা সিস্টার ভেসেল মারফৎ সেখান থেকে হলদিয়া বন্দরে পণ্য আনা হয়। বন্দরের এক কর্তা জানিয়েছেন, “আমরা যতদূর জানতে পারছি জাহাজটি এই মুহূর্তে হলদিয়া থেকে ৪২০কিলোমিটার দুরে রয়েছে। সেই থেকে অনুমান করা যাচ্ছে স্যান্ডহেডে পৌঁছাতে ১৯জুন রাত্রি হয়ে যাবে।”

ভারতীয় উপকূল রক্ষী বাহিনী বা INDIAN COST GURD হলদিয়া সদরদপ্তর সূত্রে জানা গেছে জাহাজটির নাম এমভি দেবন (MV Devon)। পণ্যবাহী এই জাহাজটির অবস্থান সম্পর্কে তাদেরও জানানো হয়েছে। যদিও বিষয়টি এখন চেন্নাই সদর দপ্তর দেখছে। জাহাজটি তাদের জলসীমায় আসলে তারা নজরদারি শুরু করবেন। উপকূল রক্ষী বাহিনীর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “জাহাজটি পর্তুগালের হলেও বর্তমানে সেটি কলম্বো থেকে আসছে। ১৬ই জুন জাহাজের দ্বিতীয় জ্বালানি ট্যাঙ্কারটি ফুটো হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।”

জাহাজটিতে ক্যাপ্টেন ও তার সহকারি সহ ১৭জন ক্রু রয়েছেন। এই ১৭জনের মধ্যে জার্মানি ও রাশিয়ার ১জন করে নাগরিক, ৪জন ইউক্রেনের নাগরিক ও ১১জন ফিলিপিওনো রয়েছেন। মোট ৩৮২টি কন্টেনারে ১০হাজার ৭৯৫টন পণ্য বহন করছে ওই জাহাজটি। ক্রু সদস্যরা ফুটো হয়ে যাওয়া ট্যাঙ্ক থেকে অন্য একটি ট্যাঙ্কে জ্বালানি স্থানান্তরের কাজ শুরু করেছেন।

এদিকে ঘটনায় যথেষ্ট উদ্বিগ্ন পরিবেশ বিদরা। জানা গেছে জাহাজটিতে ৬৩২.৪ মেট্রিক টন ভিএলএসএফও (VLSFO) এবং ৫০.৩ মেট্রিক টন এমজিও (MGO) জ্বালানি রয়েছে। এর মধ্যে দ্বিতীয় শ্রেণীর জ্বালানিতে সালফারের পরিমান বেশি অন্যদিকে প্রথমশ্রেণীর জ্বালালিতে লুব্রিকেট বা ঘন খনিজ তেলের সংমিশ্রণ থাকে। এই দুই জ্বালানির কোনও একটি সামুদ্রিক প্রাণী ও পাখিদের জন্য মারাত্মক। তাঁরা বলেছেন জলতলের ১.৫মিটার গভীরতায় ট্যাঙ্কটি ফুটো হয়ে যার ফলে শুধুই ওপরের স্তরে নয় নিচের স্তরেও সামুদ্রিক জীবের দল বিপদের মধ্যে রয়েছে।

অবিলম্বে উপযুক্ত রাসায়নিক প্রয়োগ করে ওই ভাসমান তেলকে দ্রবীভূত না করতে পারলে বিপদ আরও বাড়বে। কারন ইতিমধ্যেই ১০কিমি ছড়িয়ে গেছে তেল। তাঁরা অভিযোগ করেছেন, “খরচ বাঁচানোর জন্য নিয়মিত মেরামতি করা হয়না জাহাজ গুলো যে কারণেই এই বিপর্যয়ের মুখে বারবার পড়তে হয় সামুদ্রিক প্রাণীদের। সরকার ও বন্দর কর্তৃপক্ষগুলিও এ বিষয়ে যথেষ্ট উদাসীন। এই ঘটনার জন্য জাহাজ কোম্পানির কাছ থেকে চড়া ক্ষতিপূরণ দাবি করা উচিৎ।”

RELATED ARTICLES

Most Popular