Homeএখন খবরব্যারাকপুরের বিজেপি নেতা মণীশ শুক্ল-র মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের দাবি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের

ব্যারাকপুরের বিজেপি নেতা মণীশ শুক্ল-র মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের দাবি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের

ওয়েব ডেস্ক : রবিবার রাতে বিজেপি–র ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সদস্য মণীশ শুক্ল-র খুনের পর থেকেই থমথমে গোটা ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল। সকাল থেকেই ব্যারাকপুর সহ পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিতে চলছে গেরুয়া শিবিরের ডাকা ১২ ঘণ্টার বন্‌ধ। সে অনুযায়ী, সকাল থেকেই বন্ধ ব্যারাকপুর৷ পলতা,শ্যামনগর সহ একাধিক এলাকার দোকানপাট, বাজার। এদিকে, সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ নিহত মণীশ শুক্লর পরিবারকে সমবেদনা জানাতে তাঁর বাড়িতে যান বিজেপি–র জাতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় অরবিন্দ মেনন, বিজেপি–র সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায় ও ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং৷ ।

রবিবারের পর এদিনও অর্জুন সিং ফের দীর্ঘদিনের ছায়া সঙ্গী মণীশ শুক্লকে খুনের পিছনে তৃণমূল ও পুলিশকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন। অর্জুন সিং -এর অভিযোগ, “এই ঘটনাটি পুরোটাই পুলিশ ও তৃণমূলে যৌথ অপারেশন। আমার কাছে খবর আছে, দুই চেয়ারম্যান উত্তম দাস ও প্রশান্ত চৌধুরী এবং রাজেন্দ্র চৌধুরী ও রাজেন্দ্র যাদব পুলিশের সঙ্গে সম্প্রতি বৈঠক করেন। কারণ, যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়েছে তা পুলিশই ব্যবহার করে। খুব সম্ভাবনা রয়েছে, লাটবাগান থেকে অস্ত্র বেরিয়ে পরে সেই অস্ত্র ফিরে গিয়েছে লাটবাগানে।”

এদিকে পেশায় আইনজীবী তথা বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সদস্য মণীশ শুক্লার মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতে রবিবারই এক ভিডিও বার্তায় এ ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। সোমবার ফের একই দাবি করেন অর্জুন সিং। তিনি বলেন, “‌যেখানে পুলিশ জড়িত সেখানে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছি আমরা। আমরা জানি সেটা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করতে দেবেন না। দরকার পড়লে আমরা আদালতে যাব।” এদিন তিনি গুরুতর অভিযোগ তুলে বলেন, “পুরো ঘটনার রেকি হচ্ছিল ডানলপ থেকে। আমার কাছে খবর আছে, নান্টু ঘোষের বাড়ি থেকে এই অপরাধীরা বেরিয়েছে। কারণ, শহরের সব দুষ্কৃতী নান্টুবাবুর বাড়িতেই থাকে। তৃণমূল যে রাস্তা তৈরি করেছে সেই রাস্তায় তৃণমূলকেই হাঁটতে হবে।”

দীর্ঘ কয়েকবছরের ছায়া সঙ্গীর মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই শোকাহত অর্জুন সিং। সাংসদ বলেন, “মণীশ আধ ঘণ্টা আগে অবধি আমার সঙ্গে ছিল। আমরা বাউড়িয়া থেকে বৈঠক সেরে ফিরছিলাম। কিন্তু কৈলাস বিজয়বর্গীয় সঙ্গে এক ব্যক্তির সাক্ষাৎ করানোর কথা থাকায় আমি সেদিক থেকে ওদিকে চলে যাই। আর ও চা খেতে চলে আসে টিটাগড়ে আমাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে। আমার আফশোস, আমরা যদি দু’‌জনে সঙ্গে থাকতাম তবে হয়তো ও বেঁচে যেত বা আমরা দু’‌জনেই মরে যেতাম। কিন্তু একটা মনের শান্তি থাকত, যে ব্যক্তি সারাজীবন আমার সামনে ঢাল হয়ে ছিল, সবসময় আমার সামনে থাকত যাতে আমার কিছু না হয়, শেষপর্যন্ত তাঁর পাশে থাকতে পারতাম।”

প্রসঙ্গত, রবিবার হাওড়ার এক দলীয় বৈঠকে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতা মণীশ শুক্ল। সেখান থেকে ফিরে টিটাগড় থানার পাশে বিটি রোডের ওপর দলীয় কার্যালয়ে ঢোকার সময় আচমকা উলটো দিক থেকে মোটর বাইকে আসা দুষ্কৃতিরা তাঁকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। সঙ্গে সঙ্গে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। এরপর দ্রুত তাঁকে টিটাগড়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তার অবস্থার ক্রমশ অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। রবিবার রাতে হাসপাতালেই মৃত্যু হয় ব্যারাকপুরের বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লর। সামনেই বিধানসভা নির্বাচন তার আগে বিজেপির প্রথম সারির নেতার খুনের ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই গেরুয়া শিবিরে বড় ধাক্কা বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

RELATED ARTICLES

Most Popular