Homeএখন খবরতৃনমূল বিধায়ক সত্যজিৎ খুনে মুকুলের নামে চার্জশিট দাখিল সিআইডির,

তৃনমূল বিধায়ক সত্যজিৎ খুনে মুকুলের নামে চার্জশিট দাখিল সিআইডির,

অশ্লেষা চৌধুরী: সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের মামলায় মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করল সিআইডি। সত্যজিৎ বিশ্বাসের কথা মনে আছে তো! কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক ছিলেন তিনি। ২০১৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে নদীয়ার ফুলবাড়ি এলাকায় সরস্বতী পুজোর উদ্বোধন করতে গিয়ে আততায়ীদের গুলিতে গুরুতর জখম হন তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস। খুব কাছ থেকে তাঁকে একাধিকবার গুলি করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় হাঁসখালি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই বছরই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। এফআইআর-এ প্রাথমিকভাবে পাঁচ জনের নাম ছিল। পরে বিধায়কের পরিবারের তরফে মুকুল রায়, জগন্নাথ সরকার সহ ৪৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়।

এরপর আজ শনিবার সকালে সেই খুনের মামলায় বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করল রাজ্যের গোয়েন্দা দফতর। সূত্রের খবর, খুনের ষড়যন্ত্রের মুকুল বাবু জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ। এদিন সকালে উত্তর কলকাতায় জনসম্পর্ক অভিযানে নেমেছিলেন মুকুল রায়। এ ব্যাপারে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে মুকুল বাবু বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো পুলিশ মন্ত্রী। তাঁর নির্দেশেই তো এই চার্জশিট হয়েছে। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলছি, বুকে হাত দিয়ে বলুন, মুকুল রায় কি এই খুন করতে পারেন?”

মুকুল রায়ের দাবি, তখনই বুঝেছিলেন পরিস্থিতি খারাপ হতে চলেছে। লোকসভা ভোটের আগে তাঁকে যেনতেন আটকানোর চেষ্টা চলছে। তাই আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেছিলেন তিনি। তা মঞ্জুর করেছিল আদালত। তবে আদালত জানিয়েছিল, তদন্ত প্রক্রিয়া সহযোগিতা করতে হবে মুকুল রায়কে এবং তিনি নদীয়া জেলায় যেতে পারবেন না। মুকুল বাবুর ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, তিনি তাই করেছিলেন। এই খুনের ঘটনায় পুলিশ তথা সিআইডি তাঁকে জেরা করার জন্য যতবার ডেকেছে, তিনি হাজির হয়ে গিয়েছিলেন। লোকসভা ভোটের সময়ে নদীয়া জেলাতেও যাননি।

মুকুল রায় ছাড়াও সত্যজিতের খুনের ঘটনায় রাণাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের বিরুদ্ধে আগেই সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত অভিজিৎ পণ্ডারি ও আরও একজনের সঙ্গে আগে পরে কথা বলেছিলেন জগন্নাথ।এদিন সিআইডি চার্জশিট পেশ করার পর রাজ্যে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। দলের মুখপাত্রদের বক্তব্য, বাংলায় পুলিশ রাজ চলছে। বিরোধীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো এখানে রুটিনে পরিণত হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের সময়কার একটি ঘটনাকে উল্লেখ করে বিজেপির বক্তব্য, সেই সময় ভোটের আগে এক তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় মানস ভুইঞাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, খুনের যড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন মানস। পরে দেখা যায়, সেই মানস ভুইঞাঁ শুধু তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তা নয়, তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ হয়েছেন। তাঁর স্ত্রী গীতা ভুইঞাঁ এখন সবংয়ে তৃণমূলের বিধায়ক।

উল্লেখ্য, সত্যজিতের বয়স ছিল খুবই কম। মাত্র ৩৭ বছর। যুব তৃণমূল করার সময়ে শুভেন্দু অধিকারীর অত্যন্ত কাছের নেতা ছিলেন তিনি। উনিশের ভোটের আগে ৯ ফেব্রুয়ারি তাঁকে গুলি করে খুন করা হয়। এতে অবশ্য শাসক দলের গোষ্ঠী কোন্দলকেই দায়ী করেছিল গেরুয়া শিবির। তবে তৃণমূলে তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল, এই খুনের পিছনে মুকুল রায় রয়েছেন। মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল।

RELATED ARTICLES

Most Popular