নিউজ ডেস্ক: তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এসে নির্বাচনের দিন শীতলকুচিতে হওয়া ঘটনা নিয়ে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ঘটনার শেষ দেখে ছাড়ার কথাও ঘোষণা করেছিলেন মমতা ব্যানার্জি। সেই মতো তিনি সেই কাজ শুরু করলেন। এই ঘটনায় বুধবারই সরানো হয়েছে কোচবিহারের এসপি দেবাশিষ ধরকে। সেই সাথে তাঁকে বহিষ্কারও করা হয়েছে।
এবারে সেই ঘটনার তদন্ত ভার তুলে দেওয়া হল রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডির হাতে। সেখানে দেবাশিষ বাবুকে ডেকে পাঠানো হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। এদিন শীতলকুচির ঘটনায় তদন্তের জন্য স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেটিং টিম বা সিট গঠন করা হয়েছে। সেই সিটই এবার শীতলকুচি কাণ্ডে পুর্নাঙ্গ তদন্ত করবে বলে জানা গেছে। দেবাশিষ বাবুকে তাঁদের সামনেই হাজিরা দিতে হবে। আর শুধু দেবাশিষ ধর নয়, একে একে ডেকে পাঠানো হবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান ও আধিকারিকদেরও। চার সদস্যের এই সিটের নেতৃত্বে রয়েছেন সিআইডির ডিআইজি কল্যাণ মুখোপাধ্যায়ের।
গত ১০ এপ্রিল রাজ্যে চতুর্থ দফার নির্বাচনে কোচবিহার জেলার শীতলকুচি বিধানসভা কেন্দ্রের জোরপাটকি এলাকায় ১২৬ নম্বর বুথে সিআরপিএফের গুলি চালনার ঘটনায় মৃত্যু হয় চার গ্রামবাসী তথা ভোটারের। কেন্দ্রীয় বাহিনীর তরফে গুলিচালনার স্বীকার করে নেওয়া হয়।তবে বলা হয়, আত্মরক্ষার্থেই গুলি চালাতে হয়েছিল কর্তব্যরত সিআরপিএফ জওয়ানদের। আচমকাই ৩০০-৪০০ জন উন্মত্ত গ্রামবাসী তাঁদের ঘিরে ধরেছিল, আর পরিস্থিতি সামলাতেই গুলি চালাতে হয়। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভোটের দিন একটি বাচ্চাকে মারধর করার ঘটনা নিয়েই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তার জেরেই এলোপাথাড়ি গুলি চালায় সিআরপিএফ।
তবে ঘটনার পর থেকেই একাধিক মহল থেকে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, শীতলকুচিতে ঠিক কী ঘটেছিল, কতটা ভয়ঙ্কর হয়েছিল পরিস্থিতি, যার জন্য গুলি চালাতে বাধ্য হন আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানরা!সিআইডি সুত্রে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট বুথের ভিতরে সমস্ত দলীয় এজেন্ট, পোলিং এজেন্ট ও প্রিসাইডিং অফিসারদের তালিকা ইতিমধ্যেই স্থানীয় থানার কাজে চেয়ে পাঠিয়েছে ভবানী ভবন । প্রয়োজন হলে তাদের সঙ্গে কথা বলা হবে বলে জানা গিয়েছে। এই স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন দলের মধ্যে রয়েছেন বেশ কয়েকজন দক্ষ ডিএসপি পদমর্যাদার অধিকারী।ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে নমুনা পরীক্ষা করার জন্য সিআইডির একটি বিশেষ দল শীতলকুচির উদ্দেশে রওনা হয়েছে বলে খবর ।
পাশাপাশি, জেলা পুলিশ সুপার এবং স্থানীয় থানার থেকে গোটা ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই একটি ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে। যদিও সেই ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ভিডিওটিতে যে ব্যক্তিদের দেখা গিয়েছে, তাদের ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । পাশাপাশি তাদের সঙ্গে সিআইডির বিশেষ প্রতিনিধি দল কথা বলবেন বলে জানা গিয়েছে।