Homeএখন খবরকরোনা পরিস্থিতি ও নতুন করে লকডাউনের মাঝে ইকো ট্যুরিজম চালু করায় উদ্বেগ...

করোনা পরিস্থিতি ও নতুন করে লকডাউনের মাঝে ইকো ট্যুরিজম চালু করায় উদ্বেগ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে

বিশেষ সংবাদদাতা: রাজ্য জুড়ে বেড়েই চলেছে করোনা আক্রান্তর সংখ্যা । এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে রাজ্য জুড়ে নতুন করে লকডাউনের ঘোষণা করা । যে সব এলাকায় করোনা আক্রান্তর সংখ্যা বাড়ছে তার মধ্যে আছে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিও। এরই মধ্যে এই এলাকায় ইকো ট্যুরিজম সেন্টারগুলি খুলে দেওয়া হচ্ছে । যার ফলে উদ্বেগ বাড়ছে ওই সব এলাকায় মানুষের । তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে ইকো ট্যুরিজম সেন্টার খুলে দেওয়ার জন্য যে সরকারি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তার ফলে ওই সব এলাকায় করোনা আক্রান্তর সংখ্যা বাড়তে পারে ।

পশ্চিমবঙ্গ বন উন্নয়ন নিগম ( West Bengal Forest Development Corporation) উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে তাদের আওতায় থাকা ইকো ট্যুরিজম সেন্টার খুলে দিলেও এখনই হোম স্টে খুলতে রাজি নয় ওই এলাকায় থাকা হোম স্টে গুলির পরিচালকরা। আগস্ট পর্যন্ত ওই সব হোম স্টে খোলা হবে না বলে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।

বেশ কিছু ইকো ট্যুরিজম সেন্টার খুলে দেওয়া হয়েছে । সেখানে অল্প সংখ্যক হলেও পর্যটক আসতে শুরু করেছেন। আর এতেই আশঙ্কা করছেন ওই সব এলাকায় মানুষ। তাদের ভয়, এখন সেখানে বাইরে থেকে লোকজন ও পর্যটকরা এলে করোনা আক্রান্তর সংখ্যা বাড়বে।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার অবধি দার্জিলিং জেলাতে ৬৪৭, কালিম্পং জেলায় ৫৬ , জলপাইগুড়ি জেলায় ৪০২ ও আলিপুরদুয়ার জেলায় ১৮৮জন করোনা আক্রান্তর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে ।

এই চার জেলায় ১৩টি ইকো ট্যুরিজম সেন্টার চালায় বন উন্নয়ন নিগম । তার মধ্যে এখন দার্জিলিং জেলাতে থাকা কেন্দ্রগুলির বুকিং শুরু না হলেও খুলে দেওয়া হয়েছে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায় থাকা কেন্দ্র। সেখানে অল্প সংখ্যক হলেও পর্যটক আসছেন বলে জানিয়েছেন আধিকারিকরা । একইভাবে চালু করা হয়েছে কালিম্পং জেলায় থাকা ঝালং, পারেন ও মংপু ট্যুরিজম সেন্টার। এই গুলি খুলে দেওয়ার কারণে এলাকার মানুষ অখুশি।
বন বিভাগের কয়েক জন মনে করছেন এর ফলে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সমস্যা দেখা দিতে পারে ।

এলাকার সাধারণ মানুষের মনোভাব বুঝতে পেরে পশ্চিমবঙ্গ বন উন্নয়ন নিগমের জেনারেল ম্যানেজার বি. সেওয়া বলেছেন, রাজ্যের সরকারের নির্দেশে আমরা এই সব ইকো ট্যুরিজম সেন্টারগুলি খুলে দিয়েছি। এখানের স্থানীয় অর্থনীতি পর্যটনের ওপর ভীষণভাবে নির্ভরশীল । গত তিন মাসে তা ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । সাধারণ মানুষের মনোভাব আমরা বুঝতে পারছি ও তাকে সম্মান জানাচ্ছি । এই সঙ্গে আমরা এটাও বলতে চাই যে সব পর্যটক আসছেন তাদের সুরক্ষার জন্য আমরা সব ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করছি ।

যদিও সামসিং কুমাই হোম স্টে ওনার্স অ্যাশোশিয়েশন এর সম্পাদক কৈবর্ত প্রধান বলেন, বন উন্নয়ন নিগমের ট্যুরিজম সেন্টারগুলিতে কোনও রকম ‘ স্ক্রিনিং পদ্ধতি ‘ নেই। আমরা বলছি ও তাদের বলেছি যে যে সব পর্যটক আসছেন তাদের স্ক্রিনিং করা বাধ্যতামূলক ও নিশ্চিত করতে হবে । বন বিভাগের মতোই পুলিশ ও গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কাছেও একই দাবি রেখেছি। কিন্তু তাতে কেউ কান দিচ্ছে না ।

এই এলাকায় থাকা লেপচাজগৎ, লাভা, লোলেগাঁও, তাকদা, ঝালং, পারেন, মংপং সহ বিভিন্ন জায়গার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যর আকর্ষণে সেখানে সারা বছর ভিড় জমান পর্যটকরা। তাদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে এবং সুবিধার জন্য এই সব এলাকায় চালু করা হয়েছে হোম স্টে । তার থেকেও একটা আয় করতে পারেন এলাকার মানুষ । কিন্তু এখন ওই সব হোম স্টে গুলি বন্ধ হয়ে আছে। তারা জানিয়েছে যে তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে আগস্ট মাস পর্যন্ত বন্ধ থাকবে এই সব হোম স্টে । তারপর পরিস্থিতি বিবেচনা করে খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ।

এই সব এলাকার লোকজন দাবি করেন তাকদা, লাভা, লোলেগাঁও, সামসিং বন্ধ থাকলেও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কোনও রকম কথা আলোচনা না করে যে সব ইকো ট্যুরিজম সেন্টারগুলি খুলে দেওয়া হয়েছে তাতে কিছু সমস্যা হতে পারে ।

এই সঙ্গে পর্যটন ও পরিবহন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্তরা বলেন, এখন শিলিগুড়ি থেকে পর্যটক নিয়ে দিনে মাত্র একটি গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে । তার ফলে পর্যটনকে কেন্দ্র করে এলাকার মানুষের কোনও আর্থিক লাভ হবে না । বরং যে হারে করোনা আক্রান্তর সংখ্যা বাড়ছে তাতে পর্যটক আসলেই তাদের থেকে ওই সব পর্যটন কেন্দ্রগুলি তে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা থাকছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular