Homeসাহিত্যকরোনা ও একটা কাক

করোনা ও একটা কাক

করোনা ও একটা কাক
শুভময় দাস
(স্নেহের আসিফ ইকবাল কে )

কেউ বলছে করোনা অভিশাপ আবার কেউ কেউ বলছে আশীর্বাদ পরিবেশের ( জানিনা পরিবেশ জিনিসটা কি – দাঁতে কাটে না খোঁপায় গোঁজে। )

সব্বাই চিন্তিত করোনা র কেদ্দানি দেখতে দেখতে। ভয়ে সিঁটিয়ে এক্কেবারে ডটকলমের রিফিল। ঘেরাটোপ আগুপিছু। পেটে ভরে নিয়েছে অনেকটা কালি -(বেআইনি বলা বে আইনি। ) একটু করে মুখ বাড়ায়।একটু একটু করে খরচ করে আজকাল।বড্ড হিসেবি।অথচ গতকাল অব্দি দেওয়াল চুনকাম করার পোঁচড়া ছিলো হাতে – দিব্যি ফেলে ছড়িয়ে উড়িয়েছে।রাতারাতি জিরো তুলি কিংবা মাইক্রোটিপ ! অনেকদিন চলবে। অপচয় কম।লক ডাউন বলে কথা।কবে এ অকালের অবসান কে জানে।সাত দিন বলে তো একুশ দিন ! একুশ হপ্তা ও হতে পারে বলে কেউ কেউ রটাচ্ছে !

এর ই মধ্যে নাকি দূর্বা ঘাসেরা মাথাতুলে দাঁড়িয়েছে আর সব্বাইকে বলেছে “তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা !” – শুশুকরা সামারসালটিং দেখাতে শুরু করেছে আর বলছে “সুন্দর স্বর্ণালী সন্ধ্যা ” ! বকুলেরা এক ঝুপ্পুস সবুজ মাথা নিয়ে দাঁড়িয়ে হ্যান্ডশেক না করে (আইসোলেশানে আছে – ভুলে গেলে চলবে! ) দু হাত জড়ো করে “নমস্তে” বলা শুরু করে দিয়েছে। প্রজাপতি খুঁজে পেয়েছে বুনো ফুল আর অভিযোগই করছেনা “ফুলে গন্ধ নেই ।” পৃথিবী ক্যালপল খেয়ে নিয়েছে ওর তাপ কমতির দিকে আর বলছে না “আমি উষ্ণ তার জন্য। ”

আন্টার্টিকের বরফের ভালোবাসা আবারো বেড়ে মাইনাসে নেমেছে জমতে শুরু করেছে – জল এমন স্বচ্ছ হয়ে গেছে যে তার তলদেশের অন্তর্বাস পর্যন্ত্য দেখা যাচ্ছে – কেউ একশো দিনের কাজে আকাশের কার্বনডাইঅক্সাইড কে কোদাল দিয়ে এমন চেঁছে চেঁছে পাতলা করে দিয়েছে এই দশদিনে যে কার বোন কে আর খুঁজে পাচ্ছে না আজ কেউ ! ! বাপরে ভেবে অস্থির হয়ে উঠছি আরোওওওও পনেরো দিন লকডাউন চললে কি কিইই না হবে ! এই দশ দিনে যদি এতো তাহলে – – – – !
করোনা মাস খানিক থাকলে নর্দমার জল কাচস্বচ্ছ হয়ে যাবে – গঙ্গা জল ডিস্টিল ওয়াটার হবে – বাতাস এতো হালকা হবে যে ওকে ধরতে লাফিয়ে লাফিয়ে চলতে হবে রাস্তায় – নয়তো হাতে আঁকশি নিয়ে হাঁটতে হবে ওকে পেতে ! মাটি কুমারী হয়ে যাবে ( নাকি নষ্ট হয়ে গেছিলো – কে নষ্ট করলো কে জানে! ) – দেওয়াল শেওলা- পিচ্ছিল হয়ে বিন্দাসহয়ে হবে , চারদিক এয়সা সবুজ হবে যেন গায়ের প্রতিটি চুল সালোকসংশ্লেষ করতে শুরু করলো বলে ! পাখিরা প্রেম পিরিতের ইস্কুলে যেতে শুরু করে দেবে, হাতি হঠাৎ হাতাহাতি ভুলে ডেটিং শুরু করবে, গিরগিটি রং পাল্টাতে ভুলে যাবে কারন এখন নাকি না আছে ভয় আর না আছে পোকামাকড়ের অভাব – ডেঙ্গি ভাইরাসের বড্ড কষ্ট কারন এডিস তো জন্মাতেই ভুলে গেছে (নোংরা জমা জল না পেলে !) – বাঘ তো দুপুর রোদে পেট ফুলিয়ে ঠ্যং তুলে দিবা নিদ্রা যাচ্ছে কারন বনে হঠাৎ হরিণ বেড়ে গিয়ে বাঘের নাকে সুড়সুড়ি দিচ্ছে আর বলছে “এসেছি এসেছি বঁধু হে ” বা “দেখতো চিনতে পারো কি না “!

বলি কি – ধাপ্পাবাজির একটা সীমা আছে ! আদিখ্যেতার একটা রেখা আছে। এতো সহজ? এতো দিনের এতো এতো পাপ শুধু একদিনের একটা শান্তি স্বস্তায়ন আর গরুর লেজ ধরলেই বইতরণী যদি হতো পার করা যেতো তাহলে আর চিন্তা কেন? আসুন আরও আরও খুন খারাপি পাপের বোঝা বাড়াই। কারন প্রায়শ্চিত্ত তো খুব সোজা। না পারলে মূল্য ধরে দিলেই হলো ! দীর্ঘ দিনের তিলে তিলে সুস্থিত তিলোত্তমা কে চুরি দিয়ে ফালা ফালা করে রোজ যে রক্ত ক্ষরণ করিয়েছি যে এনিমিয়া করিয়েছি তা দুদিনেই মেরামত ! এখনো সর্বাঙ্গে ঘা। ওটা শুকোতেই কয়েক শতাব্দী লাগবে ! তার পর তো দাগ মিলোতে আরও কয়েক সহস্রাব্দ ! বাহা বাহা ! বেশ ভালো রে ভালো !তাহলে আর সুস্থিত উন্নয়নের জন্যে আর কাউকে দরকার নাই মাঝে মধ্যে বিশ কি পঞ্চাশ বছরে একবার করোনা বা ওরম কাউকে ডেকে আনলেই হলো l তা বেশ তা বেশ !





আসলে কোনোদিনই চোখ মেলে দেখোনি প্রকৃতির কান্না। আজ গৃহবন্দী হয়ে হঠাৎ তুমি প্রকৃতিপ্রেমী হয়ে বসলে (স্বঘোষিত )! আজ হঠাৎ মনে হলো প্রজাপতির সুখ ফিরে এসেছে ! ওর নাচন দেখে তোমার মনে হলো ” কি সুখে ওই ডানা দুটি মেলেছো” ! ওহে ওটা সুখের পাখনা মেলা নয় মৃত্যুর আগে পা গুলোকে টান টান করা !তুমি কে হে সিধু জ্যেঠু আজ ওই প্রজাপতির ঠ্যং নাচানো কে তুমি আনন্দ নৃত্য ঠাউরালে। তা ভালো ! মন্দ নয় l চালিয়ে যাও।

আজ ঘরবন্দি হওয়ায় জানালার রেলিং এর ফাঁকে চোখ রেখে সেলিম আলী হয়ে উঠলে ! পাখিদের ওড়া দেখে কাব্যি ছাড়লে “উড়িতে ছিলো সে পাখির মতো সুখে” ! ওহে পাতাখোর পক্ষীপ্রেমী – তাকিয়ে দেখেছো কোনো পাখি কোনোদিন? কাটিয়েছো কোনো সন্ধ্যা বিকেল কিছু কাল কিছুটা সময় – বন্ধু ভেবেছো ওদের – ওরাও কি ভেবেছে তেমনই কিছু ?

ওদের দেখেছো !সত্যি ! কতক্ষনে দেখা সম্পূর্ণ হয় বন্ধু !এক সেকেন্ড- দশ সেকেন্ড -এক মিনিট -দশ মিনিট- দশ ঘন্টা -দশ দিন- দশ হপ্তা !কতটা দিন দেখেছো একটানা দাঁড়িয়ে ওদের ঘরকন্না? শুনেছো খুনসুটি ওদের? ছুঁয়েছো বাসার ভালোবাসা ঘ্রান !

দেখেছো নিত্য অভাব? দেখেছো ওদের সংসারের নিত্য নেই সুর !খাদ্য নেই বাসা নেই নিরাপত্তা নেই। পেটে ডিম আছে তো প্রেমিক নেই, প্রেমিক আছো তো ভালো বাসা নেই, বাসা আছে তো ভালোবাসা নেই, ভালোবাসা আছে তো সন্তানের জন্ম নেই, জন্ম আছে তো গলায় স্বর নেই, বসন্ত আছে তো সুর নেই। পেটে স্বপ্নের পরিবর্তে ভারী ধাতু আর কীটনাশক পুরে দিলাম ওদের।

চান দেখেছো কারুর ! না অন্য ভাবে নেবে না তুমি ! 8 হ্যাঁ কোনো পাখির? কতক্ষন দাঁড়িয়ে ওদের চান দেখা তোমার ? কতক্ষন ওদের মিথুন সংরাগ আর কতটা সময় ঘাড় কাৎকরে আদর গ্রূমিং চোখে মেখেছো আজকের পাখিপ্রেমী ! ওদের অভাবের সংসারের হাঁড়ির হাল খোঁজ নাও রোজ বুঝি !

ওদের ডাক শুনেছো কি? কান পেতে কিছুক্ষণ ! ওহো সময় কোথায়? কুহু বকম ক্যা কুররররর হুপ কিচ টুই ই পিক পিক কুট কিচির সব ডাক ই কি আনন্দের বুঝি। ওহে ওই ডাকে ই ওরা আনন্দ প্রেম হর্ষ বিষাদ ঘৃণা প্রতিশোধ হতাশা আবেগ যন্ত্রনা লোভ সেবা বাৎসল্য সবই প্রকাশ করে। তোমার কানে একই মনে হয়। বদ্ধ কালা তুমি। সব ডাক ই এক মনে হয় ! ওহে পাখির ডাক শুধু ই আনন্দের নয়। কলতান – যেটা তুমি বলো ওটা তান তবে সব তান সুখী নয় – বেহাগ পিলু অশাবরী পিলু খাম্বাচ আছে – দরবারী কানাড়া ও আছে। এত বোদ্ধা কেন ভাবো !

তুমি কেন ভাবো পাখি মনের সুখে ওড়ে ? কখনো ভেবেছো পেটে খিদে – এখন খাবারের জন্যে ছুটছে ও – তোমার ই মতন – !অভুক্ত সন্তানের জ্বর বুঝি – কিংবা কোনো শিকারী পাখি পিছু ও নিয়েছে আজ – কিংবা সাপেতে খেয়ে গেছে সব কটা সাদা সাদা ডিম কাল রাতে ! তাতে ও ওড়ে ও । সুখে ওড়ে দুঃখে ওড়ে কান্নায় ওড়ে আক্রমণে ওড়ে প্রতিরক্ষায় ওড়ে রেগে ওড়ে ঘেন্নায় ওড়ে ভালোবাসায় ওড়ে হতাশায় ওড়ে । বিভিন্ন ওড়ার বিভিন্ন সুর ছন্দ গতি তাল প্যাটার্ন মোটিফ ! তোমার কাছে সকলি এক – আনন্দের !
সত্যিই কি তাই ভাবো?

তুমি নিদান দিলে তোমাদের চারদিন গৃহবন্দিতে সব ঠিকঠাক আগের মতন?

এতো সব পাপ অত্যাচার সব কিছু বুঝি মুছে ফেলা যায়? এতো সহজে? বড্ড জেদি সে পাপ রং ! পাপ বুঝি পেন্সিলে আঁকিবুকি কাটাকুটি খেলা । প্রায়শ্চিত্ত – ক্ষমা সেও প্রশ্নাতীত নয় । দাগ থেকে যাবে ইতিহাসের পাতায় পাতায়।

মানি । পৃথিবীর প্রকৃতির বিশাল হৃদয় । ক্ষমার শরীর । আমাদের বাসার চারদিকে যে সব বোবা বন্ধুরা আকাশের দিকে উদ্বাহু হয়ে আছে তাদের বোবা মুখের ভাষা শুনেছো? ওরা যে বিশ্ব বাউলের একতারা -ভেবে দেখেছো কি !
ক্ষমার শরীর ওদের । প্রকৃতির শরীরের মধ্যেই আছে নিজস্ব অনাক্রম্যতার সূত্র। কিন্তু তার ও তো সীমা আছে । সেটাকে অতিক্রম করলে আসে বিনাশের পালা !

এখন প্রহর গোনার পালা ! যতটা বিষ মিশিয়েছো জলে যতটা মাইক্রোপ্লাস্টিক মিশেছে কোষের কোনায় যতটা তাপ মিশেছে বরফের পাঁজরে ফুসফুসে সেকি দুঃসময় রচনা না করে পারে? একটা দুটো রাত্রির বিলাসী গৃহবন্দী আদিখ্যেতা সব ঠিক করে দেবে বুঝি? না। শোনো – রাত্রি ঘনিয়ে আসবে আর বুড়ো পেঁচা বলবে “ধরা যাক দু একটা ইঁদুর এবার! ”

তাও সব্বাই বলছে পরিবেশ নাকি বেশ নধর হয়েছে হপ্তা খানিক ! ” জয় করোনা র জয়। ”
কেউ বলছে “করোনা মাইকী – জয়। ”
কেউ তো এখন বলছে “আসছে বছর – আবার হবে। ”




মানুষের মতো কাকেরা ও আজকাল শহরমুখী। গ্রামেতে ওদের মন নেই মান নেই প্রাণ নেই। গ্রাম ছেড়েছে কবেই। ওরাও আরবান আজকাল। গাঁইয়া নয় তো মোটেই। কেন নেই তার খোঁজ নেই। কেন খোঁজ নেই -কারন- রুপিয়া নেই। তাহলে রুপিয়া কোথায়? কেন – ডিএনএ আরএনএ গবেষণায়। প্রকৃতি পর্যবেক্ষণে ঠিক গবেষক গবেষক মানায় না। ওসবে কি লাভ? তাও বাঘ বুগো হলে কথা ছিলো। সব ছেড়ে কাক! ফুহ!

তা কেমন আছে কাক এই করোনার কারণে!

আমি প্রশ্ন করলাম কাককে :

-কেমন আছো কাক?
-বলুন ‘কেমন’ আছি নয়। “ম” টাকে উড়িয়ে দিন। স্যার বলুন ‘কেন ‘ আছি!
-কেন কি অসুবিধে? কোনো কষ্ট! সব্বাই তো বলছে পরিবেশের এক্কেবারে সোনায় সোহাগা! পরিবেশের আচ্ছে দিন এসে গেছে! এক্কেয়ারে হদ্দমুদ্দ! পোকিটি এক্কেয়ারে আগের মতো। নিম্মল। ঝেক্কাস। তোমার কোনো কষ্টের কারন তো নাই।

-ভারী কষ্ট স্যার !

-কেন ? পলুশন ফিরি করে দিয়েছি। সাধারণ পাব্লিক থেকে পরিবেশবিদ সক্কলে বললে যে আজ। সব্বাই রবিঠাকুর আউড়ে বললে ” বনে থাকে বাঘ- গাছে থাকে পাখি -পাখি ফল খায়- ডানা মেলে ওড়ে !”

-তা স্যার একটা গাছ পেয়েছিলাম। বাসা বাঁধলাম। অনেক ভেবে চিন্তে ওই আপিস পাড়ায়। ঝুট জামেলা নেই। খাবার দোকানদানি আছে। কিছু একটা গায়ে গতরে জুটিয়ে নেবো। ছেলেপুলে কে বাড়িয়ে তুলতে পারবো। ও মা দিন কুড়ি বাদে কে বা করা আধখানা ন্যাড়া করে ডাল কেটে নিলো! বাসাটাও গেলো। হাল ছাড়লাম না (সুমন দা বলেছে বলে নয় কিন্তু কারন কণ্ঠ জোরে ছাড়বার অভ্যেস কবেই হারিয়েছি আমি !)।

আবার বাসা বুনলাম। একটা আধখেঁচতা প্রেম ও হয়েছিলো। একটা বেকার বর ও জুটেছিলো। পেট হলো একদিন। বেশ ভারী ভারী শরীর ! সাদা সাদা তিন টি ডিম। তিনটেই চুন্নু চুন্নি হলো। চোখ ফুটলো। সারাদিন ঘুরে ঘুরে ঘুগনীর অসিদ্ধ আলু কচুরির কোনা- রুটির উচ্ছিস্ট- ফেলে দেওয়া পচা ফল একটুকরো বাসী পাউরুটি এইসব আমার বেকার ফালতু কর্তাটা চুরি চোট্টা করে তুলে দিত বাচ্চাদের লাল লাল ঠোঁটের ভিতর।
সবই ঠিক ই চলছিলো। হঠাৎ কি হয়ে গেলো স্যার আপনাদের! লোকেরা সব গৃহবন্দী হলো। শুনছি স্বেচ্চায়। আচ্ছা বলুন স্যার স্বেচ্চায় কেউ বন্দি হয়। সে যাই হোক আপনাদের কথা বাদ দিন।
আপিস বন্ধ হলো। কাছারি বন্ধ। ফুড মার্ট বন্ধ। বাবুদের আপিস পাড়ায় খাবার জুটতো বলে কাছে পিঠে বাসা দিলাম স্যার। ফুচকা আলুকাবলি পাউরুটি টোস্ট সবই খাবার দোকান তো বন্ধ স্যার। আপনারা ভালোবেসে না দিলেও আপনাদের ঘেন্নায় যে উচ্ছিস্ট খাবারে আমাদের ছানাদের পেট চলতো স্যার! রাস্তা শুনশান।

লোকে বলছে পরিবেশ ভালো সুস্থ হয়েছে স্যার! স্যার নিস্তব্ধতা দিয়ে কি পেট ভরে স্যার। শুনশান রাস্তা কি পেট ভরাবে স্যার!চারদিন কত্ত খুঁজেছি ই একটু রুটির টুকরো একটু হাড় দুএকদানা চানার জন্যে। কত্ত ঘুরেছি। পাইনি! রাস্তা শুনশান।




একটা পাগল খাচ্ছিল কিছু।ওর কাছে গেলে কিছু পাবো ভেবে গেলাম – অমনি একটা পুলিশ কি কোত্কা দিলে পাগলটাকে !
বললে “যা শ্যালা- লকডাউন চলছে জানিসনা। যা ভাগ। ”

তাও একটা টুকরো নিয়ে বাসায় এসে দেখি দুটো ছানা খিদেয় মরেছে। পা উল্টে পড়ে। হয়তো কেঁদে ছিলো খানিক। অথবা কাঁদেও নি। গলার জোর তো কমে এসেছিলো কবেই। অথবা বুঝেছিলো বাবা মায়ের অপদার্থতা।
আনমনে বসেছিলাম অন্য ডালে। আরও একটা বাচ্চা তখনো খেলছিলো আপনমনে। হঠাৎ ক্যা ক্যা। একটা চিল চোঁ করে নিয়ে গেলো বাকিটাকে।
প্রথমে ভেবেছিলাম লড়বো। পরে ভাবলাম না খাচ্ছে খাক! ওর ও তো ছানাটা অভুক্ত আছে । যে কেউ বাঁচবে । মরবেও তো কেউ কেউ।

পাড়ার অসীম মুটিয়ার ও ঠিক সেই অবস্থা। ঠিক কাকটার মতো। লকডাউন চলছে।

(ছাত্র আসিফ ইকবাল আজ রাতে বল্লে – নাগরিক নিম্নবিত্ত দিন আনি দিন খাই দের এই লকডাউনের অবস্থা নিয়ে কি মত আপনার – জানতে চেয়েছিলো। তাকে এই লেখা উৎসর্গ করলাম। )

RELATED ARTICLES

Most Popular