Homeএখন খবরশুভেন্দুর জনসভার ৪৮ ঘন্টা আগেই দাঁতনে বিস্ফোরন! উড়ে গেল তৃনমূল কর্মীর ঘর,...

শুভেন্দুর জনসভার ৪৮ ঘন্টা আগেই দাঁতনে বিস্ফোরন! উড়ে গেল তৃনমূল কর্মীর ঘর, ঘটনায় পরস্পর বিরোধী দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের

নিজস্ব সংবাদদাতা: আগামী বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগরে বড়সড় জমায়েতের ডাক দিয়েছেন তৃণমূলের বিদ্রোহী নেতা শুভেন্দু অধিকারী ঠিক তার ৪৮ ঘন্টা আগেই পূর্ব মেদিনীপুর ঘেঁষা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতন থানায় ভয়াবহ বিস্ফোরনে উড়ে গেল এক তৃনমুল কর্মীর বাড়ি, ঘটনায় আহত হয়েছেন ৫জন তৃনমূল কর্মী। সোমবার সন্ধ্যার মুখে এই বিস্ফোরনে আহত ৫ তৃণমূল কর্মী যার মধ্যে ১জনকে আহত অবস্থাতেই মার খেতে দেখা গেল স্থানীয় গ্রামবাসীদের হাতে।

যদিও ঘটনার পেছনে বিজেপি দুষ্কৃতিদের হাত রয়েছে বলে দাবি তৃনমূল নেতৃত্বের অন্যদিকে বিজেপির দাবি এলাকাকে সন্ত্রস্ত করতে গিয়ে বোমা বাঁধছিল ওই দুস্কৃতিরা যা বিস্ফোরন হয়ে উড়ে গেছে বাড়িটি। খবর পেয়ে ক্ষুব্ধ জনতাই মারধর করেছে পালের গোদাকে। অন্যদিকে তৃণমূলের কড়া হুঁশিয়ারি, ঘটনার জন্য দায়ী বিজেপি কর্মীদের ছেড়ে কথা বলবেনা দল, এর জবাব দেওয়া হবে। অন্যদিকে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের দাবি আহতরা দাগি দুষ্কৃতি, যাঁদের জন্য দলের ইমেজ নষ্ঠ হচ্ছে।

ঘটনা সোমবারের পড়ন্ত বেলায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতন থানার তিন নম্বর তুরকা অঞ্চলের রসুলপুর গ্রামে। হঠাৎই বিস্ফোরনের ওই ঘটনায় গুরুতর আহত হয় পাঁচ তৃণমূল কর্মী। সূত্রের খবর তৃণমূল কর্মী সেক ইকবাল আলীর বাড়িতে ওই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় জখম পাঁচ তৃণমূল কর্মীকে উদ্ধার করে দাঁতন ২ ব্লকের খন্ডরুই গ্রামীন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যে দুই কর্মী গুরুতর আহত হওয়ায় তাঁদের মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এদিকে বিস্ফোরণের আওয়াজ পেয়ে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা ৫ আহতর মধ্যে দেখতে পান টিঙ্কু মল্লিক ওরফে রিয়াজেদ নামে এক তৃনমূল কর্মীও রয়েছে। এরপরই জনতার ক্রোধ আছড়ে পড়ে টিঙ্কুর ওপর। লাথি, ঘুঁষিতে ব্যাপক মারধর করা হয় তাকে। পরে অবশ্য কয়েকজন গ্রামবাসী তাঁদের উদ্ধার করে ট্রলি ভ্যানে শুইয়ে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

এই ঘটনার পেছনে বিজেপির চক্রান্ত রয়েছে বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সভাপতি অজিত মাইতির। তিনি বলেছেন, “আমাদের কর্মীরা ওই ঘরে বসে দলীয় কর্মসূচি নিয়ে আলাপ আলোচনা করছিলেন তখনই বিজেপির লোকেরা ওদের ওপর বোমা মারে। ঘটনায় আমাদের কর্মীরা আহত হয়েছেন। এর উপযুক্ত জবাব পাবে বিজেপি। ইট মারলে পাটকেল খেতে হয়।”
যদিও দাঁতন ২ ব্লকের তৃনমূল সভাপতি শৈবাল গিরি সম্পুর্ন উল্টো কথা বলেছেন। তিনি বলেন, “আহতরা দাগি দুষ্কৃতি। দলের ঝান্ডা ধরে এরা দলের বদনাম করছে। এরা শুধু বোমা বাঁধা নয়, অনেক রকম অপকর্ম করে বেড়ায়। এদের জন্যই লোকসভা নির্বাচনে দল খারাপ ফল করেছে। আমি বহুবার পুলিশকে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি কিন্তু এরা বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াত।”

অন্যদিকে বিজেপির দাঁতন ২ সভাপতি মানস ভূঁইয়ার দাবি, “শুনেছি এই এলাকায় তৃণমূলের একটি মিছিল সংঘটিত হওয়ার কথা। সেই মিছিল থেকে এলাকার মানুষকে ভয়ভীতি দেখানোর জন্য এবং এলাকায় গন্ডগোল সৃষ্টি করার লক্ষ্যে তৃণমূল বোমা মজুদ করে রেখেছিল। সেই বোমা বিস্ফোরণের এই ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় বিজেপি কোনোভাবেই জড়িত নয়।”
মিছিল যে একটা হওয়ার কথা এটা স্বীকার করেছেন তৃণমূলের স্থানীয় ব্লক সভাপতি। সভাপতি গিরির দাবি, “এলাকায় একটা মিছিল হওয়ার কথা রয়েছে আমাদের হয়ত সেই মিছিলে ভয়ভীতি দেখানোর জন্য বোমা বাঁধছিল এরা।”

কিন্তু তৃণমূলের মিছিলে তৃণমূলের লোকেরাই কেন ভয় দেখাবে? শৈবাল বাবু বলেছেন হতে পারে এরা দাদার অনুগামী তাই তৃণমূলের মিছিলকে ভয় দেখাবে। দাদার অনুগামী বলতে এখানে শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীদের বোঝানো হচ্ছে। এই এলাকায় দাদার অনুগামীদের প্রভাব রয়েছে। সেই দাদার অনুগামীদের পাল্টা দাবি, যেদিন পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরে শুভেন্দু অধিকারী মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে সেদিনই কেন সীমান্ত ঘেঁষা দাঁতনে তৃনমূল মিছিলের ডাক দিল? এক শুভেন্দু অনুগামীর দাবি, “আমাদের মনে হচ্ছে দাদার ওই সমাবেশের লোক আটকানোর জন্যই ওই মিছিল সংগঠিত করা হচ্ছে। আর মানুষ যাতে না দাদার সমাবেশে যাওয়ার চেষ্টা না করে তাই বোমা বাজির উদ্দেশ্যেই বোমা মজুত করা হচ্ছিল।” অজিত মাইতি অবশ্য বলেছেন, ‘মিছিল মিটিং আমাদের নিজস্ব কর্মসূচি যা ধারাবাহিক ভাবে চলছে। এরসঙ্গে অন্যের সমাবেশের কী সম্পর্ক?”

RELATED ARTICLES

Most Popular