Homeএখন খবরভোট পায় শাসক, বাঁধ পায়না মানুষ! ৭ বছরে ১১বার বানভাসি দাসপুরের রাজনগর-নাড়াজোল

ভোট পায় শাসক, বাঁধ পায়না মানুষ! ৭ বছরে ১১বার বানভাসি দাসপুরের রাজনগর-নাড়াজোল

নিজস্ব সংবাদদাতা: ২০১৩ সালে বাঁধ ভেঙেছিল দাসপুর ১ ব্লকের রাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের রামদেবপুরে। গভীর কাঁসাইয়ের বাঁধ ভেঙে ভেসে গেছিল রাজনগরের রামদেবপুর, রাজনগর, হোসেনপুর, সামাট আর নাড়াজোলের বাছড়া কুন্ডু, গোবরা কুন্ডু, কল্যাণ পুর, নাড়াজোল উত্তর, কিসমত নাড়াজোল, চন্ডীপুর, হরিরাজপুর, দুবরাজপুর, রাই কুন্ডু, দানিকোলা,বড়া মারা, কাঁটা দরজা, বোরোলি, সুপা, পুড়শুড়ি, হাজাকুন্ডু আদি ৪০টি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা। জলমগ্ন চারা বীজ, ধান, পাট ও সবজি ডুবে যাওয়ার পাশাপাশি ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়া, সম্পত্তি হানি হয়ে সর্বস্ব হারানোর সেই যন্ত্রনার শুরু।

ছুটে এসেছিলেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জী। হার্মাদ সিপিএম আর ৩৪বছরের বাম শাসনের আদ্য শ্রাদ্ধ করে সেই যে কলকাতা ফিরেছিলেন আর এমুখো হননি। তবে দিয়ে গিয়েছিলেন লম্বা প্রতিশ্রুতি যার মধ্যে সোনার বাংলা গড়ার প্যাকেজে ঢুকে গিয়েছিল রাজনগর। মানুষ ভেবেছিলেন যা হোক একটা হল কিন্তু আদতে হয়নি কিছুই। তাই গত ৬ বছরে মতই এই ৭ম বার বন্যায় ভাসছে সেই ৪০ গ্রামের হাজার পঞ্চাশেক মানুষ। আর এই নিয়ে ৭বছরের ১১ বার কারন এরমধ্যে একই মরশুমে ৫বার বন্যা দেখেছিল ঘাটাল মহকুমা।

প্রতিবারই ভোট এলে শাসকদল ভাঙা বাঁধের মেরামতির টেন্ডারের খুড়োর কল ঝুলিয়ে দেয়। ফলে ঝুলিতে ভোট চলে আসে ঠিকই। বুথ থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি সবটাই হৈহৈ করে জিতে যায় শাসকদল ফলে ভাঙা বাঁধ ভাঙাই পড়ে থাকে। এর আগের পঞ্চায়েতে এখান থেকেই জিতে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হয়েছিলেন গীতা গোস্বামী। ৫বছর পঞ্চায়েত সমিতি চালিয়েছেন।

গীতা গোস্বামী জানিয়েছেন, “আমি ব্যক্তিগত ভাবে এবং পঞ্চায়েত সমিতি গত ভাবে অনেকবার ওই বাঁধ সরানোর জন্য জেলা পরিষদকে আবেদন করেছি। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে অবধি জানিয়েছি। চেষ্টার ত্রুটি রাখিনি তবে এবার শুনেছি টেন্ডার হয়ে গেছে বর্ষার পরই কাজ শুরু হয়ে যাবে।” সেই টেন্ডার হওয়ার কথাই শুনিয়েছেন বর্তমান সভাপতি সুনীল ভৌমিকও। বলেছেন, আর বেশিদিন ভুগতে হবেনা মানুষকে। টেন্ডার হয়ে গেছে শীঘ্রই কাজ শুরু হয়ে যাবে।”

স্থানীয় কৃষক নেতা তথা পশ্চিম মেদিনীপুর সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য গুণধর বোস জানিয়েছেন, “প্রতি বছর মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকার ফসল লোকসান করেন। বছরের পর জল যন্ত্রনায় মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত তবে এবারের দুদর্শা সীমাহীন। করোনা মহামারি মানুষের উপার্জন কেড়ে নিয়েছে। মাসের পর মাস ঘরে বসে আছেন সাধারন মানুষ। হাতে পয়সা নেই। এরকম অবস্থায় ফের এই বন্যা পরিস্থিতি। মানুষ যাবে কোথায়?”

স্থানীয় রাজনগর গ্রামের বাসিন্দা তপন ঘোষ কটাক্ষ করে বলেছেন,”বছর বছর থালা সাজিয়ে ভোট দিয়েছি আমরা। বিনিময়ে বন্যা পাচ্ছি। আবার ভোট দেব আবারও বন্যা পাব। অসুবিধা কোথায়? আগে বৃষ্টিতে গ্রামে জল জমলেই যারা বন্যা বন্যা করে পাড়া মাথায় তুলত এখন তারাই আজ সাত বছর ধরে বন্যা করিয়ে যাচ্ছে। আজ বুঝতে পারছি কাকে দিয়েছি রাজার পাট। ২০২১শে জবাব পাবে এরা।”

RELATED ARTICLES

Most Popular