Homeএখন খবররাজ্যের নির্দেশ অমান্য করে স্কুল খোলায় শোকজ প্রধান শিক্ষক, শিক্ষা দফতরের কাছে...

রাজ্যের নির্দেশ অমান্য করে স্কুল খোলায় শোকজ প্রধান শিক্ষক, শিক্ষা দফতরের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন প্রধান শিক্ষক

ওয়েব ডেস্ক : করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর আতঙ্কে আপাতত অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ স্কুল-কলেজ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এরই মাঝে সরকারি নির্দেশিকাকে তোয়াক্কা না করেই স্কুল খুলে রীতিমতো ক্লাস নিতে শুরু করেছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের হাট সড়বেড়িয়ার বিধানচন্দ্র রায় হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই, রাজ্য শিক্ষা দফতরের তরফে শোকজ করা হয় ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে। এরপরই ঘটনা ধামা চাপা দিতে সটান ভুল স্বীকার করে নিলেন দাসপুরের হাট সড়বেড়িয়া বি সি রায় হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বৃন্দাবন ঘটক। এমনকি শিক্ষা দফতরের আধিকারিকের কাছেও অপরাধের জন্য ক্ষমা চাইলেন প্রধান শিক্ষক। বৃহস্পতিবার লিখিতভাবে শোকজের জবাবে স্কুল শিক্ষা দফতরের কাছে নিজের দোষ স্বীকার করে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক জানান, “এ ভুল আর হবে না। আজ থেকে স্কুলে ক্লাস নেওয়া বন্ধ।”

জানা গিয়েছে, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে যেখানে বন্ধ রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সেখানে বুধবার আচমকা হাট সড়বেড়িয়ার বিধানচন্দ্র রায় হাই স্কুল খোলা হয়েছিল। এমনকি বেশ কয়েকজন পড়ুয়াও উপস্থিত হয়েছিল স্কুলে। পরে জানা যায়, দশম শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হয়েছে। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেন রাজ্য শিক্ষা দফতর৷ একাধিক স্কুল বন্ধ থাকা সত্ত্বেও কেন সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে অমান্য৷ করে স্কুল কর্তৃপক্ষ ক্লাস চালু করল, তা জানতে চেয়ে বুধবারই প্রধান শিক্ষককে শোকজ করেছিল স্কুল শিক্ষা দফতর। পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই শোকজের জবাব দিতে নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। সেইমতো, বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বৃন্দাবন ঘটক পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক চাপেশ্বর সর্দারের কাছেই লিখিতভাবে জবাব দেন।

এবিষয়ে চাপেশ্বরবাবু জানিয়েছেন, “লকডাউনের মাঝে বুধবার দাসপুরের হাট সড়বেড়িয়া বি সি রায় হাই স্কুলে দশম শ্রেণির ক্লাস শুরু হয় বলে জানতে পেরে ওই প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছিল। ঘাটালের অতিরিক্ত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছিল। সেই রিপোর্ট এসে পৌঁছেছে। উনি নিজের ভুল স্বীকার করে নিয়েছেন। ক্লাস বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

সূত্রের খবর, করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকার কারণে ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের অনুরোধের জেরে স্কুল পরিচালন সমিতির তরফে আপাতত দশম শ্রেণির ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেইমতো বুধবারই প্রথম ক্লাস শুরু হয়। কিন্তু প্রথমদিনই এই নিয়ে অশান্তির জেরে চাপের মুখে ক্লাস বন্ধের বিষয়টি জানিয়ে দেন ছাত্র ছাত্রীদের। এরপর ঘটনার তদন্ত করতে বৃহস্পতিবার স্কুলে যান ঘাটালের অতিরিক্ত বিদ্যালয় পরিদর্শক তিমিরবরণ আদিগিরি। তিনি বৃন্দাবনবাবুর কাছে লিখিত জবাব তলব করেন। বৃন্দাবনবাবু লিখিতভাবে নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমাও চেয়ে নেন।

তবে শুধুমাত্র লিখিতভাবেই ভুল সেঈকার করেননি বৃন্দাবনবাবু। এদিন সংবাদ মাধ্যমের সামনে বিসি রায় হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বৃন্দাবন ঘটক বলেন, “ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের অনুরোধ মেনে শুধুমাত্র দশম শ্রেণির ক্লাস চালু করেছিলাম। করোনা পরিস্থিতিতে সন্তানতুল্য ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থের কথা ভেবে সামাজিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস শুরু করেছিলাম। কিন্তু সরকারি বিধিনিষেধের জেরে ক্লাস বন্ধ করে দিতে বাধ্য হলাম।” এদিন প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, “আমার ৩১ বছরের শিক্ষকতা জীবনে আমি কোনও অন্যায় করিনি। সন্তানতুল্য ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থের কথাই ভেবে এসেছি। ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক ও পরিচালন সমিতির অনুরোধের কাছে আমি দুর্বল হয়েই এই ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এই ভুল আর হবে না। ” এদিকে বুধবারই প্রধান শিক্ষকের পাঠানো নোটিস পেয়ে বৃহস্পতিবার স্কুলে আসেনি একজন পড়ুয়াও।

RELATED ARTICLES

Most Popular