Homeএখন খবরখড়গপুর শহরের মর্মান্তিক ঘটনায় মৃত্যু ডেবরা বিডিওর প্রধান করনিকের! অবসরের আগেই জীবন...

খড়গপুর শহরের মর্মান্তিক ঘটনায় মৃত্যু ডেবরা বিডিওর প্রধান করনিকের! অবসরের আগেই জীবন থেকে অবসর

নিজস্ব সংবাদদাতা: এক অবিশ্বাস্য মৃত্যুর স্বাক্ষী থাকল খড়গপুর শহর। দুর্ঘটনার পর আহত ব্যক্তি বাড়িতে ফিরে টিফিন করে, পরিবারের লোকেদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে অসুস্থ হয়ে মারা গেলেন! পুলিশ জানিয়েছে মৃত ব্যক্তির নাম ধীমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বাড়ি খড়গপুর শহরের ১১নম্বর ওয়ার্ড মালঞ্চ এলাকায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা বিডিও অফিসের প্রধান করনিক ধীমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বয়স ৫৯ বছর পেরিয়েছিল। মাত্র ৬ মাস পরেই অবসর নেওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তার আগেই মঙ্গলবার রাতে ঘটে গেল মর্মান্তিক ঘটনাটি। জানা গেছে ধীমান বাবুকে প্রতিদিনই বিডিও অফিসের একটি গাড়ি বাড়ি থেকে নিয়ে যেত এবং ছেড়ে দিয়ে যেত। বাড়ি শহরের ভেতরে বলে ইদানিং তিনি ৬নম্বর হাওড়া-মুম্বাই জাতীয় সড়কের ওয়ালিপুর মোড়েই গাড়িতে উঠতেন এবং সেখানেই নামতেন। ওখানেই একটা দোকানে তাঁর সাইকেল থাকত। জাতীয় সড়ক টপকে ভেতর দিয়েই তিনি বাড়ি চলে আসতেন।

মঙ্গলবার এভাবেই তিনি অফিস ফেরতা গাড়ি থেকে নেমে সাইকেলে করে ফিরছিলেন। জাতীয় সড়কের যে অংশ থেকে তিনি মধ্যবর্তী রাস্তা ধরে বাড়ির রাস্তায় নামতেন তার ঠিক আগেই একটি ভারি লরি ধাক্কা মারে তাঁকে। তিনি পড়ে যান, তাঁর সাইকেল দুমড়ে মুচড়ে যায় কিন্তু খুবই সামান্য আঘাত লাগে তাঁর পায়ে। স্থানীয়রা দৌড়ে আসেন। লরিটিও দাঁড়িয়ে যায়। অল্প একটু খুঁড়িয়ে হাঁটলেও ধীমান বাবু ঠিকই ছিলেন। সাইকেলের যথেষ্ট ক্ষতি হয়। স্থানীয় মানুষজনরাই সাইকেললের ক্ষয়ক্ষতি বাবদ লরির চালকের কাছ থেকে কিছু ক্ষতিপূরণও আদায় করে দেন ধীমানবাবুকে। যেহেতু সাইকেলটা একেবারেই চালানোর অযোগ্য হয়ে যায় তাই স্থানীয়রাই তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেন।

বাড়ি ফিরে ধীমানবাবু হাতমুখ ধুয়ে বাড়ির পোশাক পরে পরিবারের লোকেদের সাথে গল্প গুজব করেন। সন্ধ্যায় বাড়িতে তৈরি লুচি হালুয়া টিফিন করেন। কিন্তু পরিস্থিতি বদলে যায় রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ। হঠাৎই কাঁপুনি শুরু হয় তাঁর। দ্রুত নাড়ির গতি কমতে থাকে। সাথে সাথেই পাশের একজন তরুণ চিকিৎসক খবর পেয়ে ছুটে আসেন। সমস্ত কিছু শোনার পর তাঁর ধারনা হয় অভ্যন্তরীণ রক্ত ক্ষরন হচ্ছে। তিনিই পরামর্শ দেন হাসপাতালে স্থানান্তিত করতে।

পরিবারের লোকেরা ফোন করেন ডেবরা বিডিওকে। বিডিও পিন্টু ঘরামি সাথে সাথে ধীমান বাবুকে নিয়ে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন এবং জানিয়ে দেন প্রয়োজনে ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে প্রাথমিক চেক আপ করিয়ে নেওয়া যাবে। সেই মত পরিবার নিজেদের চারচাকা গাড়িতেই তাঁকে নিয়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন পরিবারের সদস্যরা। ধীমানবাবুর ছেলে নিজেই গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন। সঙ্গে স্ত্রী ও মেয়েও ছিলেন। বাড়িতে রয়ে গেছিলেন বৃদ্ধা মা। কিন্তু ডেবরা পৌঁছাতে পারেননি তাঁরা তার কিছু আগেই গাড়িতেই মৃত্যু হয় তাঁর। ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসকরাই মৃত ঘোষণা করেন তাঁকে। বুধবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয় তাঁর।

RELATED ARTICLES

Most Popular