ওয়েব ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় আমফানের পর কেটে গিয়েছে এক মাস। আমফানে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা প্রবল। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী টাকাও পাঠিয়ে দেওয়ার ঘোষণাও করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু আদতে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা সেই ক্ষতিপূরণ তো পাচ্ছেনই না বরং সেই টাকায় পকেট ভরছে শাসকদলের নেতাদের। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে একই অভিযোগ আসছে বারংবার। হুগলির গরলগাছার পর এবার উত্তর ২৪ পরগণার দেগঙ্গা, ঝড়ে বিধ্বস্ত একাধিক বাড়ি। এই বর্ষায় মাথা গোজার ঠাঁই টুকুও নেই আমফানের তান্ডবে ডুবে গিয়েছে একাধিক বাড়িঘর। এই পরিস্থিতিতে এক মাস গড়ালেও এখনও পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে পৌঁছয়নি ক্ষতিপূরণের টাকা। তবে টাকা অবশ্য এসেছে সরকার থেকে,কিন্তু তার পুরোটাই ঢুকেছে স্থানীয় পঞ্চায়েত ও শাসকদলের নেতা কর্মীদের পকেটে। ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে এমনই দুর্নীতির অভিযোগ উঠলো ব্লকের ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আমফানে দেগঙ্গা ব্লকের ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষতিপূরণের আশ্বাসে তারা বিডিও অফিসে আবেদনও করেছিলেন। কিন্তু আদতে সেই ক্ষতিপূরণ প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা না পেয়ে টাকা ঢুকেছে পঞ্চায়েত প্রধান সহ তৃণমূল নেতা ও তৃণমূল ঘনিষ্ঠদের অ্যাকাউন্টে৷ এই অভিযোগে গত কয়েকদিন ধরে গ্রামবাসীদের তরফে দেগঙ্গা বিডিও অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। কিন্তু বিডিও-র তরফে তাদের সাথে কোনোরকম আলোচনা করা হয়নি। এরপর সোমবার কয়েক হাজার মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যদের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলে বিডিও অফিসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে দেখাতে শুরু করে। তাদের দাবি, অবিলম্বে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে বিডিওকে। কিন্তু বেলা ১টা থেকে বিক্ষোভ শুরু হলে ৪ ঘন্টা অতিক্রান্ত হওয়ার পরও বিডিও-র তরফে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা না বলায় অবশেষে ক্ষিপ্ত জনতা ভাঙচূর শুরু করে।
সাধারণ মানুষ পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে বিডিও অফিসের মূল গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েন। বিডিও অফিসের ভিতরে চলে ইটবৃষ্টি। খবর পেয়ে দেগঙ্গা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু জনতা এতটাই ক্ষিপ্ত হয়ে যায় যে তাদের একার পক্ষে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া অসম্ভব হয়ে ওঠে। এরপর কয়েকঘন্টা পর বারাসাতের এসডিপিওর নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বারাসাতের বিশাল পুলিশবাহিনী। এরপর বিডিও-র তরফে তাদের প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলে অবশেষে বিক্ষোভ ওঠে। এই ঘটনার জেরে প্রায় ৬ ঘণ্টা অবরুদ্ধ হয়ে যায় টাকি রোড। পরে পুলিশ ও প্রশাসনের আশ্বাসে বিক্ষোভ ওঠে।