Homeএখন খবরখড়গপুরের যুবকদের গল্পের গরু গাছে তোলা সেই ঢাঙ্গিকুসুম ঘুরে গেলেন DGP

খড়গপুরের যুবকদের গল্পের গরু গাছে তোলা সেই ঢাঙ্গিকুসুম ঘুরে গেলেন DGP

নিজস্ব সংবাদদাতা: বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমান্ত গ্রাম ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়ী থানার ঢাঙ্গিকুসুম গ্রাম বেড়াতে গিয়ে মোবাইল হারিয়ে ফেলে মাওবাদী গল্প ফেঁদে ফেলে ছিল খড়গপুরের চার যুবক। ‘জঙ্গুলে পোশাক পরা হিন্দি ভাষী কয়েকজন মাওবাদী যার মধ্যে আবার তিন মহিলা ছিল!’ তারাই নাকি মোবাইল কেড়ে নেয় এক যুবকের, ধমক দিয়ে ছেড়ে দেয়। এই গল্প ছড়িয়ে পড়েছিল বৃহস্পতিবার রাত থেকে। ঘটনার ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই সেই প্রত্যন্ত গ্রামেই পৌঁছে গেলেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের প্রধান ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ বা DGP বীরেন্দ্র।

শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পাশাপাশি বেলপাহাড়ী থানায় উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে একটি বৈঠকও সেরে ফেলেন তিনি যেখানে গত প্রায় একমাস ধরে চলা কয়েকটি মাওবাদী তৎপরতা নিয়ে আলোচনা হয়। যদিও ঢাঙ্গিকুসুম গ্রামের ঘটনা পুরোপুরি ওই যুবকদের মনগড়া বলেই উড়িয়ে দিয়েছেন ঝাড়গ্রাম ও খড়গপুর পুলিশের কর্তারা।
বৃহস্পতিবার খড়গপুরের যুবকদের ছড়ানো ওই গল্প শুক্রবার প্রকাশিত হয় সংবাদ মাধ্যমে।

শুক্রবারই বেলপাহাড়ীর মফঃস্বল শহরের অদুরেই পড়েছে মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার। ফলে খড়গপুরের যুবকদের মনগড়া সাজানো গল্পটি বেশ জমজমাট হয়ে উঠে শুক্রবার সারাদিন ধরেই। ওই দিন কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে সেই খবর প্রকাশিত হতেই তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশও। শুক্রবার ওই যুবকদের খড়গপুর টাউন থানায় এনে দীর্ঘক্ষন জেরা করার পরই পুলিশ নিশ্চিত হয়ে যায় যে, বেড়াতে গিয়ে হারিয়ে যাওয়া মোবাইল নিয়ে রোমাঞ্চকর গল্প ফেঁদে হিরো হতে হয়েছিল ওই যুবকরা। শুক্রবার রাতেই খড়গপুর পুলিশ জানিয়েও দেয় যে মিথ্যা বলছে যুবকরা এবং পুলিশের কাছে তারা স্বীকারও করে নেয় সেই কথা।

শনিবার বেলপাহাড়ী থানায় ঝাড়গ্রাম পুলিশ সুপার অমিত কুমার ভরত রাঠোর সাংবাদিকদের জানিয়েও দেন যে ঘটনার সঙ্গে মাওবাদী কোনও যোগ নেই। পুলিশ সুপার বলেন, ‘ওই যুবকরা মিথ্যা কথা বলছেন। ওদের মোবাইল হারিয়ে গেছিল সেটা নিয়েই একটা গল্প ফেঁদেছেন।’ যদিও এটা বলার অর্থ ওই ঘটনায় মাও যোগ ছিলনা তথাপি স্বয়ং DGP ঘটনাস্থলে গেলেন কেন? ঢাঙ্গিকুসুম পরিদর্শননে যাওয়া নিয়ে DGP বলেছেন, “একটা অভিযোগ পেয়েছি আমরা সেই নিয়ে তদন্ত চলছে তাই জায়গাটা দেখে গেলাম। পাশাপাশি একটা পর্যালোচনা বৈঠক করে গেলাম।”

ঘটনা হল মাওবাদীদের তৎপরতা বেড়েছে। ২৭শে আগষ্ট তিন ব্যবসায়ীকে পচাপানি গ্রামে লেভি চেয়ে হুমকি দেওয়া এবং ২৯শে আগষ্ট এক ব্যবসায়ীর বাড়ির সামনে থেকে গুলি ছোঁড়া। ১৬ই আগষ্ট কালাদিবস পালনের আহ্বান জানিয়ে পোষ্টার এবং ৪তারিখ ফের পোষ্টার বেলপাহাড়ীতে বুঝিয়ে দিচ্ছে মাওবাদীদের তৎপরতা বাড়ছে। খড়গপুরের যুবকদের দাবি যে ভাবে পুলিশ উড়িয়ে দিয়েছে বাকি ঘটনাগুলি পুলিশ উড়িয়ে দেয়নি। সেই সব জায়গায় না গিয়ে সেই ঢাঙ্গিকুসুম গ্রামেই DGP গেলেন যা কিনা পুলিশ ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছে। তাই খড়গপুরের ওই যুবকরা যে গল্প ছড়ালেন সে গল্পটা রয়েই গেল।

RELATED ARTICLES

Most Popular