Homeএখন খবর২৫০ টন পমফ্রেট আর চিংড়ি নিয়ে খুলল দিঘার মোহনা বাজার, ইলিশের আশা...

২৫০ টন পমফ্রেট আর চিংড়ি নিয়ে খুলল দিঘার মোহনা বাজার, ইলিশের আশা শীঘ্রই

নিজস্ব সংবাদদাতা: ‘আনলক ইন্ডিয়া ২’ পর্বের শুরুতেই ঝাঁপ খুলল দিঘার মোহনা বাজার আর শুরুয়াতটা মন্দ হলনা মোটেই। দীর্ঘ আড়াই মাসের মাথায় ব্যবধানে উত্তর-পূর্ব ভারতের সর্ববৃহৎ দিঘা মোহনা মৎস্য নিলাম কেন্দ্রে নিলাম হল ২৫০ টন পমফ্রেট আর চিংড়ির। পাশাপাশি ছিল ম্যাকারেল, ভোলা, রুলি। প্রায় ১০০টি ট্রলারে সমুদ্রের গভীর থেকে বয়ে নিয়ে আসা এই মাছ নিয়ে গেলেন কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের আড়তদার ও বড়বড় পাইকারের দল আর এর ফলে রাজ্যের মৎস বাজার দর কিছুটা হলেও নিম্নমুখি হতে পারে এমনটাই ধারনা।

সাধারন সময়ে আড়াই থেকে তিন হাজার ক্রেতা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত এমনকি ভিন রাজ্যের ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে এখানে আসেন। দৈনিক ৪০ থেকে ৫০লক্ষ টাকার কেনা বেচা হয় মাছের আড়তের পাশাপাশি বরফ কল, দোকানপাট ইত্যাদি মিলিয়ে কয়েক হাজার মানুষের জীবন জীবিকার আধার এই মৎসনিলাম কেন্দ্র যার সবটাই খোলার আগে যাবতীয় সুরক্ষা বিধি মানা হয়েছে, স্যানিটাইজ করা হয়েছে। অতঃপর ১০১ দিনের মাথায় ঘোমটা খুলল মোহনা বাজার।

বুধবার সকাল থেকে খুলে যায় নিলাম সকাল থেকেই শুরু হয়ে যায় মাছের নিলাম। ব্যবসায়ী, পাইকার, মৎস্যজীবীদের কোলাহলে ফের প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে মোহনা চত্বর। খুশি ক্রেতা বিক্রেতা সবাই। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে ২২ মার্চ থেকে বন্ধ ছিল দিঘা মোহনার মৎস্য নিলাম কেন্দ্র। এরপরই শুরু হয়ে যায় সমুদ্রে মৎস প্রজননের কথা মাথায় রেখে সরকার নির্ধারিত মৎস শিকারের নিষেধাজ্ঞা যা নিয়ম মেনে প্রতিবছরই ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন অবধি চলে থাকে। ১৫ জুন থেকে আনলক ১ পর্বে মাছের বাজার, মৎস্য বন্দর খোলা এবং মৎস্যজীবীদের সমুদ্রযাত্রার অনুমতি মিলেছিল। কিন্তু স্থানীয় মানুষের আপত্তি করে বাজারে ভিড়ের কারনে সংক্রমন ছড়াতে পারে বলে।

ফলে ট্রলার নামেনি সমুদ্রে খোলেনি বাজার। দিঘা মোহনার পাইকারি মাছের বাজারের পাশাপাশি বন্ধ ছিল শঙ্করপুর, পেটুয়া ও শৌলার মৎস্য বন্দরও। আনলক ২- পর্বের শুরুর দিনেই মোহনার মৎস্য নিলাম কেন্দ্রের সঙ্গেই তিনটি মৎস্য বন্দর চালুর কথা ঘোষণা করা হয়েছিল।সেই মতো ১লা জুলাই বুধবার, খুলে গেল বাজার। দিঘা ফিশারম্যান এন্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, ‘ নিলাম কেন্দ্র খোলার আগে গোটা চত্বর ফগিং মেশিন দিয়ে স্যানিটাইজ করা হয়েছে। সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে মাছ কেনা–‌বেচা করা হচ্ছে। শুরুতে ৫০ শতাংশ (৭৫ টি )আড়ত খুলেছে। তাতে ২৫০ টন সামুদ্রিক মাছের নিলাম হয়েছে। ১০০ টি মতো লঞ্চ-ট্রলারে উঠেছে এই পরিমাণ মাছ।’

তবে পর্যাপ্ত ইলিশ না ওঠেনি এখনও। দিঘা মৎস্যজীবী সংস্থার অন্যতম কর্মকর্তা এবং আড়তদার নবকুমার পয়ড়্যা বলেন,’ ওঠেনি বটে কিন্তু না উঠে যাবে কোথায়? লকডাউনের ধাক্কা কাটিয়ে সবেই গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে নেমেছে লঞ্চ-ট্রলারগুলো। চিংড়ি, পমফ্রেট ভালোই ধরা পড়েছে।আবহাওয়া একটু অনুকূল হলেই পূবালি বাতাসে ভর করে চেনা জায়গায় ফিরবেই ইলিশের দল। লকডাউনের ফলে নির্মল সমুদ্রে এবার বঙ্গোপসাগরে ভালো ইলিশ মিলেছে বিভিন্ন জায়গায় এমন খবর এসেছে আর দিঘাও তা থেকে বঞ্চিত হবেনা।”
একজন আড়তদার রসিকতা করেই বলে ফেললেন, “আসলে দিঘার বাজার যে বন্ধ রয়েছে এ খবর তেনারাও পেয়েছেন তাই কিন্তু কিন্ত করছেন আরকি! বাজার খোলার খবর পেতেই ঝাঁকে ঝাঁকে রওনা দেবেন, এ বাজারে যে মরেও সুখ!”

RELATED ARTICLES

Most Popular