Homeএখন খবরবিপর্যয়ে দেখা মেলেনি হঠাৎ চুল্লু খেয়ে আবির্ভাব তৃণমূল বিধায়কের, ভিডিও ভাইরাল করে...

বিপর্যয়ে দেখা মেলেনি হঠাৎ চুল্লু খেয়ে আবির্ভাব তৃণমূল বিধায়কের, ভিডিও ভাইরাল করে ছড়িয়ে দিল গ্রামবাসীরাই

নিজস্ব সংবাদদাতা: ভোটে জেতার পর নাকি দেখাই মেলেনি তাঁর। দীর্ঘ লকডাউনে কর্মহীন, দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশেও দাঁড়াতে দেখা যায়নি তাঁকে। সেই তিনিই উদয় হলেন গ্রামবাসীদের কাছে তাও গলা অবধি চুল্লু গিলে। এমনটাই অভিযোগ গ্রামবাসীদের। সেই গ্রামবাসীরাই ভিডিও করেছেন গোটা ঘটনার, তারপর বিধায়কের সেই ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছেন হোয়াটস্যাপ আর ফেসবুকে। জঙ্গলমহলের জঙ্গলে যেমন করে আগুন ছড়ায় তেমনই সেই ভাইরাল দাবানলের ছড়িয়ে পড়েছে বাঁকুড়ার রাইপুর ছাড়িয়ে গোটা জেলা এবং রাজ্যে। আর তাতেই লজ্জায় মাথা কাটা যাওয়ার অবস্থা বাঁকুড়া জেলা তৃনমূলের।

ভাইরাল হওয়া তৃণমূলের টিকিটে লড়ে বাঁকুড়া জেলার রাইপুরের বিধায়ক হয়েছিলেন বীরেন্দ্র নাথ টুডুর। কিন্তু ভোট জয়ের পর এলাকাবাসী ওনাকে আর দেখতে পাননি। রবিবার রাতেই তাঁকে হঠাৎই উদয় হতে দেখা যায় একটি গ্রামে কিন্তু তখন তিনি প্রায় কথা বলার মত জায়গাতে নেই। গ্রামবাসীরা অভিযোগ করে বলেন যে, তিনি নাকি মদ খেয়ে এলাকার পরিদর্শনে এসেছিলেন। আর সেই কারণেই ওনাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। সেই ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। শুধু বিক্ষোভই না, আক্ষেপ করতেও দেখা গেছে গ্রামবাসীদের। আক্ষেপ করে গ্রামবাসীদের বলতে শোনা যায়, আমরা তোমাকে ভোট দিয়ে জিতিয়েছি আর ভোটে জিতে তুমি হনু হয়ে গেছ? কেউ কেউ বিধায়কের বিরুদ্ধে কিছু আলপটকা মন্তব্যও ছুঁড়ে দিয়েছেন।

একটি দামী গাড়িতে আসা কেতা দুরস্ত পোশাক পরা বিধায়ক অবশ্য উত্তেজিত হননি। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে টলতে টলতে গ্রামবাসীদের আক্ষেপ হজম করেছেন। এক সময় হয়ত অনুতাপ বোধ থেকে তৃণমূল বিধায়ককে হাতজোড় করে গ্রামবাসীর কাছে ক্ষমাও চাইতেও দেখা যায়। যদিও গ্রামবাসীদের ক্ষোভ তাতে প্রশমিত হয়নি। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করে বলেন, বিগত চার বছর ধরে উধাও থাকার পর হঠাত উদয় তাও আবার মদ্যপ অবস্থায়। এমনকি এলাকাবাসী এও অভিযোগ করেন যে, উনি নাকি মদ্যপ অবস্থায় কাউকে ধরে মেরেছেন।

গ্রামবাসীদের ভিডিওতে বলতে শোনা যায় যে কিভাবে বহু কষ্ট করে তাঁদের এই মাওবাদী এলাকায় থাকতে হয়। এমনকি ভোটের সময় মাওবাদীদের ভয় উপেক্ষা করে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন এবং বীরেন্দ্র নাথকে জনপ্রতিনিধি বানিয়েছেন সেটাও জানাতে দেখা যায় গ্রামবাসীদের, এরপরই গ্রামবাসীদের আক্ষেপ করতে শোনা যায় এই বলে যে, কিন্তু সেই কষ্টের মর্যাদা রাখেন নি তৃণমূল বিধায়ক।।       গ্রামবাসীদের একটি অংশ যে তৃনমূলের সমর্থক তাও বোঝা গেছে তাঁদের বক্তব্যে। মুখ্যমন্ত্রীকে দিদি সম্বোধন করে তাঁদের বলতে শোনা যায় যে, এই ভিডিও দিদি (মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী)কে পাঠাবেন। গ্রামবাসীদের বিক্ষোভে থতমত খেয়ে যান তৃণমূল বিধায়ক। উনি বিক্ষোভকারীদের ভাই বলেও ডাকেন। কিন্তু গ্রামবাসীরা ওনাকে ভাই মানতে নারাজ। ভিডিওতে এও বলতে শোনা যায় যে, বিধায়ক চুল্লু খেয়ে এসেছেন আর ওনার শরীর দিয়ে বাজে গন্ধ বেরাচ্ছে।

গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখে পড়া এই তৃণমূল বিধায়ককে শেষে পুলিশ এসে উদ্ধার করে নিয়ে যায় বলেই ভিডিও পোস্ট কর্তার দাবি। তৃণমূল বিধায়কের এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব ভাইরাল হচ্ছে। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা আমাদের পক্ষে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে বাঁকুড়া তৃনমূলের এক নেতা দ্য খড়গপুর পোষ্টকে জানিয়েছেন,”কাকে কী বলব বলুন, বাড়িতেই মুখ দেখাতে পারছিনা ছেলে মেয়েদের কাছে। তাদের কাছেও ওই একই ভিডিও। তারা বলছে, বাবা দেখো! এই তোমাদের তৃণমূল।”
উল্লেখ্য সামনেই বিধানসভা নির্বাচন ছাড়াও লকডাউন, পরিযায়ী শ্রমিক ইত্যাদি নানা ইস্যুতে এলাকায় এলাকায় জনপ্রতিনিধিদের পরিদর্শনে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা ব্যানার্জী। সেই আদেশই পালন করতে গিয়ে এলাকায় গিয়ে এই বিপত্তি বলেই মনে করা হচ্ছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular