Homeএখন খবরডেঙ্গি, ম্যালেরিয়াকে চৈ চৈ করে ডাকছে খড়গপুরের হাসপাতালে বেড়ে ওঠা ঠিকাদারের হাঁস

ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়াকে চৈ চৈ করে ডাকছে খড়গপুরের হাসপাতালে বেড়ে ওঠা ঠিকাদারের হাঁস

নিজস্ব সংবাদদাতা: কথায় আছে হাঁস পোষে চাষি আর ডিম খায় দারোগা বাবু। খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের কথা অবশ্য আলাদা, এখানে রুগীদের খাদ্য সরবরাহের ঠিকাদার হাঁস পোষেন ঠিকই কিন্তু রুগীদের হাঁসের ডিম বা মাংস জোটেনা, সপ্তাহে দু-চার পিস ব্রয়লার মাংস আর পোল্ট্রির ডিমই তাঁদের ভরসা। তবে হাঁস বেড়ে চলে ঠিকাদারবাবুর, দুটো হাঁস থেকে এখন হাঁসের সংখ্যা প্রায় ডজন খানেক। রুগীর বরাদ্দ খাবারের ভাগ খেয়ে গায়ে গতরে বেড়ে ওঠা সেই হাঁস চৈ চৈ করে ডাকে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া ইত্যাদি মশা বাহিত রোগকে। সরকারি স্বাস্থ্যদপ্তর তায় প্রায় চারশ শয্যার হাসপাতালের অভয় অরণ্যে বেড়ে চলা এই সর্বনাশের চাষ কেউ যেন দেখেও দেখেনা।

 

কিন্তু কেন ? কেন ঠিকাদারবাবুর বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে পারেনা ? পারেনা কারন সরকারি স্তরে তাঁর হাত নাকি অনেকদুর লম্বা আর সেই হাত নাকি হাঁসের ডিমের চাইতেও আরও অনেক কিছুই পরিষেবা দিয়ে থাকে বিভিন্ন স্তরে। আর সে কারনেই নিজে বছর কয়েক আগেই কালো তালিকা ভুক্ত হয়েও বেনামে একাধিক হাসপাতালের রুগীদের খাদ্য সরবরাহ করে থাকেন। এমন একজন যদি দু ‘ দশটা হাঁসই পুষে থাকেন তবে কারও আপত্তি হবার নয় আর হলেই বা কার কি এসে যায়?

 

খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল কংগ্রেসেরা সরকারি কর্মচারী সংগঠন ফেডারেশনের নেতা দিলীপ সরখেল জানিয়েছেন, ” মূখ্যমন্ত্রী যখন রাজ্যের হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র গুলির হাল ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী, যখন একের পর এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে হাসপাতাল গুলি সেবার প্রতিরূপ হয়ে দাঁড়াচ্ছে তখন এরকমই কিছু মানু্ষের জন্য সব ভেস্তে যেতে বসেছে। ভাবা যায় সরকারি হাসপাতাল যেখানে প্রায় ৫০০ রুগী থাকেন আর আড়াই হাজার রুগী যাতায়ত করে, যেখানে নবজাতক থেকে প্রসূতি মায়ের নিত্য আনাগোনা সেখানে অমন জল কাদায় হাঁস চাষ করা হচ্ছে। অথচ সব জেনেও নীরব হাসপাতালের মাথায় থাকা আধিকারিকরা!

 

ঠিকাদারের বকলমে থাকা সেই প্রশান্ত ঘোষ যাঁর আত্মীয়ের নামে ঠিকাদারি তিনি অবশ্য বলেছেন, ” দুটো হাঁস ধরে রেখেছিলাম, সেই দুটো থেকে বেড়ে বেড়ে এতগুলো হয়ে গেছে। ভালই হচ্ছিল রুগীদের ফেলে দেওয়া আবর্জনা খেয়ে পরিষ্কার রাখছিল হাসপাতাল। সবার যখন আপত্তি তখন সরিয়ে নেব। আমরা যখন সবাই পৃথিবীকে ভালবাসি তখন সরাতে তো হবেই।” যদিও এটা বোঝা গেলনা যে সাংবাদিকদের নজরে আসার পরই তাঁর পৃথিবীর প্রতি এত ভালবাসা জন্মাল কেন?

 

হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখার্জীও নাকি বিষয়টা এতদিন খেয়াল করেননি! বললেন, ‘এখুনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
দিলীপ সরখেল বলেন, ” প্রশান্ত বাবুকে নিয়ে বিতর্ক অবশ্য নতুন কিছুই নয় এর আগেও অনেক বিতর্ক হয়েছে । একবার হাসপাতালে সবজি চাষও করেছিলেন প্রশান্ত ঘোষ। আপত্তি উঠেছিল তখনও। তখনও বলা হয়েছিল ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আসলে প্রশান্তবাবুর হাঁস এমনি ডিম পাড়া হাঁস হলেও তিনি নিজে সোনার ডিম পাড়া হাঁস বোধহয় আর সে ডিমের এত মহিমা যে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সত্যি খুব কঠিন।

RELATED ARTICLES

Most Popular