Homeমহানগরআসানসোল৫ জেলার ৩৪ আসনে নির্বাচন;  সপ্তম দফায় নজরে হাইপ্রোফাইল কেন্দ্র

৫ জেলার ৩৪ আসনে নির্বাচন;  সপ্তম দফায় নজরে হাইপ্রোফাইল কেন্দ্র

নিউজ ডেস্ক: ২৬ এপ্রিল অর্থাৎ সোমবার সপ্তম দফার নির্বাচন হতে চলেছে রাজ্যে। সপ্তম দফার নির্বাচনে নিঃসন্দেহে বসছে চাঁদের হাট। একের পর এক হাই প্রোফাইল প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। রাজ্যের ৫ জেলার ৩৪ আসনে নির্বাচন। যদিও ৩৬ আসনে এই পর্বে ভোট হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুরে দুই প্রার্থীর করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হওয়ায় সেখানকার ভোট গ্রহণ পর্ব স্থগিত রাখা হয়েছে। আগামী ১৬ই মে এই দুই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হবে। এই দফায় কলকাতার ৪টি, দক্ষিণ দিনাজপুরের ৬টি, পশ্চিম বর্ধমানের ৯টি, মালদহের ৬টি ও মুর্শিদাবাদের ৯টি আসনে ভোট। মোট বুথের সংখ্যা ১২,০৬৮; এর মধ্যে রয়েছে ৯,১২৪টি প্রধান এবং ২,৯৪৪টি অতিরিক্ত বুথ। সপ্তম দফায় ভোটে লড়ছেন রাজ্যের ৪ মন্ত্রী। সবার চোখ এবার ভবানীপুরে।

একনজরে জেলাভিত্তিক ভোটগ্রহণ কেন্দ্র-

দক্ষিণ দিনাজপুর- ৬ আসনে ভোট; বালুরঘাট, তপন, গঙ্গারামপুর, হরিরামপুর, কুশমণ্ডি, কুমারগঞ্জ।

মালদা- ৬ আসনে ভোট; চাঁচল, হরিশচন্দ্রপুর, মালতিপুর, হবিবপুর, রতুয়া, গাজোল।

মুর্শিদাবাদ- ৯ আসনে ভোট; সাগরদিঘি, লালগোলা, ভগবানগোলা, রানিনগর, মুর্শিদাবাদ, নবগ্রাম, ফরাক্কা, সুতি, রঘুনাথগঞ্জ।

পশ্চিম বর্ধমান- ৯ আসনে ভোট; আসানসোল উত্তর, আসানসোল দক্ষিণ, কুলটি, বারাবনি, দুর্গাপুর পূর্ব, দুর্গাপুর পশ্চিম, পাণ্ডবেশ্বর, রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া।

কলকাতা- ৪ আসনে ভোট; ভবানীপুর, রাসবিহারী, বালিগঞ্জ, কলকাতা বন্দর।

কেন্দ্র ভবানীপুর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড়ে তৃণমূল কংগ্রেস এবার প্রার্থী করেছে দলের বর্ষীয়ান নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে। ১৯৯৮ সালে উপনির্বাচনে রাসবিহারী থেকে জেতেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী। তারপর থেকে সেখানকারই বিধায়ক তিনি। কিন্তু এবার ভবানীপুরে তাঁকে দাঁড় করিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।

এবারের নির্বাচনে তাঁর প্রতিপক্ষ বিজেপির রুদ্রনীল ঘোষ। একসময়ে বাম রাজনীতি, পরবর্তীকালে তৃণমূল কংগ্রেস ঘনিষ্ঠ তিনি। নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে তিনি এবারের ভোট ময়দানে।

কেন্দ্র কলকাতা বন্দর, রাজ্যের পুরমন্ত্রী ও কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ২০০৯ সালে আলিপুর কেন্দ্র থেকে উপনির্বাচনে জিতে প্রথম বার বিধায়ক হন ফিরহাদ। এরপর ২০১১ ও ২০১৬ সালে কলকাতা বন্দর কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়িয়ে জিতেছেন। এ বারেও সেখান থেকেই প্রার্থী তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী করেছে অওয়াধ কিশোর গুপ্তাকে।

কেন্দ্র বালিগঞ্জ, এবছর নির্বাচনে দাঁড়ানোর ৫০ বছর পূর্ণ করছেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ১৯৭১ সালে কলকাতার বালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন। ৫০ বছর পরে ফের সেই কেন্দ্রেই প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এর আগে সুব্রত বালিগঞ্জ ছাড়াও জোড়াবাগান এবং চৌরঙ্গি থেকেও বিধায়ক হয়েছেন। বালিগঞ্জে এবার সিপিআইএম প্রার্থী রাজ্য বিধানসভার প্রাক্তন স্পিকার হাসিম আবদুল হালিমের ছেলে ফুয়াদ হালিম। পেশায় চিকিৎসক ফুয়াদ এর আগে দু’বার নির্বাচনে দাঁড়িয়ে পরাজিত হন।

কেন্দ্র আসানসোল দক্ষিণ, নজরকাড়া এই কেন্দ্রে  পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ ও ফ্যাশন ডিজাইনার থেকে বিজেপির রাজ্য মহিলা মোর্চার সভাপতি অগ্নিমিত্রা পল। নির্বাচনের আগে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে টুইট যুদ্ধে নেমেছিলেন সায়নী। তারপরেই তাঁকে প্রার্থী করে তৃণমূল।

কেন্দ্র আসানসোল উত্তর, এই কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী রাজ্যের আইন ও শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। ২০১১ থেকে আসানসোল উত্তরেরই বিধায়ক মলয়। এবার তৃতীয় বারের জন্য লড়ছেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি এবার প্রার্থী করেছে কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়।

কেন্দ্র পাণ্ডবেশ্বর, বিতর্কিত এই কেন্দ্র থেকেই এবারও প্রার্থী হয়েছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তবে তৃণমূল নয়, তিনি প্রার্থী হয়েছেন বিজেপি-র টিকিটে।

কেন্দ্র বালুরঘাট, বিজেপি প্রার্থী অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ীও এ বার প্রথম বার রাজনীতির ময়দানে। প্রথমে আলিপুরদুয়ারের প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা হয়ে যায়। পরে দলীয় কোন্দল সামলাতে কেন্দ্র বদল করে তাঁকে বালুরঘাটের প্রার্থী করে বিজেপি।

এছাড়াও কুশমন্ডি আসনে ১৯৮৭ সাল থেকে জয়ী আরএসপি প্রার্থী নর্মদা রায়। হবিবপুর কেন্দ্রে লড়াইয়ে রয়েছেন বিজেপির জোয়েল মুর্মু, সংযুক্ত মোর্চার সিপিএম প্রার্থী ঠাকুর টুডু,তৃণমূলের প্রার্থী প্রদীপ বাস্কে। ফারাক্কা আসনে লড়াই কংগ্রেসের প্রার্থী মইনুল হক বনাম তৃণমূল প্রার্থী মণিরুল ইসলাম। রয়েছেন  পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ার সংযুক্ত মোর্চার সিপিএম প্রার্থী ঐশী ঘোষ সহ অনেকেই।

সপ্তম দফার নির্বাচনের জন্য সবথেকে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে আসানসোল-দুর্গাপুরে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়। সেখানে ১৫৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে ৷ এর পাশাপাশি দক্ষিণ দিনাজপুরে ১০৮ কোম্পানি, জঙ্গিপুর পুলিশ জেলায় ১০২ কোম্পানি, কলকাতায় ৬৩ কোম্পানি, মালদায় ১২২ কোম্পানি, মুর্শিদাবাদে ১০২ কোম্পানি, এবং রায়গঞ্জ পুলিশ জেলায় ২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে। মোট ৭৯৬ কোম্পানি বাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷

RELATED ARTICLES

Most Popular