ওয়েব ডেস্ক: অবশেষে সুশান্ত মৃত্যুর তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে দিল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার শুনানিতে শীর্ষ আদালত স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছে, যে সুশান্তের মৃত্যুর বিষয়ে দেশের যে কোনও জায়গা থেকে অভিযোগ দায়ের করা যাবে। সেই সাথে সুশান্ত সংক্রান্ত যাবতীয় এফআইআরের তদন্ত সিবিআই-ই করবে। বুধবার সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে স্বাভাবিকভাবেই খুব খুশি সুশান্তের পরিবার। সেই সাথে সোশ্যাল মিডিয়ায় দীর্ঘ দুমাসের লাগাতার আন্দোলনের পর অবশেষে বুধবার সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে স্বস্তিতে সুশান্তের অনুগামী তথা নেটিজেনরা।
সুশান্তের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে তরজা প্রথম পর্যায়ে বলিউড বনাম নেটিজেনদের মধ্যে আবদ্ধ থাকলেও, সময়ের সাথে সাথে বলিউডের গণ্ডি ছাড়িয়ে তা রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্তরের তরজায় পরিণত হয়েছে। যেহেতু মুম্বাইতেই সুশান্তের মৃত্যু হয়েছে সেকারণে প্রথমে মুম্বই পুলিশের তরফে তদন্ত শুরু করা হলেও, মুম্বাই পুলিশের ওপর আস্থা না রেখে সুশান্তের বাবার এফআইআরের ভিত্তিতে বিহার পুলিশ নিজের মতো করে তদন্ত করতে শুরু করে। এমনকি সুশান্তের বাবা রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে সুশান্তের টাকা লোপাট সহ একাধিক বিষয়ে বিহার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিহার পুলিশের তরফে মুম্বাই গেলে হেনস্থার মুখে পড়তে হয়৷
এরই মধ্যেই আবার সুশান্তের কেসটি ইডির হাতে যায়৷ আর্থিক তছরুপের অভিযোগে মামলা শুরু করে ইডি। সুশান্তের পরিবারের তরফে তাঁর মৃত্যু তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে দেওয়ার জন্য সুপ্রিমকোর্টে আবেদন করা হয়। বিহারের পক্ষ থেকে এলজেপি প্রধান চিরাগ পাসওয়ান সিবিআই তদন্তের পক্ষে সওয়াল করতে থাকেন। বিহার পুলিশের ডিজি মুম্বই পুলিশের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হতেও দ্বিধাবোধ করেননি।
বুধবার শীর্ষ আদালতের রায় প্রকাশ্যে আসাতেই উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন চিরাগ পাসওয়ান। এদিন তিনি সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, “এবার সত্য সামনে আসবে। আর সেই সমস্ত নামও প্রকাশ্যে আসবে যারা তদন্তে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।” একই সাথে সুপ্রিমকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবও। এবিষয়ে বিহার পুলিশের ডিজি গুপ্তেশ্বর পাণ্ডে বলেন, “বিহার পুলিশ আইন ও সংবিধান মেনেই কাজ করছিল। মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের সাহায্যেই সুশান্ত মামলা এতদূর এগোতে পারল। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে মন্তব্য করার যোগ্য নন রিয়া চক্রবর্তী।”
তবে এদিকে সুপ্রিমকোর্টের রায়ে মনে মনে হার স্বীকার করলেও মুখ খুলতে নারাজ মহারাষ্ট্র পুলিশ৷ সুপ্রিম কোর্টের রায় দানের পর বুধবার মহারাষ্ট্রের পুলিশ কমিশনার পরমবীর সিং জানিয়েছেন, যতক্ষণ না সুপ্রিম কোর্টের আদেশনামা হাতে আসছে তারা এই বিষয়ে মন্তব্য করবেন না। এদিকে এদিন শীর্ষ আদালতের রায়ের পর একে একে বহু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে মন্তব্য করতে শোনা যায়। এদিন মহারাষ্ট্র পুলিশের সুরে একই কথা বলেছেন শিব সেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত এবং মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ। তবে এ প্রসঙ্গে এদিন মহারাষ্ট্র সরকারকে বিঁধলেন রাজ্যের বিরোধী নেতা দেবেন্দ্র ফড়ণবিস। যেভাবে সুশান্ত মামলার তদন্ত মুম্বই পুলিশ করেছে, তা সরকারের খতিয়ে দেখা উচিত বলে জানিয়েছেন তিনি।