Homeএখন খবর৪৮ ঘন্টায় ৪ কান্ড সবংয়ে! আ্যসিড, বোমা, দুই মন্দিরে ও এক গৃহস্থ...

৪৮ ঘন্টায় ৪ কান্ড সবংয়ে! আ্যসিড, বোমা, দুই মন্দিরে ও এক গৃহস্থ বাড়িতে চুরি, মিড-ডে-মিলে বেনিয়মের অভিযোগে হেনস্থা শিক্ষককে

জা’য়ের মুখে আ্যসিড ছুঁড়ে ধৃত জা                         নিজস্ব সংবাদদাতা: গত ২৪ ঘন্টায় নানা ঘটনায় ঘটনা বহুল হয়ে রইল সবং। আ্যসিড, বোমা, চুরি আর শিক্ষক হেনস্থায় সরগরম হয়ে রইল সবং থানা এলাকার বিভিন্ন এলাকা।
সব চেয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে সবং পঞ্চায়েত সমিতির বিষ্ণুপুর অঞ্চলের মাসুমপুর গ্রামে যেখানে খুড়তুতো জা’য়ের শরীরে আ্যসিড ছোঁড়ার অভিযোগ উঠেছে এক মহিলার বিরুদ্ধে।
ঘটনায় মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ অন্যদিকে আক্রান্ত মহিলাকে ভর্তি করা হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে। জানা গেছে ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার দুপুরে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন মাসুমপুর গ্রামের কেলেঘাই কপালেশ্বরী নদী লাগোয়া বসবাস তপন শিট ও সনাতন শিট নামে দুই জ্যাঠতুতো খুড়তুতো ভাইয়ের। দুই পরিবারের মধ্যে সম্পত্তিগত বিবাদ লেগে আছে কয়েক দশক জুড়ে। মামলা মোকদ্দমা বিচার পঞ্চায়েত করেও সমাধান হয়নি। প্রায়শই গন্ডগোল হাতাহাতি লেগেই থাকে। তপনের পরিবারের লোকবল বেশি অন্য দিকে সনাতনের লোক বল নেই। সনাতনকে কাঠের কাজে সারাদিন বাইরে থাকতে হয়, সনাতনের ছেলেও কাজের সূত্রে বাইরে থাকে। ফলে দিনের বেশির ভাগ সময় সনাতনের স্ত্রী ছবিরানীকে একাই বাড়িতে থাকতে হয়। ফলে ঝুট ঝামেলার অধিকাংশই ছবি কে পোহাতে হয়। অভিযোগ ছবিকে দু’একবার নিগৃত হতে হয়েছে তপনের পরিবারের হাতে।

বুধবার দুপুরে সেই ঘটনারই ফের পুনরাবৃত্তি ঘটে। দুই পরিবারের মধ্যে বিশেষ করে তপনের স্ত্রী প্রভাতি আর সনাতনের স্ত্রী ছবির মধ্যে উচ্চবাচ্য, কথা কাটাকাটি এমন কি গালাগালি শুরু হয়ে যায়। দুই জা’য়ের চিল চিৎকারে আশে পাশের লোক জুটে যায়। অভিযোগ এই সময় প্রভাতি ছুটে যায় ছবির বাড়িতে তাঁকে হাতে নাতে শিক্ষা দিতে। আর বাড়ির উঠোনে ঢোকার পরই ছবি বাড়িতে রাখা কার্বোলিক আ্যসিড ছুঁড়ে দেয় তপতির ওপর। মুখমন্ডল ছাড়াও তপতির দু’টি হাত আ্যসিডে ঝলসে যায়।

ঘটনার পরই ছবি পালিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। পরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাঁকে। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করার পাশাপাশি তপতিকে উদ্ধার করে সবং গ্রামীন হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরে তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। ছবিকে বৃহস্পতিবার জেলা আদালতে পেশ করা হলে জেল হেফাজতে পাঠানো হয় তাঁকে।
স্থানীয় তৃনমূল অঞ্চল সভাপতি গণেশ মাইতি বলেন, “দীর্ঘদিনের পারিবারিক বিরোধ। আমরাও বহুবার আলোচনায় বসেছি কিন্তু লাভ হয়নি। এলাকাটা নদী ঘেঁষা বলে চন্দ্রবোড়া সাপের উপদ্রব। অনেকেই ঘরে আ্যসিড রাখেন। আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্কে মহিলা সেই আ্যসিড ছুঁড়েছেন যা উচিৎ হয়নি। আইন আইনের পথে হাঁটবে।”

বোমা সহ গ্রেপ্তার তিন বিজেপি কর্মীপরের ঘটনাও সবংয়ের সেই বিষ্ণুপুর অঞ্চলে। ওই দিন রাতে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এলাকায় বোমা নিয়ে ভয়ভীতির পরিবেশ তৈরি করেছিল এমনই অভিযোগ। অভিযোগ স্থানীয় বিজেপির দুটি গোষ্টির এক গোষ্টি অপর গোষ্টিকে শায়েস্তা করতে বোমা নিয়ে চড়াও হয়। তিন জনকে বামাল ঘিরে ফেলে স্থানীয় মানুষ। খবর পেয়ে পুলিশ ছুটে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে তিনজন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করে সবং থানার পুলিশ।ধৃতদের নাম সুরজ বেরা,পবিত্র ঘড়ুই ও নিতাই মাইতি। তিনটি বোম উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধৃতদের বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর আদালতে তোলার পর ২জন কে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ । যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে পদ্ম শিবির। সবং বিজেপি তথা জেলার নেতা শান্তনু সাউ বলেন, বিষ্ণুপুর অঞ্চলে বিজেপির সংগঠন খুব মজবুত। বিধান সভার আগে তৃণমূল চক্রান্ত করে পুলিশকে ব্যবহার করে আমাদের কর্মীদের মিথ্যে মামলায় গ্রেপ্তার করাচ্ছে।

একই রাতে দুই মন্দির সহ তিন চুরি, বামাল পাকড়াও চোর
পরের দিনই ভোরেই সবং বাজারের ওপর এবং পাশে একই সাথে দুটি মন্দির ও একটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। পুরানো বিডিও অফিসের সামনে শনি-কালি মন্দিরের তালার চেন কেটে দেবী প্রতিমার সোনার চোখ, গহনা, বাসনপত্র নেওয়ার পর চোরের দল অভিযান চালায় অদুরেই একটি পারিবারিক শিব মন্দিরে। সেখান থেকে লুট করা হয় প্রনামী বাক্স। চোরের দল অভিযান চালায় ওই এলাকারই শঙ্কর হাতি বলে এক গৃহস্থের বাড়িতে। সেখানেও আলমারি ভেঙে সোনার গহনা নিয়ে পালায় চোরের দল। সবং থেকে তেমাথানির দিকে যাওয়ার সময় প্রাতঃভ্রমনকারিরা দেখতে পায় ৫ জন অজ্ঞাত পরিচয় পথচারীকে। ওই প্রাতঃভ্রমন কারিদের কাছ থেকেই খবর পেয়ে কয়েকজন যুবক একজন চোরকে বামাল পাকড়াও করলেও বাকি ৪জন পালিয়ে যায়। পরে ওই ব্যক্তিকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

অযৌক্তিক হেনস্থার মুখে শিক্ষক
পরের ঘটনা মোহাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের বিহারীচক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। স্কুলটিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছিল। স্যানেটাইজ করা হয়নি বলে স্কুলের পাশেই একটি বাড়ি থেকে অভিভাবকদের মিড-ডে-মিলের সরঞ্জাম বিতরন করার সময় হঠাৎই একদল মানুষ জড়ো হয়। তারা দাবি করে, স্কুলে এই বিতরণের কাজ না করে কেন তিনি অন্যের বাড়িতে বসে এই প্রশ্ন তুলে চূড়ান্ত হেনস্থা করা হয়। ওই পরিবারকে বাড়তি চাল আলু ইত্যাদি পাচার করে দেওয়া হয় এই দাবি তুলে মারধর করা হয় শিক্ষককে পরে একটি গাড়িতে তুলে তাঁকে থানায় নিয়ে আসা হয়। যদিও এই অভিযোগের কোনও সারবত্তা পাওয়া যায়নি। শিক্ষককে ছেড়ে দেয় থানা। কাদের মদতে এই ঘটনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

RELATED ARTICLES

Most Popular