Homeআবহাওয়াবৃষ্টি থামলেও ব্যারেজের জলে দুর্ভোগ বাড়ছে ঘাটাল মহকুমার! চন্দ্রকোনা-ঘাটাল রাজ্য সড়ক জলে...

বৃষ্টি থামলেও ব্যারেজের জলে দুর্ভোগ বাড়ছে ঘাটাল মহকুমার! চন্দ্রকোনা-ঘাটাল রাজ্য সড়ক জলে ডুবে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কায়

জলের তলায় ঘাটাল থানা

নিজস্ব সংবাদদাতা: সাবেক ঘাটালের একটি প্রাচীন প্রবাদ আছে, ‘আল্লা যদিও দেয়, চক-লছিপুর আটকে দেয়।’ সে যুগে বৃষ্টির জল যে খাল দিয়ে বয়ে আসত তারই মধ্যবর্তী একটি উচ্চ অববাহিকার গ্রামের নাম চক-লছিপুর। বৃষ্টির জন্য হা পিত্যেশ করে বসে থাকা চাষিরা বৃষ্টি হলেও শঙ্কায় থাকত কারন চক-লছিপুর গ্রামের বাসিন্দারা নাকি খালের জল আটকে রাখতেন নিজেদের জন্য। সেই থেকে এই প্রবাদ ঘাটালের দুর্ভাগ্যের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। আর এখন সেই প্রবাদের কথাই মনে পড়ছে ঘাটাল মহকুমার। বৃষ্টি হয়নি প্রায় ৩৬ ঘন্টা। তাই স্বস্তি পাওয়ার ছিল কিন্তু স্বস্তি দিচ্ছেনা ব্যারেজের ছাড়া জল। ডিভিসির বিভিন্ন ব্যারেজ থেকে ছাড়া জলে ঘাটাল মহকুমার একাধিক নদীতে জলস্ফীতি এবং একের পর এক জায়গায় নদী বাঁধ ভেঙে নতুন করে প্লাবিত একের পর এক গ্রাম,জলবন্দি বহু মানুষ।

ডুবল ঘাটাল চন্দ্রকোনা রাজ্য সড়ক

শনিবার এমনই ছবি দেখা গেলো পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা,ঘাটাল জুড়ে।চন্দ্রকোনা ২ ব্লকে ৩ টি ও চন্দ্রকোনা ১ ব্লকে ৩ টি মিলে মোট ৬ টি জায়গায় শিলাবতী ও কেঠিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে একাধিক গ্রাম।চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের ভগবন্তপুর ১,ভগবন্তপুর ২,বসনছোড়া ও বান্দিপুর ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তৃর্ণ এলাকা জলবন্দি,অপরদিকে চন্দ্রকোনা ১ ব্লকের মনোহরপুর ১,মনোহরপুর ২ ও মানিককুন্ডু গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তৃর্ণ এলাকা জলের তলায়,নদীর জল বাড়ায় চন্দ্রকোনা ১ ব্লকের মাংরুল গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশকিছু এলাকায় নতুন করে জল ঢুকতে শুরু করেছে বলে স্থানীয় ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানাযায়।

আরও নৌকা নামল ঘাটালে

পাশাপাশি ফের একবার বন্যা পরিস্থিতি ঘাটাল পুরসভা ও গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। শিলাবতী ও ঝুমি নদীর জলে ইতিমধ্যে প্লাবিত ঘাটাল পৌরসভার ১৭ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২ টি ওয়ার্ড, ঘাটাল ব্লকের ১৩ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৮ টিতে জল ঢুকে জলবন্দি সাধারন মানুষ। ঘাটাল পৌরসভার বিবেকানন্দ মোড় থেকে কুঠিবাজার যাওয়ার রাস্তা জলমগ্ন,ওই রাস্তায় নৌকায় চলছে যাতায়াত। জল ঢুকে পড়েছে ঘাটাল থানায়।ফলে অস্থায়ী ভাবে ভাড়া বাড়িতে অন্যত্র সরানো হচ্ছে ঘাটাল থানাকে।ঘাটাল পৌরসভার বিবেকানন্দ মোড়ে একটি ভাড়া বাড়িতে আপাতত চলবে ঘাটাল থানার কাজকর্ম।

জল যন্ত্রনা

বাঁকুড়া,পুরুলিয়ায় প্রবল বর্ষণ এবং গতকাল দূর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ায় সেই জল গড়বেতা হয়ে শিলাবতী নদী বেয়ে চন্দ্রকোনা,ঘাটাল ও দাসপুরে প্রবেশ করছে,ফলে দুঃশ্চিন্তা বাড়ছে ঘাটাল চন্দ্রকোনার বাসিন্দাদের।
নদীর জলে ডুবলো ঘাটাল-চন্দ্রকোনা ৪ নং রাজ্যসড়ক,যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা।
অন্যদিকে ঘাটাল চন্দ্রকোনার মধ্যে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ ৪ নং রাজ্যসড়কের বেশ কয়েকটি জলে ডুবে গেছে।ঘাটালের বরদা বাণীপীঠ থেকে রানিরবাজার পর্যন্ত প্রায় ১ কিমি রাস্তা জলে ডুবে,যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে রাজ্যসড়কে।যদিও ঝুঁকি নিয়ে বেশ কয়েকটি দূরপাল্লার যাত্রীবাহী গাড়ি যাতায়াত করলেও মোটরবাইক ও ছোট চার চাকার গাড়ি একেবারে যাতায়াত করছে না।এই রাজ্যসড়কের উপর দিয়ে যাতায়াত একদিকে ঘাটাল,চন্দ্রকোনা,ক্ষীরপাই হয়ে হুগলির আরামবাগ,অপরদিকে চন্দ্রকোনা থেকে ঘাটাল হয়ে দাসপুর,মেছোগ্রাম সহ কলকাতার সংযোগস্থল এই রাজ্যসড়কের।জল দ্রুতগতিতে বাড়ছে শিলাবতী নদীতে,কিছুক্ষণের মধ্যেই সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

RELATED ARTICLES

Most Popular