Homeএখন খবরমায়ের লালসা থেকে বাঁচতে নিজেকেই শেষ করে দিল মেয়ে

মায়ের লালসা থেকে বাঁচতে নিজেকেই শেষ করে দিল মেয়ে

অশ্লেষা চৌধুরী: গতকাল বর্ধমানের পর আজ মালদা। নিজের মেয়েকেই বিক্রি করে দেহ ব্যবসার কাজে লিপ্ত করার অভিযোগ উঠল মায়ের বিরুদ্ধে। অপমানে লজ্জায় দুঃখে আত্মঘাতী মেয়ে।
“কুপুত্র যদিও বা হয়, কুমাতা কখনও নয়” খুবই চেনা পরিচিত প্রবাদ বাক্য। তবে বর্তমান যুগে কুমাতার দেখাই যেন মিলছে চতুর্দিকে। নিজের মেয়েকেই দেহ ব্যবসার কাজে নিযুক্ত করতে চেয়েছিলেন মা, আর সেজন্যই তাঁকে বিক্রি করে দিল্লী নিয়ে যাওয়ার ফাঁদ পেতেছিলেন তিনি।

মায়ের অভিসন্ধি বুঝতে পেরে মেয়ে যেতে অস্বীকার করে। আর তাতেই বেজায় রেগে যায় মা। রেগে গিয়ে মেয়ের ওপর চলে অকথ্য অত্যাচার, মারধর। এমনকি তাঁকে ঘরে তালা বন্দ করেও রাখা হয়। এরপরেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে মেয়ে। ঘটনাটি ঘটেছে মালদার চাঁচোল থানার বুজরুক শীতলপুর গ্রামে।
এদিকে ঘটনা জানাজানি হতেই ওই মায়ের ওপর বেজায় চটে যান গ্রামের বাসিন্দারা। তারা ওই মাকে ধরে হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখেন। খবর যায় থানায়। পুলিশ এসে মাকে আটক করে নিয়ে যায় এবং মৃত মেয়ের দেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়ে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম শিবানী দাস, তার বয়স ১৯ বছর। অভিযুক্ত মায়ের নাম লক্ষ্মী দাস। লক্ষ্মী দিল্লীতে কাজ করেন। মৃতার এক আত্মীয় রাজু দাস জানান, লক্ষ্মী দাসের দুই মেয়ে এবং তারা দুজনেই বিবাহিতা। শিবানী ছোট মেয়ে। মাত্র তিন মাস আগেই পাশের গ্রামের বাসিন্দা মহাবীর দাসের সঙ্গে শিবানীর বিয়ে হয়। সম্প্রতি লক্ষ্মী দিল্লী থেকে চাঁচোলে গ্রামের বাড়ীতে ফিরলে শনিবার শিবানী মায়ের সাথে দেখা করার জন্য আসে।

এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, লক্ষ্মী দাস দীর্ঘদিন থেকেই দেহ ব্যবসার সাথে যুক্ত। সে বিভিন্ন জায়গা থেকে মেয়েদের দিল্লী নিয়ে যেত দেহ ব্যবসার জন্য। সে নিজেও ওই পেশায় জড়িত। তাকে অনেকবার এই ব্যবসা থেকে সরে আসার জন্য পরিবারের লোক সহ অন্যেরা বলেও সে নিজের সিদ্ধান্তে অনড়, কিছুতেই এই ব্যবসা থেকে নিজেকে দূরে করতে চায় না সে। আর এদিন সে চরম কাণ্ড ঘটিয়ে বসে।

অন্যান্য মেয়েদের মতো নিজের ছোট মেয়েকেই দেহ ব্যবসার জন্য দিল্লী নিয়ে যাওয়ার ফন্দি আঁটে লক্ষ্মী। তাঁকে স্বামীর বাড়ী ফিরে যেতে বাধা দেয়। মায়ের জঘন্য অভিসন্ধি টের পেয়ে বাড়ী থেকে পালিয়ে যেতে চায় সে। তখন বলপূর্বক শিবানীকে ধরে মারধর করে ঘরে তালা বন্দ করে রাখে মা লক্ষ্মী। এরপরই নিজের ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে শিবানী। ঘটনার খবর পেয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করে চাঁচল থানার পুলিশ।

প্রসঙ্গত, গতকাল বর্ধমান থেকে এমনই এক কুমাতার কুকীর্তি সামনে এসেছিল। সামান্য টাকার বিনিময়ে তিনি নিজের মেয়ে-জামাইয়ের ঘনিষ্ট মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করতেন। আর সেনার ভুয়ো পরিচয় দেওয়া জামাইয়ের সাথে হাত মিলিয়ে নিজের মেয়েরই সর্বনাশ করার নেশায় মেতে ওঠেন। তবে ওই তরুণী নিজের অদম্য সাহসের জোরে সেই জাল থেকে বেরিয়ে এলেও আজ শিবানী তা পেরে ওঠে না। বাধ্য হয়ে নিজেকে মৃত্যুর কাছে সঁপে দেয় সে।

RELATED ARTICLES

Most Popular