Homeঅন্যান্যকোনও আইনি ব্যবস্থা নয়! চাপে পড়ে রামদেবকে শুধুই মন্তব্য প্রত্যাহারের জন্য চিঠি...

কোনও আইনি ব্যবস্থা নয়! চাপে পড়ে রামদেবকে শুধুই মন্তব্য প্রত্যাহারের জন্য চিঠি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

নিজস্ব সংবাদদাতা: একাধিকবার জালিয়াতিতে অভিযুক্ত হয়েছেন তিনি। আয়ুর্বেদের নাম করে নিজের ব্যবসার জন্য ভ্রান্ত বিজ্ঞাপন থেকে, জাল দ্রব্য বিক্রি সহ নানা বিষয়ে অভিযুক্ত তিনি। করোনা নিরাময়ের ওষুধ বের করেছেন বলে অবৈজ্ঞানিক দাবি করে সমালোচনার মুখে পিছিয়ে এসেছেন। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে কোনোও জোরালো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি কারন তিনি রাজনৈতিক ভাবে তিনি শাসক ঘনিষ্ট।

কিন্তু এবার যা করেছেন তা রীতিমত কুৎসা। নিজের ব্যবসা বাড়াতে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার সুখ্যাতি করতে গিয়ে আধুনিক এবং অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে কুৎসা করেছে রামদেব! আর তাই নিয়ে গোটা দেশ ইতিমধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। যে হাজার হাজার চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী জীবন উৎসর্গ করেছেন করোনা অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াইতে তাঁদের রীতিমত অসম্মান করেছেন এই যোগ ব্যবসায়ী। তাই দাবি উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে মহামারি আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। দেশজোড়া সেই বিতর্কের চাপে পড়ে রামদেবকে ‘কড়া’ চিঠি দিয়ে তাঁর মন্তব্য প্রত্যাহার করার জন্য বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক ডঃ হর্ষবর্ধনের।

সংবাদসংস্থা এএনআই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ওই চিঠিটি টুইটও করে। তাতে হর্ষবর্ধন লিখেছেন, “অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসাকে অসম্মান করে আপনি যে বক্তব্য রেখেছেন তা দেশের মানুষকে ব্যথিত করেছে। আপনাকে ফোনেও সেকথা জানিয়েছি। আপনার বক্তব্য দেশের হাজার হাজার চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য অপমানজনক। এঁরা প্রত্যেকেই দেশের মানুষদের কাছে ভগবানস্বরূপ। এঁরা প্রত্যেকেই নিজেদের জীবন বিপন্ন করে দেশের মানুষের প্রাণ বাঁচানোর জন্য দিনরাত এক করে দিয়েছেন। তাই আপনি শুধু করোনা যোদ্ধাদের অসম্মান করেননি, দেশের মানুষের ভাবাবেগেও আঘাত করেছেন। গতকাল আপনি নিজের বক্তব্যের জন্য যে যুক্তি দিয়েছিলেন, তা যথেষ্ট নয়। আশা করি আপনি বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করবেন এবং নিজের এই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেবেন।”

উল্লেখ্য সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল এক ভিডিওতে যোগগুরুকে বলতে শোনা গিয়েছিল,”অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা আসলে বোকামি। চিকিৎসার নামে তামাশা চলে। লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যাচ্ছে শুধুমাত্র অ্যালোপ্যাথি ওষুধ খেয়ে।” আয়ুর্বেদিক ব্যবসায়ী রামদেবের দাবি, করোনার বিরুদ্ধে একের পর এক অ্যালোপ্যাথি ওষুধ ব্যর্থ হচ্ছে কারণ, ওই চিকিৎসাপদ্ধতিতে রোগের আসল কারণ অনুসন্ধানই করা হয় না। যদিও দেশ জোড়া বিতর্ক শুরু হতেই পিছু হটেছে রামদেবের ব্যবসায়িক সংস্থা পতঞ্জলি। সংস্থার দাবি, এটা একটা গোপন বৈঠক ছিল। আর স্বামীজি হোয়াটসঅ্যাপে আসা একটি মেসেজ সকলকে পড়ে শোনাচ্ছিলেন শুধু। তাঁর এই ভিডিও সম্পাদিত এবং ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। কিন্তু তাতে চিড়ে ভেজেনি। এরপর দেশের অন্যতম বৃহৎ চিকিৎসক সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল এ্যশোসিয়েশন (আইএমএ) রামদেবের এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করে।

চিকিৎসকদের সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়, রামদেব নিজের সংস্থার বিভিন্ন পণ্যের বিষয়ে মিথ্যা প্রচার চালিয়ে মানুষজনকে বিভ্রান্ত করেন। করোনিল এবং স্বসারি ওষুধের প্রসঙ্গ টেনে আইএমএ’র বক্তব্য, কঠিন পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে রামদেব সবাইকে বোকা বানিয়ে অর্থ উপার্জনের পথ খুঁজছেন। চিকিৎসকদের ওই সংগঠনের সাফ কথা, হয় রামদেবের বিরুদ্ধে মহামারী আইনের ৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী মামলা করা হোক। আর নাহয় ওঁর কথা শুনে দেশের আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা বন্ধ কওরে দেওয়া হোক। এরপরই প্রেক্ষিতেই রামদেবকে ২পাতার একটি চিঠি লিখে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার মন্তব্য প্রত্যাহার করতে বলেছেন বলেই জানা গেছে। উল্লেখ্য এর আগে তাঁর প্রতিষ্ঠানের ওষুধ করোনিলে করোনা সেরে যায় বলে দাবি করে জোর ধাক্কা খান তিনি। পরে ওই দাবি প্রত্যাহার করে নেন

RELATED ARTICLES

Most Popular