Homeএখন খবরমেদিনীপুরে গ্রামে ফিরেই বর্বরোচিত আক্রমনের শিকার করোনা যোদ্ধারা, কাজ বন্ধ করে দিলেন...

মেদিনীপুরে গ্রামে ফিরেই বর্বরোচিত আক্রমনের শিকার করোনা যোদ্ধারা, কাজ বন্ধ করে দিলেন হাসপাতালের কর্মীরা

নিজস্ব সংবাদদাতা; মেদিনীপুর: ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও শিকেয় উঠেছে করোনা সচেতনতা। দিন রাত যাঁরা করোনা আক্রান্তদের সেবায় নিয়োজিত করেছেন তাঁদেরই বেধড়ক মার খেতে হল নিজেদেরই গ্রামের কিছু লোকজনদের হাতে। ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী। আক্রমণকারীদের হাত থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের রক্ষা করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে। ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে মেদিনীপুর শহরের করোনা হাসপাতালে। সমস্ত পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছেন ৬০জন স্বাস্থ্যকর্মী।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার বিকালে মেদিনীপুর কোতয়ালি থানার অন্তর্গত কুলদা গ্রামে। মেদিনীপুর শহরের করোনা হাসপাতালে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে যারা কাজ করেন তাঁদের বেশিরভাগই মেদিনীপুর সদর ব্লকের কুলদা এলাকার। করোনা হাসপাতালে কাজ করার জন্য এই কুলদা গ্রামের কিছু পরিবারকে সামাজিক বয়কট করা হয়েছিল। পুলিশ, প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তরের উদ্যোগে আলোচনা করে সেই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হলেও আদতে যে তার সমাধান হয়নি তা প্রমাণ হয়ে গেল বৃহস্পতিবার।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় পনেরো দিন বাদে বৃহস্পতিবারই ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়ি ফিরেছিলেন করোনা হাসপাতালের কয়েকজন কর্মী বাড়ি। তাতেই আপত্তি জানায় গ্রামের কিছু মানুষ। সেই ব্যক্তিরা জানান, তাঁদের গ্রামে থাকতে দেওয়া হবেনা। আক্রান্ত এক স্বাস্থ্যকর্মী শেখ সাহাজুদ্দিন বলেন, “গ্রামে ঢুকতেই ওরা কয়েকজন আমাদের ঘিরে ধরে। বলে গ্রামে ঢোকা যাবেনা। আমরা বলি কেন গ্রামে থাকতে পারবনা? বচসা শুরু হয়ে যায়। এরমধ্যেই ওরা লাঠি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমাকে মারার পাশাপাশি হুশেন আলি, হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষী সাত্তার এবং তাঁর মা’কে মারধোর করেছে। ওদের দাবি গ্রামে থাকতে হলে হাসপাতালের কাজ ছাড়তে হবে।”

হাসপাতালে অস্থায়ী কর্মী সরবরাহকারী ঠিকাদার শেখ জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘গ্রামের জনা পাঁচেক ছেলে শেখ নাসের আলি, শেখ লুকুমুদ্দিন, হাজাঙ্গীর, শেখ ইমামুদ্দিন এরাই প্রতিবার গোলমাল করছে। তিনি বলেন, যারা জীবন বাজি রেখে করোনা হাসপাতালে পরিষেবা দিচ্ছেন তাঁদেরকে এভাবে হেনস্থা করলে সমস্যা হবে।”
জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গি বলেন, ঘটনার কথা শুনেছি। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। পুলিশ নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে। হাসপাতালের কর্মীরা কাজ বন্ধ করে দিলে রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হবে। আমরা কর্মীদের সঙ্গেও কথা বলছি, যাতে পরিষেবা চালু থাকে।’

ঘটনায় এক মহিলা সমেত চারজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। ঘটনার খবর আসার পরই মেদিনীপুর করোনা হাসপাতালে কাজ বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন ৫০ জনেরও বেশি অস্থায়ী কর্মী। দোষীদের গ্রেপ্তার না করা অবধি তাঁরা কেউই কাজ করবেননা বলে জানিয়েছেন।

RELATED ARTICLES

Most Popular