Homeএখন খবরহিজলীতে এসে পৌঁছাল শ্রমিক স্পেশাল,পরিবহন দপ্তরের অব্যবস্থা, হল থার্মাল স্ক্রিনিং, তাল কাটল...

হিজলীতে এসে পৌঁছাল শ্রমিক স্পেশাল,পরিবহন দপ্তরের অব্যবস্থা, হল থার্মাল স্ক্রিনিং, তাল কাটল সেই সোশ্যাল ডিস্টেন্সেরই

নিজস্ব সংবাদদাতা: পুলিশের হিসেব ছিল তিন ঘন্টায় বাসে তুলে দেওয়া যাবে ২১টা জেলার ১৫২১ জন যাত্রীকে কিন্তু পরিবহন দপ্তরের কর্মীদের সঠিক পরিকল্পনার অভাবে তা সম্ভব হলনা, ট্রেন থেকে নেমে সমস্ত আনুসাঙ্গিক মিটিয়ে যাত্রীরা এ বাস ও বাস করে ছোটাছুটি করলেন। একবার এ গলিতে যান তো আরেকবার ওই গলিতে। লটবহর নিয়ে হেঁচড়াতে হেঁচড়াতে জান কাবার হবার অবস্থা। প্রশাসনের তরফে শুরু থেকেই একটা বোঝাপড়ার সমস্যা ছিল। বলা হয়েছিল ৫টি জেলার ১২০৭ জন আসবে কিন্তু পরে জানা গেল আসছে ২১টি জেলার ১৫২১ জন। প্রায় ৫০টি বাসের ব্যবস্থা ছিল কিন্তু হিজলী স্টেশনের সামনে অত জায়গা নেই তাই এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে বাস। একবার এদিক আর একবার ওদিক করতেই কালঘাম ছুটল দক্ষিন থেকে এসে পৌঁছনো যাত্রীদের।

ভেলোর থেকে ট্রেন এসে পৌঁছেছিল মোটামুটি দুপুর ৩টা নাগাদই। ট্রেন থেকে নামার পর যাত্রীদের ফুল, চকলেট ইত্যাদি নিয়ে বরন করা। হাজির ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শাসক রশ্মি কমল, পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার, মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ হাজরা, তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি, খড়গপুর শহর ও গ্রামীনের বিধায়ক প্রদীপ সরকার, দীনেন রায় সহ একাধিক ব্যক্তিত্ব। এক সঙ্গে এতজনের একই সাথে উপস্থিতি এবং সবাই মিলে যাত্রীদের বরন করার জন্য গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়ানো নিশ্চিত ভাবেই সোশ্যাল ডিস্টেন্সের পর্দাফাই করেই ছেড়েছে। অথচ দু’দিন আগেই প্ল্যাটফর্ম পরিদর্শন ও একদিন আগে মহড়া দেওয়ার সময় প্ল্যাটফর্মে গন্ডি কেটে সোশ্যাল ডিস্টেন্স মানার জন্য ব্যবস্থা করেছিল পুলিশই। তারকার ভিড়ে সব শৃঙ্খলা হারিয়ে গেল! নেতা আর মন্ত্রীদের বোঝানো দায় যে যেভাবে তাঁরা আপাদমস্তক পিপিই আর মুখে মাস্ক ঢেকে ছিলেন তাতে কারুরই তাঁদের চেনার কথা নয়।

প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরুনোর পর সবারই নাম ধাম রেজিস্টার করার পর থার্মাল চেকিং করা হয়। উপসর্গ আছে এমন ব্যক্তিদের আলাদা করে মুখের লালারস পরীক্ষা করার জন্য নিজ নিজ জেলার স্বাস্থ্যদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের ক্ষেত্রে মেদিনীপুর আয়ুস, খড়গপুর মহকুমা হাসপাতাল ও বেলদা হাসপাতালে যেতে হবে এঁদের। এঁদের মধ্যে খড়গপুরের ৭ জন রয়েছেন যাঁদের উপসর্গ রয়েছে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সমস্যা বাধে এরপরই। নির্দিষ্ট বাসের জন্য যাত্রীদের ছুটতে হয় এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়। কোন জেলার বাস, কত নম্বর বাস কোথায় দাঁড়িয়ে বলতে পারছেন না পরিবহন দপ্তরের কর্মীরা। বাসগুলি যেখানে যেমন পেরেছে দাঁড়িয়েছে। কোথাও কোথাও স্টেশন চত্বর থেকে তার দুরত্ব ৫০০মিটার। অনেককেই দেখা গেছে এ প্রান্তের একদিক থেকে ওপ্রান্তের অন্যদিক অবধি বাস খুঁজে বেড়াতে। এক সময় ক্ষোভ ঝরে পড়তে দেখা গেছে তাঁদের গলায়। ক্ষুব্ধ পুলিশও তিন ঘন্টার প্রক্রিয়া ছাড়িয়ে গেছে ৫ঘন্টা।
সব শেষে অবশ্য স্বস্তি। ৫০ দিনেরও বেশি সময় ভিন রাজ্যে আটকে থেকে রাজ্যের মাটিতে পা রেখেছেন তাঁরা। খড়গপুর পৌরসভার  দাবি সমস্ত যাত্রীদের জন্য চকলেট ও ১৭দিন বাড়িতে গিয়ে কোয়ারেন্টাইনে থাকার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা তুলে দিয়েছে সবার হাতে। যদিও দিনের শেষে দেখা গেল অধিকাংশ ফুল আর চকলেট পড়েই রয়েছে। নেতা মন্ত্রী প্রশাসকদের টোকেন সম্বর্ধনার পর বাকিটা দিতে ভুলে গেছেন কর্মীরা।

RELATED ARTICLES

Most Popular