Homeএখন খবরউচ্চমাধ্যমিকে একশো শতাংশকে পাশ করানোর প্রক্রিয়া শুরু! ভুল করেছি আমরাই, মুচলেকা দেবে...

উচ্চমাধ্যমিকে একশো শতাংশকে পাশ করানোর প্রক্রিয়া শুরু! ভুল করেছি আমরাই, মুচলেকা দেবে স্কুল, প্রতিবাদ প্রধান শিক্ষক সংগঠনের

নিজস্ব সংবাদদাতা: জয় হল বিক্ষোভ, জয় হল ভাঙচুরের। মাধ্যমিকের মতই এবার ১০০শতাংশ পরীক্ষার্থীকেই পাশ করানোর পথে হাঁটছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। গত বৃহস্পতিবার উচ্চমাধ্যমিককের ফলাফল বেরুনোর পর উত্তাল হয়েছিল রাজ্যের বিভিন্ন স্কুল প্রাঙ্গণ। অকৃতকার্য পড়ুয়াদের প্রশ্ন ছিল যদি পরীক্ষাই না হয় তবে ফেল করানো কিসের জন্য? বিক্ষোভের পাশাপাশি চলে ভাঙচুর, অবরোধ, আগুন লাগানোর মত ঘটনাও। সংসদের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। লাগাতার সেই বিক্ষোভ আর সরকারের চাপে জেরেই এবার পিছু হটল সংসদ। উল্লেখ্য করোনা সতর্কতায় এবার দুটি পরীক্ষাই হয়নি। আগের পরীক্ষাগুলিতে পাওয়া নম্বরের ভিত্তিতে বিকল্প মূল্যায়ন করে ফল প্রকাশ করা হয়। মাধ্যমিকের সবাই পাশ করলেও উচ্চমাধ্যমিকে দেখা যায় প্রায় কুড়ি হাজার ছাত্র-ছাত্রী ফেল করেছেন।

জানা গেছে মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মহুয়া দাসকে তলব করেন। বৈঠক শেষে সংসদ সভাপতি জানিয়েছেন, দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে। সংসদ সূত্রে খবর, সমস্ত ফেল করা ছাত্র ছাত্রীকে পাশ করিয়ে দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, গত শনিবার নবান্নে তলব করা হয়েছিল স্কুল শিক্ষা দপ্তরের সচিব ও সংসদ সভাপতিকে। মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন তাঁরা। এরপর শিক্ষা সচিব উচ্চ মাধ্যমিক ফল বিভ্রাট ইস্যুতে বিক্ষোভ ইত্যাদি সামাল দিতে জেলাশাসক থেকে শুরু করে বিডিওদের মাঠে নামার নির্দেশ দেওয়া হয়।

এদিকে সংসদ একটি নির্দেশিকা পাঠিয়ে জানিয়েছে, ২৯ জুলাই-এর মধ্যে অসন্তুষ্ট ছাত্র-ছাত্রীদের আবেদন নিয়ে স্কুলগুলিকে আসতে হবে। ৩০ জুলাই থেকে নতুন মার্কশিট পাবেন পড়ুয়ারা। ইতিমধ্যে একটি ছাপানো মুচলেকা ডিআইদের মাধ্যমে স্কুল কর্তৃপক্ষের থেকে সই করিয়ে নিচ্ছে সংসদ। মুচলেকায় প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা বা টিচার ইনচার্জদের জানাতে হচ্ছে, “আমাদের ত্রুটির কারণেই কিছু ছাত্র-ছাত্রীর ভুল নম্বর এসেছে। তার জন্য আমরা ক্ষমা চাইছি। দয়া করে নতুন মার্কশিট দেওয়া হোক।”
যদিও স্কুলের তরফে এই মুচলেকা দেওয়ার বিষয়টিতে প্রবল আপত্তি জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকাদের একটি সংগঠন। মঙ্গলবার সংসদের পক্ষ থেকে স্কুল প্রদ প্রধানদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মহুয়াদেবী। ছাপানো মুচলেকার বিরোধিতা করে প্রধান শিক্ষকদের একটি সংগঠন। সেখানেই তাঁরা তাঁদের মতামত জানিয়েছেন। রাজ্য স্কুলগুলির প্রধানদের নিয়ে গঠিত ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার এন্ড হেড মিস্ট্রেস’ এর সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, কোনও কোনও স্কুল হয়ত একাদশের নম্বর পাঠাতে ভুল করেছে। কিন্তু সবাইকেই মুচলেকায় সই করানো ঠিক নয়। পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের ক্ষোভে স্কুলগুলির আসবাব ও সম্পত্তির যে ক্ষতি হয়েছে তার দায় সংসদকে নেওয়ার দাবি করে অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার এন্ড হেড মিস্ট্রেস।
পাশাপাশি ইতিমধ্যে একাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা নিয়েছিল সংসদ। তার মার্কশিট প্রকাশের দায়িত্বও তাদের নেওয়ার দাবি জানিয়েছে প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন।  শিক্ষকদের একটি অংশ জানিয়েছেন, গলদ ছিল সংসদের মূল্যায়ন পদ্ধতিতেই আর তার দায় এখন স্কুলের দায় বলে চালানো হচ্ছে আর এরফলে ছাত্রছাত্রীদের ধারণা হবে যে দোষটা স্কুলেরই ছিল যা আদতেই স্কুলের ছিলনা।

RELATED ARTICLES

Most Popular