Homeরাজ্যউত্তরবঙ্গবলিউডি কায়দায় মেয়ের প্রেমিককে ফাঁসিয়ে অপমান, মালদায় আত্মঘাতী উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী

বলিউডি কায়দায় মেয়ের প্রেমিককে ফাঁসিয়ে অপমান, মালদায় আত্মঘাতী উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী

নিজস্ব সংবাদদাতা: বড়লোক বাবার মেয়েকে ভালোবাসার পরিনতি প্রান দিয়ে চুকালো এক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। একেবারে হিন্দি সিনেমার মতই ঘটনা। মেয়ের প্রেমিককে কোনও কিছুতে ফাঁসিয়ে, রাস্তা থেকে সরি দেওয়া। তবে সিনেমায় যেমন নায়ক বেঁচে যায়, এক্ষেত্রে তা হয়নি, বাস্তবে তা হয়ওনা। যেমন টা হয়নি রিজাউনের বেলায় ঠিক তেমনটাই হলনা এই তরুন প্রেমিকের ক্ষেত্রেও। অত্যাচার আর অপমানের ধকল সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করল বেচারি কিশোর, এমনটাই অভিযোগ।

ঘটনা মালদা জেলার রাতুয়া থানা এলাকার। এক বড়লোকের মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিল এক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী৷ মেয়ের সঙ্গে তার ভালোবাসা মেনে নিতে পারেনি ওই বড়লোক বাবা। ওই যুবককে শিক্ষা দেওয়ার ফন্দি আঁটছিল সে৷ সুযোগ আসে গত মঙ্গলবার৷ সেদিন সন্ধ্যায় ওই যুবক ওই ব্যক্তির গাছ থেকে কয়েকটি আম খাওয়ার জন্য ভাঙ্গে নেয়। তার জন্য সেই রাতেই ওই যুবকের বাড়িতে দলবল নিয়ে চড়াও হয় গাছের মালিক৷ প্রথমে মারধর, পরদিন গলায় জুতোর মালা পরিয়ে গ্রামে ঘোরানো হয় ওই যুবককে৷ এতেই ক্ষান্ত হয়নি তারা৷ ওই যুবকের মাথা ন্যাড়া করে মুখে চুনকালি লাগিয়ে গ্রামে ঘোরানোর পরিকল্পনাও নেয় তারা। কিন্তু তার আগেই এই অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হয়েছে ওই পরীক্ষার্থী যুবক৷

বৃহস্পতিবার সকালে ঘটেছে রতুয়া থানার দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাকাইয়া ২ নম্বর কলোনি এলাকা থেকে যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ৷ এই ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে রতুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃত যুবকের বাবা লাল মহম্মদ৷অভিযুক্তরা হল, লাল মহম্মদ শামিম আকতার, সাহাবুদ্দিন, সামশেরা বিবি ও সালেমা বিবি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷
মৃতের নাম সাহিন আকতার। বয়স হয়েছিল ১৮ বছর৷ স্থানীয় একটি স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে সে৷ এদিন সকালে ঘরের সিলিং ফ্যানে থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়৷ এরপরেই গোটা এলাকায় প্রবল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে৷ খবর পেয়ে রতুয়া থানার পুলিশ সাহিনের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়৷

সাহিনের আত্মীয় মহম্মদ জালালুদ্দিন, হুমায়ুন রেজাদের অভিযোগ, গত মঙ্গলবার সাহিন এলাকারই এক বাসিন্দা শামিমের গাছ থেকে দু’একটি আম ভাঙে৷ এনিয়ে সেদিন রাতে বাড়িতে এসে তারা সাহিনকে মারধর করে৷ পরদিন জুতোর মালা গলায় পরিয়ে গ্রামে ঘোরায়৷ তারা জানিয়ে দেয়, সাহিনকে নেড়া করে, মুখে চুনকালি লাগিয়ে গ্রামে ঘোরানো হবে৷ বুধবার সন্ধ্যায় শামিমরা এই হুমকি দেয়। তাদের এই বিচার সাহিন না মানলে প্রয়োজনে পাঁচ লাখ টাকা খরচ করেও তারা এই কাজ করবে৷

সাহিনের বাড়ির লোকজন কিংবা আত্মীয়রা কিছু না বললেও এক বন্ধু মহম্মদ সাদিকুল ইসলাম সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, শামিমের মেয়ের সঙ্গে সাহিনের ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল৷ তিনি বলেন, দু’জনের এই সম্পর্ক শামিম মেনে নিতে পারেনি কখনও৷ তারা এর জন্য সাহিনকে এর আগেও হুমকি দিয়েছিল তারা৷ শামিমরা বড়লোক বলে সাহিনকে তারা পছন্দ করত না৷ গত মঙ্গলবার তাদের গাছ থেকে আম ভেঙে, শামিমদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয় সাহিন৷ শমিম নিজের বাড়ি ডাকে সাহিনকে৷ সাহিন তাদের বাড়ি যেতেই তার উপর অত্যাচার শুরু হয়৷ সাহিনের গলায় জুতোর মালা পরিয়ে গ্রামে ঘোরানো হয়৷ তারা তাকে আরও বড় অপমানের জন্য তৈরি হতে বলে৷ এত অপমান সহ্য করতে না পেরে সাহিন শেষ পর্যন্ত আত্মঘাতী হয়েছে৷ এটা খুন৷ আমরা এর বিচার চাই৷

RELATED ARTICLES

Most Popular