Homeঅন্যান্যঅনলাইন ক্লাশে পড়ুয়াকে কদর্য্য গালাগালি,দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড়! আইআইটি খড়গপুরের (IIT-Kharagpur) অধ্যাপিকাকে...

অনলাইন ক্লাশে পড়ুয়াকে কদর্য্য গালাগালি,দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড়! আইআইটি খড়গপুরের (IIT-Kharagpur) অধ্যাপিকাকে বহিস্কার করার দাবিতে গর্জে উঠল আইআইটির ছাত্রসমাজ

The student community of IIT Kharagpur shared the video on the Facebook page and released a statement saying the professor in the video “overreacts a lot in her classes” and “abuses the students and their parents by using words such as ‘Bloody [b*^#@$%!]’ during a class in session in an Institute of Eminence”. “She says she cannot be touched and is above everybody, the Government, the Ministry, the Institute everything,” it said. “She is mentally torturing and abusing the students of prep courses who haven’t even started their college life yet and are still in a learning phase.” The students also demanded that the “professor must be immediately terminated from service”.

নিজস্ব সংবাদদাতা: দেশের গর্বের প্রতিষ্ঠান আইআইটি খড়গপুর (IIT-Kharagpur)। দেশের প্রাচীনতম শ্রেষ্ঠ সেই কারিগরি প্রতিষ্ঠানের এক অধ্যাপিকা অনলাইন ক্লাশ চলাকানীন রেগে ফেটে পড়লেন পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে এবং অত্যন্ত কদর্ষ্য ভাষায় তাঁদের গালাগালি করলেন ‘ব্লাডি বা….’ বলে! সারা দেশ জুড়ে ট্যুইটার, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে ভিডিও। শুধুই চলতি পড়ুয়ারা নয়, আইআইটি খড়গপুরের প্রাক্তনীরা অবধি প্রশ্ন তুলেছেন, আইআইটি খড়গপুরে এসব হচ্ছেটা কী?পুরো ঘটনায় ব্যথিত আইআইটি সমাজ! ছাত্রছাত্রীদের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে ওই অধ্যাপিকার বহিষ্কারের।

ভিডিওটি প্রথম প্রকাশিত হতে দেখা গিয়েছে ফেসবুকের ‘আইআইটি কেজিপি কনফেশন’ (IIT KGP confessions) পেজে। তারপরই তা ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা কিনা শেষ অবধি আইআইটি খড়গপুর (IIT-Kharagpur) প্রাক্তনীদের মধ্যেও প্রকাশিত হয়। ওই ভিডিওতে যে অধ্যাপিকাকে দেখা গেছে তিনি কলা এবং সমাজবিজ্ঞান (humanities and social sciences) বিভাগের সীমা সিং নামেই পরিচিত। যিনি একটি প্রস্তুতি ক্লাশ নিচ্ছিলেন অনলাইনে। যদিও কেন তিনি ওই ‘ব্লাডি বা…’ য়ের মত জঘন্য একটি শব্দ ব্যবহার করলেন তা পরিষ্কার বোঝা যায়নি।

প্রসঙ্গত এই প্রস্তুতি পাঠ (Preparatory class) দেওয়া হয় সমাজের অনগ্রসর শ্রেণী বলে বর্ণিত তফসিলি জাতি এবং উপজাতি অংশের সেই ছাত্রছাত্রীদের জন্য যাঁরা প্রবেশিকা পরীক্ষায়( JEE Advanced)উর্ত্তীণ হয়ে সরাসরি আইআইটিতে ভর্তি হতে পারেননি। এই প্রস্তুতি পরীক্ষার মাধ্যমে তাঁদের পাঠ দেওয়া হয় যাতে পরের বছর তাঁরা পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হতে পারেন। স্বাভাবিকভাবে বিষয়টি ওই শ্রেণীর বিরুদ্ধে ঘৃণা পোষন বা জাতিবিদ্বেষ বলেও পরিগণিত হতে পারে যা ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী মারাত্মক অপরাধ।

ওই ভিডিওতে অধ্যাপিকাকে পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে এই বলে হুমকিও দিতে দেখা গেছে যে ক্লাশের মধ্যে তাঁদের আচরণ নিয়ে তিনি অভিভাবকদের কাছে অভিযোগ জানাবেন।
নিজের নাম গোপন রাখার স্বার্থে ওই ক্লাশে অংশ নেওয়া এক পড়ুয়া সংবাদমাধ্যম ‘দ্য প্রিন্ট’কে জানিয়েছেন, সম্ভবত ওই অধ্যাপিকার মনে হয়েছে যে জাতীয় সঙ্গীত চলার সময় পড়ুয়ারা উঠে দাঁড়ায়নি। ওই পড়ুয়া বলেন, ” অধ্যাপিকা ওই শব্দটি ব্যবহার করেছেন সেই সব পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে যাঁদের তিনি মনে করেছেন যে তাঁরা জাতীয় সঙ্গীত চলার সময় উঠে দাঁড়ায়নি যদিও সবাই-ই উঠে দাঁড়িয়েছিল আর যদি কেউ না দাঁড়ায় তাঁকেও কী এই ‘ব্লাডি বা….’ শব্দ প্রয়োগ করা যায়?”

‘দ্য প্রিন্ট’ দাবি করেছে বিষয়টি নিয়ে তাঁরা অধ্যাপিকাকে ফোন করেছিল এবং টেক্সট ম্যাসেজ পাঠিয়েছিল কিন্তু অধ্যাপিকা সীমা সিংয়ের কাজ থেকে কোনও উত্তর মেলেনি। আইআইটি-খড়গপুর কর্তৃপক্ষরও কোনও জবাব মেলেনি বলে দ্য প্রিন্টের দাবি তারা ডিরেক্টর অধ্যাপক বীরেন্দ্র কুমার তেওয়ারিকেও ফোন করেন কিন্তু ওপ্রান্ত থেকে কোনোও সাড়া মেলেনি। জানা গেছে অধ্যাপক তিওয়ারি ওই সময় ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভার্চুয়াল মিটিং করছিলেন।

আইআইটি খড়গপুরের ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে ফেসবুক পেজে ভিডিওটি প্রকাশ করার সাথে সেখানে অধ্যাপিকার এই আচরণকে তাঁর ক্লাশে অতিরিক্তি এবং অবাঞ্চিত প্রতিক্রিয়া (overreacts a lot in her classes) এবং পড়ুয়া ও তাদের অভিভাবকদের গালাগালি করা হয়েছে বলেই দাবি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘ এই ‘ব্লাডি বা…’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে একটি বিশিষ্ট মানের প্রতিষ্ঠানের ক্লাশ চলাকালীন!

ওই ফেসবুক পোষ্টে দাবি করা হয়েছে অত্যন্ত স্পর্ধিত ভাষায় তিনি বলেছেন, “তাঁকে কেউ ছুঁতেও পারবেনা। না সরকার, না মন্ত্রক (এক্ষেত্রে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক), না আইআইটি।’ পোষ্টে আরও বলা হয়েছে, ‘ উনি মানসিকভাবে হেনস্থা করেছেন, গালাগালি করেছেন সেই সব প্রস্তুতি পাঠের পড়ুয়াদের যারা এখনও তাদের কলেজ জীবনই শুরু করেনি। যারা এখনও শিক্ষার্থী হিসাবেই রয়েছেন।’ এর পরেই ছাত্রছাত্রীদের দাবি, ওই অধ্যাপিকাকে আবশ্যিক এবং অবিলম্বে চাকরি থেকে বহিষ্কার করতে হবে।”

বিভিন্ন পেশার এবং বিভিন্ন প্রকার মানুষ এই ভিডিওটি শেয়ার করেছেন যাঁর মধ্যে অন্যতম হলেন বিশিষ্ট সমাজবিদ সূর্যকান্ত ওয়াঘমোর (Suryakant Waghmore )। ট্যুইট করে তিনি বলেছেন, ” এই অতিমারির সময় শিক্ষকদের পড়ুয়াদের প্রতি আরও স্পর্শকাতর হওয়া উচিৎ এবং সাধারণ ধ্যান ধারণা প্রয়োগ করা উচিৎ। আইআইটি খড়গপুরের একজন ইংরেজী অধ্যাপকের পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে ওই ‘ব্লাডি বা…’ শব্দের ব্যবহার দেখে একজন অধ্যাপক হিসাবে লজ্জায় আমার মাথা নত হয়ে যাচ্ছে।”

অনেকেই বিষয়টিকে তফসিলি জাতি, উপজাতি সম্প্রদায়ের প্রতি ঘৃণাসূচক মনোভাব বলে মনে করেছেন। নিজের একটি ট্যুইট বার্তায় আইআইটি খড়গপুরের ১৯৯৮-৯৯ য়ের প্রস্তুতি ব্যাচের ছাত্র ধীরাজ সিং বলেছেন, “ক্লাশ চলাকালীন ছাত্রছাত্রীদের প্রতি ওই অধ্যাপিকার ব্যবহার রীতিমত ভয়াবহ। আমি অবাক হচ্ছি এই ভেবে যে এটা কী ওই অধ্যাপিকার শুধুমাত্র একটি ক্লাশেরই ঘটনা নাকি উনি সাধারণভাবে এটাই করে থাকেন? এর তদন্ত হওয়া দরকার।”  আইআইটি-ফাইল চিত্র

RELATED ARTICLES

Most Popular