Homeআন্তর্জাতিক৪৫ বছর পর ফের চীন ভারত সীমান্ত সংঘর্ষ, স্রেফ হাতাহাতি আর পাথরবাজিতেই...

৪৫ বছর পর ফের চীন ভারত সীমান্ত সংঘর্ষ, স্রেফ হাতাহাতি আর পাথরবাজিতেই নিহত ২০ ভারতীয় জওয়ান, হতাহত চীনেরও

নিজস্ব সংবাদদাতা: মঙ্গলবার সকালে বলা হয়েছিল তিনজন কিন্তু মঙ্গলবার গভীর রাতে ভারতীয় সেনার পক্ষে বিবৃতি দিয়ে জানানো হল ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়েছে সোমবার রাতে পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় হওয়া চীনের সঙ্গে সংঘর্ষে। এমনটাই জানানো হল সরকারি সূত্রে। চিনের দিকেও কিছু হতাহত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু নির্দিষ্ট সংখ্যা জানা যায়নি। একটি অসমর্থিত সূত্রে চীনের ৫জন সেনার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। আরেকটি সূত্রে বলা হয়েছে চীনের পক্ষে হতাহত ৪০জন।

ভারতীয় সেনার তরফ থেকে বিবৃতিতে বলা হয় যে সংঘর্ষে গুরুতর আহত সতেরোজন সেনা প্রাণ হারিয়েছেন। তারা শূন্য ডিগ্রিরও কম তাপমাত্রায় সেখানে ছিলেন ও পরে মারা যান। অর্থাৎ চিকিৎসার কোনও সুযোগ মেলেনি। মঙ্গলবার সকালে সেনা জানিয়েছিল যে তিনজন মারা গিয়েছেন। সব মিলিয়ে মোট কুড়িজন ভারতীয় সেনা শহিদ হয়েছেন গালওয়ানে হাতাহাতিতে। তবে এখন আর হাতাহাতি চলছে না, ডিসএনগেজড দুই পক্ষ বলে প্রতিরক্ষামন্ত্রক জানিয়েছে।

সবচেয়ে অবাক কান্ড যেটা তা হল কোনও গুলিগোলা চলেনি। দুই দেশের সেনা একে অপরকে পাথর, রড, পেরেক দেওয়া ডাণ্ডা ইত্যাদি দিয়ে আক্রমণ করেছিল। প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে চলে এই হাতাহাতি। সোমবার রাতের ঘটনা নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায় দফায় দফায় বৈঠক হয় মঙ্গলবার।

তিন সেনাপ্রধান, সিডিএস বিপিন রাওয়াত, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর সকালে এক দফা আলোচনা করেন। বিকালে ফের আলোচনা হয় রাজনাথ  সিংয়ের বাড়িতে। এরপর প্রধানমন্ত্রীর আবাসে গিয়ে পুরো বিষয়টি সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেন রাজনাথ সিং। ভারতীয় সীমান্তে চিনের বসানো একটি পোস্ট সরিয়ে দিয়েছিল ভারতীয় সেনা। এই নিয়েই ঝামেলা বলে জানা যাচ্ছে। যারা মারা গিয়েছেন তাদের মধ্যে আছেন কর্নেল সন্তোষ বাবু, যিনি ১৬ বিহার রেজিমেন্টের কম্যান্ডিং অফিসার। এছাড়াও আছেন হাবিলদার কে পালানি ও হাবিলদার সুনীল কুমার ঝা।

এদিন সকালে প্রতিরক্ষামন্ত্রকের সূত্রে বলা হয় যে গালওয়ানে সেনা সরানোর সময় আচমকাই চিনের সেনার সঙ্গে সংঘর্ষ হয় ভারতীয়দের। সেখানেই তিনজন মারা যান। সন্ধ্যেবেলায় অবশ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বিবৃতিতে কিছুটা স্পষ্ট হয় ঘটনাপ্রবাহ।

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার অবস্থান একতরফা ভাবে গালওয়ানে বদলাতে গিয়েছিল চিন। সেখানে বাধা দেয় ভারত। সেই থেকে মারাত্মক সংঘর্ষ হয় বলেই জানায় বিদেশমন্ত্রক। একই সঙ্গে চিনের দাবি যে ভারত এলএসি পেরিয়েছিল সোমবার, এক নয় দুবার, সেটাও উড়িয়ে দেয় নয়াদিল্লি।

চিনের তরফ থেকে বলা হয়েছে ভারতীয় উস্কানির জেরেই সীমান্তে হানাহানি হয়েছে। একই সঙ্গে গালওয়ান উপত্যকা চিরকালই তাদের ছিল বলে দাবি জানিয়েছে চিনের সেনা।
১৯৭৫ সালের পর এই প্রথমবার চিন সীমান্তে ভারতীয় সেনার প্রাণহানি হল। অক্টোবর ১৯৭৫-এ অরুনাচল প্রদেশে চারজন সেনাকে গুলি করে হত্যা করে এক চৈনিক টহলদার বাহিনী।

RELATED ARTICLES

Most Popular