Homeএখন খবরফের অমানবিকতার নজির কলকাতায়! করোনায় নেগেটিভ বৃদ্ধার মৃতদেহ সৎকারে বাধা প্রতিবেশীদের

ফের অমানবিকতার নজির কলকাতায়! করোনায় নেগেটিভ বৃদ্ধার মৃতদেহ সৎকারে বাধা প্রতিবেশীদের

ওয়েব ডেস্ক : করোনা পরিস্থিতিতেও ফের অমানবিকতার নজির খাস কলকাতায়। করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ অথচ তারপরও মৃতদেহ সৎকারে বাধা দিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর জেরে প্রায় ১৮ ঘন্টা বাড়িতেই পড়ে রইলো এক বৃদ্ধার মৃতদেহ৷ বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে বেনিয়াপুকুর থানার ক্রিস্টোফার রোড এলাকায়৷ পরিবারের তরফে বুধবার থেকে স্থানীয় পুরসভা ও প্রশাসনের কাছে একাধিকবার সাহায্য চাওয়া হলে অবশেষে ১৮ ঘন্টা বৃহস্পতিবার সকালে বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা তত্ত্বাবধানে বৃদ্ধার শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করা হয়।

জানা গিয়েছে, বেনিয়াপুকুর থানা এলাকার ক্রিস্টোফার রোডের বাড়িতে বোনের সঙ্গে থাকতেন ৭১ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধা। কিছুদিন যাবত তিনি অসুস্থতায় ভুগছিলেন। শরীরে জ্বর কাশি সহ একাধিক করোনা উপসর্গ থাকায় চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি কিছুদিন আগেই করোনা পরীক্ষা করান। সেসময় তাঁর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপর বাড়িতেই আইসোলেশনে ছিলেন ওই বৃদ্ধা। এমনকি কিছুদিন আগে সম্পূর্ণ সেরেও উঠেছিলেন তিনি। শরীরে সংক্রমণ আছে কিনা তা জানতে ফের পরীক্ষা করা হলে রিপোর্ট এসেছিল নেগেটিভ। কিন্তু তা সত্ত্বেও বার্ধক্যজনিত কারণে অসুখ লেগেই ছিল। এমনকি দিন দিন তাঁর অবস্থা ক্রমশ অবনতি হচ্ছিল। এরপর বুধবার বিকেল ৫টা নাগাদ নিজের বাড়িতেই মৃত্যু হয় ওই বৃদ্ধার।

এদিকে খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান আত্মীয়রা। এরপর নিয়মকাজ সেরে দেহটি শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি করার সময়ই বাঁধে বিপত্তি৷ প্রতিবেশীরা সাফ জানিয়ে দেন, ওই বৃদ্ধা করোনায় আক্রান্ত ছিলেন ফলে কোনো মতেই তারা এভাবে দেহ নিয়ে যেতে দেবেন না৷ সেসময় পরিবারের তরফে বারংবার জানানো হয় যে মৃত বৃদ্ধা কিছুদিন আগেই করোনা থেকে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন, এমনকি তাদের কাছে রিপোর্টও আছে। কিন্তু পরিবারের কথা মানতে নারাজ প্রতিবেশীরা। তাঁরা তাদের দাবিতেই স্থির থাকেন।

এই নিয়ে বুধবার রাত পর্যন্ত দীর্ঘক্ষণ টানাপোড়েনের পর বাধ্য হয় পরিবারের তরফে স্বাস্থ্যভবনে ফোন করা হয়। কিন্তু যেহেতু বৃদ্ধার শেষ করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল, সেহেতু তিনি সংক্রমণমুক্ত হওয়ায় তাঁর দেহ স্বাস্থ্যভবন নেবেন না বলেই জানিয়ে দেন। এরপর যোগাযোগ করা হয় পুলিশে। কিন্তু এবিষয়ে পুলিশ কোনো সাহায্যই করেননি বলে অভিযোগ। এরপর জানানো হয় পুরসভায়। অভিযোগ, প্রশাসনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও আদতে কেউই সাহায্যে এগিয়ে আসেননি। এর জেরে বুধবার বিকেল থেকে পরের দিন সকাল ১১ টা পর্যন্তও দেহ পড়েছিল বাড়িতেই। এরপর বেলায় বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা বৃদ্ধার দেহ দাহের ব্যবস্থা করছেন। করোনা পরিস্থিতি প্রায় প্রতিদিনই গোটা রাজ্যের মানুষকে এমন ঘটনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে মৃতের পরিবারদের। কখনও প্রতিবেশীদের চোখ রাঙানি কখনও আবার স্বাস্থ্যভবন, পুলিশ, প্রশাসনের গড়িমসি, এর জেরে স্বাভাবিকভাবেই নাজেহাল হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

RELATED ARTICLES

Most Popular