Homeএখন খবরঝাড়খণ্ডে তুমুল ধস, বৃহত্তম দলের মর্যাদা খোয়াল বিজেপি

ঝাড়খণ্ডে তুমুল ধস, বৃহত্তম দলের মর্যাদা খোয়াল বিজেপি

রঙ ফিকে হচ্ছে গেরুয়ার, মার্চ ২০১৮ আর ডিসেম্বর ২০১৯

নিত্য গুপ্ত : ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচনে ধরাশায়ী হল বিজেপি আর তারই সঙ্গে বৃহত্তম দলের পালক খসে গেল বিজেপির শরীর থেকে। দেশের ভৌগলিক মানচিত্রের মাত্র ৩৫শতাংশ এখন বিজেপির দখলে যা কিনা ২০১৭সালে ছিল ৭১শতাংশ। অন্যদিকে গত এপ্রিল মে মাসে যেখানে দেশের সম্পুর্ন হিন্দিভাষি এলাকা বিজেপির দখলে ছিল এখন সেখানে বিজেপি সংখ্যালঘু হয়ে পড়ছে। সামনেই দিল্লি আর বিহার বিধানসভার নির্বাচন আর তার আগেই বৃহত্তম চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ল হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
২০১৮সালে মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ে ভোট হারানো শুরু হয়েছিল বিজেপির, সেই ধারা অব্যহত ছিল মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় এবার ঝাড়খণ্ডেও সেই একই প্রবনতা বজায় থাকায় দেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র ৪৩শতাংশ এখন বিজেপির পক্ষে যা কিছুদিন আগে অবধি ৬৯শতাংশে দাঁড়িয়েছিল।

দিল্লিতে জয়ের আভাষ পেয়ে 

সোমবার সকালে ফল বেরনোর শুরুতেই এগিয়ে যায় কংগ্রেস। কিন্তু সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ ঘুরে যায় খেলা। ৪৪টি আসেনি এগিয়ে যায় বিজেপি। কিন্তু এদিন সন্ধে পর্যন্ত অধিকাংশ আসনের ফলাফল সরকারি ভাবে ঘোষিত না হলেও, ব্যবধান থেকে পরিষ্কার, স্পষ্ট জনমত নিয়েই ঝাড়খণ্ডের কুর্সি দখল করছে কংগ্রেস-জেএমএম জোট। সন্ধে পর্যন্ত যা খবর, ৮১ আসনের বিধানসভায় ৪৭টি আসনে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস জোট।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
অনেকের মতে, ঝাড়খণ্ডে বিজেপির হোঁচট খাওয়ার অন্যতম কারণ প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা। ৮১ আসনের রাজ্যের অধিকাংশ জায়গায় আদিবাসীরা একটা বড় কারণ। সেই সমস্ত অঞ্চলে অনুন্নয়নও একটা বড় প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করছেন অনেকে। ঝাড়খণ্ডের বিদায়ী সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন রঘুবর দাস। রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, আদিবাসী অধ্যুষিত রাজ্যে অআদিবাসী একজনকে মুখ করে ভোটে লড়া বিজেপির কাল হয়ে দাঁড়াল। এর আগে অর্জুন মুণ্ডা বসেছিলেন ঝাড়খণ্ডের কুর্সিতে। কিন্তু একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বদলে মুখ করা হয় রঘুবর দাসকে। কিন্তু অনেকের মতে, অর্জুন মুণ্ডা যতটা দাপুটে নেতা ছিলেন, সেই তুলনায় রঘুবর দাস অনেকটাই দুর্বল।

রাঁচিতে উল্লাস 

অথচ লোকসভা ভোটে এই ঝাড়খণ্ডেই ১৪ টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১১টি জিতে নিয়েছিল বিজেপি। তাদের শরিক দল আজসু জিতেছিল ১টি আসনে। যেমন হরিয়ানাতেও লোকসভা ভোটে ক্লিন সুইপ করার পর বিধানসভা ভোটে ধাক্কা খেয়েছিল বিজেপি। ঝাড়খণ্ডেও তাই হল। পর্যবেক্ষকদের মতে, বিজেপির জোটের মধ্যেও ফাটল ধরে গিয়েছিল। আজসু এবং রামবিলাস পাসোয়ানের দল জোট ছেড়ে বেরিয়ে যায়। তার প্রভাবও পড়েছে বলে অনেকের মত।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে বিজেপির প্রথম সারির নেতারা লাগাতার প্রচারে গিয়েছিলেন বিহার ভেঙে তৈরি হওয়া এই ছোট্ট রাজ্যের প্রচারে। সঙ্গে নিয়ে গেছিলেন হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডাই । কিন্তু কংগ্রেস-ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা জোটের কাছে দাঁড়াতেই পারল না গেরুয়া শিবির।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
নির্বাচক বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন, তিন তিনটি হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা তিন তালাক বিল পাশ, রামমন্দিরের জন্য সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি এবং কাশ্মীরে ৩৭০ধারা বিলোপের পরও বিজেপির এই পরাজয় প্রমান করে দিল যে এগুলি দিয়ে মানুষকে ভোলানো যায়নি বরং মানু্ষের দৈনন্দিন জীবন যাপনের অবনয়ন, দ্রব্যমুল্য বৃদ্ধি আর পাহাড় প্রমান বেকারি ও দারিদ্র উঠে এসেছে সামনে। আর এনআরসি বা সংশোধিত নাগরিক আইন কোনটাই বোধহয় সুদ দিতে পারলনা বিজেপিকে। 

RELATED ARTICLES

Most Popular