Homeএখন খবরআদিবাসী পরিবারে অমিত শাহের মধ্যাহ্ন ভোজন সারার কয়েক ঘন্টা আগেই চাকরির নিয়োগপত্র...

আদিবাসী পরিবারে অমিত শাহের মধ্যাহ্ন ভোজন সারার কয়েক ঘন্টা আগেই চাকরির নিয়োগপত্র পেলেন গীতা মাহালি

নিউজ ডেস্ক: ২১ শের নির্বাচনের রণনীতি সাজাতে ও বঙ্গ বিজেপির ক্লাস নিতে দুদিনের বঙ্গ সফরে এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। গতকাল বাঁকুড়ায় বিভীষণের বাড়ীতে মধ্যাহ্নভোজন সারেন তিনি। সেই নিয়ে রাজ্যে চলছে আহার রাজনীতি। আর অমিত শাহের পশ্চিমবঙ্গ সফরের দিনই গীতা মাহালির হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিন রাজ্য সরকার। হোম গার্ডের চাকরি পেলেন গীতা মাহালি। কে এই গীতা মাহালি? জানতে হলে যেতে হবে কিছুটা অতীতে, দিনটা ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল। বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি হিসেবে সেদিন শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়িতে এসেছিলেন বর্তমান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আদিবাসী মাহালি পরিবারে মাটির দাওয়ায় বসে কলাপাতায় সেদিনও মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন অমিত শাহ। সেদিন ভোর থাকতে উঠে সব রান্না করেছিলেন গীতা মাহালি। পাশে বসে অমিত শাহ ও বিজেপির রাজ্য নেতাদের স্বযত্নে খাইয়েছিলেন তিনি। নকশালবাড়ি সহ আদিবাসী মহল্লায় এনিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। তারপর মহানন্দা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। মাঝে মধ্যে খবরে এসেও আড়ালে চলে গিয়েছেন।

এরপর গীতা মাহালি জানিয়েছেন, গত ৩ বছরে বিজেপি সেভাবে তাঁদের কোনও খোঁজ নেয়নি বরং সব সময় পাশে থেকেছে তৃণমূল। তবে গত বছর পুজোয় বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক রথীন্দ্র বসুর হাত দিয়ে পুজোর শুভেচ্ছা হিসেবে উপহার সামগ্রী পাঠিয়েছিলেন অমিত শাহ। ব্যস সেটুকুই। এদিকে অমিত শাহ চলে যাওয়ার পর পর গীতা মাহালি ও তাঁর স্বামী রাজু মাহালিকে শিলিগুড়িতে তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা দপ্তরে এনে সাংবাদিক সম্মেলন করে দলীয় পতাকা তুলে দিয়েছিলেন পর্যটন মন্ত্রী তথা তৎকালীন দার্জিলিং জেল তৃণমূল সভাপতি গৌতম দেব। সেই সঙ্গে ছিল কিছু প্রতিশ্রুতি। স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকেও কিছু সাহায্য পেয়েছে এই মাহালি পরিবার। কিন্তু খবরের শিরোনাম হওয়ার মতো জায়গায় তাঁরা আসেননি।

তবে বৃহস্পতিবার রাজ্য সফরে এসে বাঁকুড়ায় আবার আদিবাসী মহল্লায় বিভীষণের পরিবারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মধ্যাহ্নভোজ করার কয়েকঘণ্টা আগে হোমগার্ডের নিয়োগপত্র পেলেন নকশাবাড়ির গীতা মাহালী।

তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, বিজেপি গীতা মাহালিকে মনে রাখেনি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায় গীতা মাহালির কষ্টের কথা মনে রেখেছেন। তাই তাঁর চাকরির ব্যবস্থা করেছেন। প্রতিটি আদিবাসীর পাশে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

পাল্টা বিজেপি বলছে, পুরোটাই তৃণমূলের ভোটের রাজনীতি। বিজেপি-র দার্জিলিং জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ বর্মনের বক্তব্য, গীতা মাহালির চাকরি হওয়ায় আমরা খুশি। কিন্তু এতদিন সময় লাগলো কেন? অমিত শাহ আসার দিনই তাঁর হাতে নিয়োগপত্র দেওয়ার ঘটনাই বলে দেয়, রাজনীতি করার জন্যই গীতা মাহালিকে হোমগার্ডের চাকরি দিয়েছে তৃণমূল। আদিবাসীদের আরও অনেকে আর্থিক সঙ্কটে রয়েছে, যদি আদিবাসীদের সঙ্কট মোচনের জন্যই তৃণমূল সরকারের এই উদ্যোগ হবে তাহলে এতদিনেও কেন আদিবাসী বেকার ছেলেমেয়েদের চাকরি বা কোনও কাজ হল না?

 

এই নিয়ে সিপিএম নেতা তথা শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসনিক বোর্ডের সদস্য শংকর ঘোষ বলেন, ‘বিজেপির সঙ্গে চটকের রাজনীতিতে পাল্লা দিতে গীতা মাহালিকে চাকরি নিয়োগপত্র দিল সরকার। গীতা মাহালির মতো হাজার হাজার আদিবাসী যুবক-যুবতী বেকার ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাঁদের জন্য সরকারের কোনও ভাবনা নেই। এমনকী চা বাগানের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরিও এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি সরকার।’

তবে যাই হোক না কেন, বিজেপি নেতার আদিবাসী পরিবারে এসে মধ্যাহ্ন ভোজন সারা ও গীতা মাহালির হাতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে চাকরির নিহোগপত্র তুলে দেওয়া এই বিষয়গুলি সবটাই যে সামনের বিধানসভা নির্বা‌চনকে ঘিরে, তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।

RELATED ARTICLES

Most Popular