Homeএখন খবরস্বসহায়ক দলের লক্ষ লক্ষ টাকা লুট, দিনভর রাস্তায় কেশিয়াড়ীর মহিলারা, পুলিশের সঙ্গে...

স্বসহায়ক দলের লক্ষ লক্ষ টাকা লুট, দিনভর রাস্তায় কেশিয়াড়ীর মহিলারা, পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, ফের রাস্তায় নামার হুঁশিয়ারি

নিজস্ব সংবাদদাতা: ১৫২টি স্বসহায়ক দলের কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে নিয়েছেন সঙ্ঘনেত্রী, পুলিশ, প্রশাসনকে বারংবার বলেও কোনও লাভ হচ্ছেনা এবং এই লুটের পেছনে রয়েছে স্থানীয় শাসকদলের কিছু নেতার যোগ এমনই অভিযোগ তুলে রাজ্য সড়ক অবরোধ করলেন কয়েকশ মহিলা। মঙ্গলবার দিনভর রাস্তায় নেমে অবরোধের পর পুলিশ বল প্রয়োগ করে অবরোধ প্রত্যাহার করিয়েছে এমন দাবি করে ফের বুধবার রাস্তায় নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রতারিত স্বসহায়ক দলের সদস্যরা। ঘটনায় দিনভর উত্তেজনা ছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশিয়াড়ী থানার খাজরা এলাকা।

মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে খড়্গপুর-কেশিয়াড়ী রাজ্য সড়কে কখনও বসে কখনও আবার দাঁড়িয়ে অবরোধে সামিল বিক্ষোভকারীরা জানান, “পঞ্চমী সংঘের সভানেত্রী শম্পা ত্রিপাঠী ও কয়েকজন মিলে ১৫২টি স্বসহায়ক দলের মহিলাদের প্রাপ্য টাকা থেকে বঞ্চিত করেছেন। টাকার হিসাব না দিয়ে দলের মহিলাদের প্রশিক্ষণের টাকা আত্মসাৎ করেছেন যার পরিমান ৫লক্ষ টাকারও বেশি।” অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন, খাজরা পঞ্চায়েত এলাকায় ২২০টি স্বনির্ভর দল আছে। দলগুলি জানাচ্ছে তার মধ্যে ১৫২টি দলকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণের পর প্রতিটি দলের জন্য নির্ধারিত অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। অভিযোগ সেই টাকা মহিলাদের দেওয়া হয়নি।

সংঘের দ্বারাই পরিচালিত হয় স্বনির্ভর দলগুলি। অভিযোগ সংঘের নেত্রীরা তাদের বঞ্চিত করে নিজেরাই সংঘের অ্যাকাউণ্ট থেকে টাকা তুলে নিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, যেখানে যুক্ত আছেন প্রশাসনের লোকজনও। বারবার আবেদন ও অভিযোগ জানিয়ে ফল না হওয়ায় বাধ্য হয়ে তারা পথ অবরোধে নেমেছেন। এদিন সকাল নটা থেকে বিকেল পাঁচটাটা পর্যন্ত চলে অবরোধ। যার ফলে সমস্যায় পড়তে হয় যানবাহনকে। দুদিকে বহু গাড়ি দাঁড়িয়ে যায়।

স্বনির্ভর দলের সদস্যা মমতা দাস, পুতুল পাত্র, পম্পা চন্দেরা জানান, দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত আছেন সভানেত্রী সম্পা ত্রিপাঠী ও স্থানীয় শাসক নেতারাও। তাঁদের আরও অভিযোগ ব্লক প্রশাসন ও পুলিশ অভিযুক্তদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন বলেই গত কয়েকমাস ধরে বিডিও, থানা এবং গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে লিখিত অভিযোগ জানানোর পরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়েই রাস্তায় নেমেছেন তাঁরা। সমস্ত টাকা ফেরৎ না পাওয়া অবধি তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।”
অভিযুক্ত সভানেত্রী শম্পা ত্রিপাঠী এদিন বলেন,”আমাকে ব্লক প্রশাসন হিসেব চেয়েছিল। তা ইতিমধ্যেই বিডিওকে জমা দিয়েছি।” কিন্তু কেন তিনি টাকা তুলেছিলেন আর কেন তিনি স্বসহায়ক দলগুলিকে হিসাব দেননি এবং কেন বিডিও অফিসেই তাঁকে হিসাব তলব করা হয়েছিল এ নিয়ে মুখ খোলেননি তিনি।

এদিন প্রথমে বিক্ষোভরতা মহিলাদের কথা বলতে আসেন যুগ্ম বিডিও কিন্তু মহিলারা তাঁকে ফিরিয়ে দিয়ে দাবি করেন , বিডিওকে এসে সুরাহার আশ্বাস দিতে হবে। কারন এর আগে যুগ্ম বিডিও সুরাহার আশ্বাস দিয়েও কাজ হয়নি। পরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ। মহিলারা শোনেননি সে কথা। নিজেদের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বসে থাকেন তাঁরা। এরপরই মৃদু বল প্রয়োগ করে অবরোধ তুলে দেওয়া হয়। আন্দোলনকারীদের দাবি লাঠি চালিয়েছে পুলিশ। পুলিশের ধস্তাধস্তিও হয় মহিলাদের।

পুলিশ অবশ্য লাঠিচার্জের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ব্লকের এক আধিকারিক বলেন, অভিযোগ তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে। সত্য প্রমাণিত হলে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে প্রক্রিয়া চালু হবে। অন্যদিকে মহিলারা বুধবার ফের রাস্তায় নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এদিকে মহিলাদের এই আন্দোলনকে সমর্থন জানাতে দেখা গেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

RELATED ARTICLES

Most Popular