Homeএখন খবরবাড়ির পাশেই পড়ে রইল ইন্টারভিউ লেটার, প্রার্থী যুবক জানলেন তিন দিন পরে!...

বাড়ির পাশেই পড়ে রইল ইন্টারভিউ লেটার, প্রার্থী যুবক জানলেন তিন দিন পরে! ডাক বিভাগের কান্ডে হতবাক কেশিয়াড়ি

নিজস্ব সংবাদদাতা: লিখিত পরীক্ষায় ভাল ভাবে পাশ করার পরেই ডাক মিলেছিল মৌখিক পরীক্ষার। আশায় আশায় বসে ছিলেন যুবকও। আর তারই মাঝে চলছিল ইন্টারভিউ জন্য নিজেকে ঘষে মেজে নেওয়ার প্রস্তুতি। লিখিত পরীক্ষাটা ভাল হওয়ার পরই আশাটা আরও বেড়ে গিয়েছিল ফলে দিন রাত চলছিল প্রস্তুতি। আর অপেক্ষা শুধু ইন্টারভিউ লেটার আসার। সে লেটার এলও, আনন্দে প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়ে সে চিঠি খুলেও ছিল যুবক কিন্তু তারপরেই বুকফাটা আর্তনাদে আছড়ে পড়ল সে, দু’দিন আগেই পেরিয়ে গেছে ইন্টারভিউর দিন! অথচ ঠিক ৮দিন আগে চিঠিটা এসে পৌঁছেছিল ঠিক তার বাড়ির পাশেই, ডাক পিয়নের বাড়িতেই। ঘটনায় হতবাক প্রতিবেশীরা, চাকরি যেখানে অরূপ রতন পাওয়ার মত বিষয় সেখানে এমন গাফিলতির জবাব কী?

ঘটনা কেশিয়াড়ি থানার গগনেশ্বর গ্রামে। গ্রামেরই মেধাবী যুবক প্রদীপ্ত মিত্র চলতি বছরে বিদ্যাসাগর সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের করনিক পদের পরীক্ষায় পাশ করেছিল এবং বেশ কয়েকটি শূন্যপদের জন্য এই পরীক্ষায় প্রদীপ্ত তালিকার ওপরের দিক থেকে ২৫ নম্বরে ছিল। ইন্টারভিউ ভাল হলেই উৎরে যাওয়ার কথা। কিন্তু সেই ইন্টারভিউটাই তার দেওয়া হয় উঠলনা। গ্রামের মধ্যেই ডাকঘর আর ডাকপিওনের বাড়ি আরও কাছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের পাঠানো ইন্টারভিউ লেটার গত ১৪ ই আগস্ট গগনেশ্বর গ্রামের পোস্ট অফিসে পৌঁছে গেলেও সেই চিঠি প্রদীপ্ত হাতে পায় ২২ তারিখ। চিঠি হাতে পেয়ে ইন্টারভিউ লেটার দেখে বেজায় খুশি বরাবরের মেধাবী যুবক প্রদীপ্ত কিন্তু মুহূর্তেই খুশি গায়েব হয়ে যায় যখন দেখে ইন্টারভিউ ডেট পেরিয়ে গেছে যেটা হবার কথা ছিল ১৯সে আগস্ট!

বর্তমানে সরকারি চাকরি পাওয়া একেবারেই দুর্লভ হয়েছে সর্বত্র। টিউশন পড়িয়ে সামান্য অর্থ উপার্জন করেন প্রদীপ্ত। লক ডাউনের বাজারে সেই টিউশনেরও দফারফা। এমনই সময়ে হাতের কাছে এসেছিল এমন সুযোগ। কিন্তু ডাক পিওন নাকি ভুলেই গেছেন চিঠি দিতে। ডাকঘর থেকে সেই চিঠি নিয়ে নিজের ঘরেই রেখে দিয়েছেন তিনি।
প্রদীপ্তর অভিযোগ, আমাদের যাতায়ত ওই ডাক পিওনের বাড়ির পাশ দিয়েই। আমাকে বা আমার পরিবারের লোকজনদের দেখেও একবার মনে করে দিতে পারল না আমার চিঠি? এমনকি আমার বাড়ির পাশে দুধ নিতে আসে ওই ডাকপিওন। কিন্তু চিঠিটা দেওয়ার কথা মনে পড়ল না?” ২২তারিখ প্রদীপ্তর পরিবারের এক সদস্যের হাতে চুপিসারে চিঠি দিয়ে চলে যায়।

বিষয়টি নিয়ে ডাকপিওন কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ” আমার ভুল হয়ে গেছে। বেশ কয়েকদিন যাবৎ শারীরিক অসুস্থতার মধ্যে ছিলাম। তাই নির্দিষ্ট সময়ে সেই চিঠি আমি তার হাতে পৌঁছাতে পারিনি।” কিন্তু শরীর খারাপ হলে তো অন্য লোক বরাদ্দ করবে ডাক বিভাগ।
গগনেশ্বর গ্রামের পোস্টমাস্টার বলেন, “আমি সঠিক সময়ে অর্থাৎ ১৪ই আগষ্ট ওই চিঠি পিওনকে দিয়ে দিয়ে দিয়েছিলাম কিন্তু পিওন কেন এত দেরি করলো বলতে পারবো না?” কিন্তু এটা বলে কী পোস্টমাস্টার দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারেন? চিঠি এসেছিল স্পিডপোস্টে। সই করে সেই চিঠি গ্রহনের স্বীকৃতি দিতে হয় গ্রাহককে। পোস্ট মাস্টারের কাজ সেই স্বীকৃতি যুক্ত স্বাক্ষর বিতরন হয়ে যাওয়া চিঠির তালিকায় নথিভুক্ত করা। এতদিন ধরে সেই স্বীকৃতি আসছেনা কেন? দেখবেন না কেন?

কেশিয়াড়ি মুখ্য ডাক বিভাগের শাখা তথা কেশিয়াড়ি পোস্টমাস্টার কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনিও এই ত্রুটি স্বীকার করে নেন।তিনি লিখিত ভাবে ডাক বিভাগকে অভিযোগ জানানোর কথা বলেছেন। প্রদীপ্ত অভিযোগ জানিয়েছেন। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ সব কিছুই চলবে, চলতে থাকবে শুধু ইন্টারভিউটাই অধরা হয়ে থেকে যাবে প্রদীপ্তর কাছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular