Homeএখন খবরবাড়ি ফিরতে চেয়ে খড়গপুরে বিক্ষোভ, অবরোধ করে গ্রেপ্তার বিহারের ১২তরুন, অবরোধ তুলতে...

বাড়ি ফিরতে চেয়ে খড়গপুরে বিক্ষোভ, অবরোধ করে গ্রেপ্তার বিহারের ১২তরুন, অবরোধ তুলতে লাঠি হাতে পুলিশের সাথে কয়েকজন অ-পুলিশও

নিজস্ব সংবাদদাতা: গত ৫০ দিনেরও বেশি খড়গপুরে  আটকে পড়া বিভিন্ন কোম্পানির সেলসম্যানদের বিক্ষোভ অবরোধকে ঘিরে অশান্তির বাতাবরন তৈরি হল খড়গপুর শহরে। বৃহস্পতিবার দুপুরে খড়গপুর মহকুমা শাসকের দপ্তর লাগোয়া খড়গপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাস যাওয়ার রাস্তা অবরোধ করলে লাঠি চালিয়ে সেই অবরোধ উঠিয়ে দেয় পুলিশ। পুলিশ নির্মমভাবে ওই ঘরে ফেরার দাবিতে বিক্ষোভরত তরুনদের ওপর লাঠি চার্জ করেছে বলে অভিযোগ তরুনদের যদিও পুলিশের পাল্টা দাবি, অবরোধের নাম করে অশান্তির পরিবেশ তৈরি করেছিল ওই তরুনের দল। ঘরে ফেরানোর পদ্ধতি বুঝিয়ে বলার পরও মানতে চায়নি তারা উল্টে সরকারি কর্মচারীদের মারধর ও সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর চালায় ওই তরুনের দল। বাধ্য হয়ে পুলিশ লাঠি চালিয়েছে। ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১২জনকে। যদিও পুলিশের লাঠি চালানোর সময় এমন ৩জন খড়গপুরের বাসিন্দাকে দেখা গেছে যাঁরা পুলিশ নয় বলেই জানা গেছে।

প্রসঙ্গত বিহার থেকে খড়গপুর শহরে পেটের তাগিদে এসেছিল ২৬জন পরিযায়ী শ্রমিকের একটি দল। বিভিন্ন এলাকায় সাবান, স্যাম্পু সহ বিভিন্ন রকম সামগ্রী ফেরী করে দিন গুজরান করত এই দলটি। তবে লকডাউন এর পরে খড়্গপুরে আটকে যায় তারা। খড়গপুর শহরের বুলবুলচটি এলাকায় কয়েকটি বাড়িতে ভাড়া থাকত এরা। লকডাউন চলাকালীন সংলগ্ন একটি সংগঠন এঁদের এক বেলার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করে। পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে কিছু খাদ্যসামগ্রী দিয়ে সহায়তাও করা হয় ওই সংগঠনটিকে। কিন্তু দিনের পর দিন লকডাউন চলতে থাকায় বাড়ি ফেরার জন্য আকুল হয়ে ওঠে এঁরা।

দফায় দফায় প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও কোন সদর্থক ব্যবস্থা না হওয়ায় বৃহস্পতিবার প্রথমে মহকুমা শাসকের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ ও পরে অফিস সংলগ্ন রাস্তা ঘেরাও করে তারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ। বিক্ষোভ কারীদের রাস্তা অবরোধ তুলে নিতে বললে তারা রাজি না হওয়ায় লাঠিচার্জ করে হটিয়ে দেওয়া হয় বিক্ষোভকারীদের।পরিযায়ী শ্রমিকদের। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১২ জন বিক্ষোভকারীকে। বাকিরা পুলিশের তাড়া খেয়ে ছুটে পালিয়ে যায় এলাকা ছেড়ে।

যদিও তরুনদের দাবি তাঁরা কোনও সম্পত্তি ভাঙচুর বা কাউকেই মারধর করেনি। তারা প্রথমে মহকুমা শাসককের দপ্তরে শান্তিপূর্ন ভাবেই দাবি জানাতে গেছিলেন কিন্তু দপ্তরের কিছু কর্মী তাঁদের সঙ্গে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেন, ধাক্কাধাক্কি এমনকি লাথিও মারা হয় তাঁদের। এরপরই তাঁরা বিক্ষোভে নামেন। “আমরা বাইরে থেকে এসেছি। নিজেরাই মরে আছি কাউকে মারব কি করে? বরং আমাদেরই অকথ্য ভাষায় গালাগালি করা হয়। লাথি মেরে অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপরই আমরা রাস্তা ঘেরাও করি। আমরা আমাদের কথা বলতে চেয়েছিলাম। ভেবেছিলাম আধিকারিকরা এসে কথা শুনবে আমাদের কিন্তু পরিবর্তে আমরা লাঠি খেলাম, আমাদের ১২ বন্ধুকে জেলে ভরা হল! এখন আমরা কোথায় যাব, কি করব কিছুই ভেবে পাচ্ছিনা। ”

খড়গপুর মহকুমা শাসক বৈভব চৌধূরী জানিয়েছেন, “আমরা ওই তরুনের বিষয়ে যথেষ্টই সহানুভূতিশীল। ওঁদের যতটা সম্ভব রিলিফ দেওয়া হয়েছে। ওঁদের বাড়ি ফেরার আবেদন সরকারের কাছে জানানো হয়েছে। সবটাই পদ্ধতি মেনে সরকার করছে। তারমধ্যে এমন ঘটনা না ঘটলেই ভাল হত। ওরা চাইলে অন্য সমস্যাগুলো মেটানো যেত। হঠাৎ কেন ওনারা অবরোধ করতে গেলেন জানিনা।”

এদিকে ওই যুবকদের অবরোধ হঠাতে রাস্তায় লাঠি হাতে সক্রিয় হতে দেখা গিয়েছে তিন জন তৃণমূল কর্মীকে। শহরে কাঁকন, তাম ও শম্ভু বলে পরিচিত যে তিন তৃনমুল কর্মীর ভিডিও সামনে এসেছে তাঁদের ২ জন খড়গপুর শহরের বিধায়ক তথা পুর চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। তাম বাস স্ট্যান্ডে দালালি ও তলাবাজি করে বলেও অভিযোগ। পুলিশের সাথে এরাও লাঠি চালিয়েছে এবং কলার ধরে তরুনদের পুলিশের গাড়িতে তুলেছে বলে অভিযোগ। অন্য দিকে প্রদীপ সরকারের দাবি, সারাদিন প্রশাসনিক ভিডিও কনফারেন্সে ব্যস্ত থাকায় ঘটনার কিছুই জানেননা তিনি।

RELATED ARTICLES

Most Popular